দীপশুভ্র সান্যাল
প্রচন্ড গরমে নাজেহাল জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি, লাটাগুড়ি, ধুপগুড়ি, মালবাজারের মতো বহু এলাকা। মালদহে মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হয়েছে ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তরবঙ্গের বহু এলাকা জ্বলছে দাবদাহে।
গরম রোজকার রুটিন। প্রতিদিন সকালের পর থেকেই বেলা যতো বাড়তে থাকে গরমের তীব্রতা ততটাই বাড়তে শুরু করে জেলার প্রতিটি অঞ্চলে। সকাল থেকেই লক্ষ্য করা যায় কেউ চোখে সানগ্লাস, কেউ বা মুখ নাক ঢেকেছেন কাপড় দিয়ে, কারো বা মাথায় ছাতা।
আবার বিভিন্ন বাজারে দেখা যাচ্ছে আখের রসের দোকান থেকে ফলের রসের দোকান এবং ঠাণ্ডা পানীয়ের দোকানে ভিড়। এবার গরমে ডুয়ার্সের তরমুজের চাষ হয়েছে কম। ফলে এলাকায় তরমুজের দাম তুলনায় বেশি।
জেলার একাধিক জায়গায় বয়ে গিয়েছে তিস্তা নদী। সেই নদীর চরে চাষ হয় তরমুজ। কিন্তু কয়েক মাস আগে সিকিমে বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে তিস্তার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গা ভেসে গেছে ভারতীয় সেনার মর্টার শেল সহ ভারতীয় সেনার নানা জিনিসপত্র, প্রায়শই দেখা যাচ্ছে তিস্তার চড়ে বিভিন্ন এলাকায় থেকে মর্টার শেল উদ্ধার করছে ভারতীয় সেনা, যার ফলে তরমুজ কৃষকদের একাংশের মনে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়।
অক্টোবরের বন্যার পরবর্তী সময় শীতকালীন বালিয়া আলু চাষ হয়নি তিস্তার চরে। তখনই সেনা সতর্ক করেছিল যে কোনোভাবেই তিস্তার বেডের বুকে ট্রাক্টর নামিয়ে চাষ করা যাবে না। সেই নিষেধাজ্ঞা এখনো বহাল। নদীর পাড়ের সামান্য অংশের জমিতে পলি সরিয়ে লাউ, কুমড়ো, পটলের মতো সবজির চাষ হলেও মূলত তিস্তার পাশের জমিতে কৃষকরা প্রাণের ভয়ে চাষ করতে আগ্রহ দেখাননি। মাটির ভেতরে মর্টার থেকে বিপদ হতে পারে।
বাইরে থেকে আমদানি হচ্ছে তরমুজ। যেগুলি বেঙ্গালুরুর তরমুজ বলে বিক্রি করা হলেও আসলে সেগুলি ঝাড়খণ্ড বা বিহারের নদীর চরে চাষ হওয়া তরমুজ। আর সেই তরমুজ খেয়েই কিছুটা হলেও গরম থেকে স্বস্তি পাচ্ছেন মানুষ।
তবে সেই তরমুজগুলিতে তিস্তার তরমুজের মতো মিষ্টি রসালো স্বাদ নেই। স্থানীয় কৃষকদের বক্তব্য ট্রাক্টর বা বুলডোজার ব্যবহার না করে যে পরিমাণ পলি এখনও তিস্তার চরে জমে আছে তা না সরিয়ে চাষ করা সম্ভব নয়।
Comments :0