‘‘যে রাজনৈতিক শক্তি ধর্ষকদের লুকানোর প্রয়াস চালায় তাদের রাজনৈতিক এবং সামাজিক ভাবে কোণঠাসা করা এই সময়ের কর্তব্য।’’ আন্দোলনরত ডাক্তারি পড়ুয়া এবং জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফে এই আবেদন জানানো হয়েছে। তাঁরা বলেছেন, ‘‘এসএফআই-ডিওয়াইএফআই সহ বামপন্থী ছাত্র-যুবদের লাগাতার আন্দোলন আমাদের আশা জুগিয়েছে এই অন্ধকার সময়ে।’’
বুধবার রাতে আর জি করে দুষ্কৃতী হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে পড়ুয়া এবং জুনিয়র চিকিৎসকদের যৌথ বিবৃতি। লাগাতার হুমকি চলছে, তারও প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন নাগরিকদের কাছে। আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসক-ছাত্রীর হত্যা এবং ধর্ষণের প্রতিবাদ এখন বাংলার বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে। তৃণমূল সরকার এবং সাগরেদদের বিরুদ্ধে ক্ষোভের প্রধান কারণ, সাক্ষ্য প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা চলছে। অপরাধীদের লুকানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। সেই সময়েই প্রতিবাদের এই বার্তা দিয়েছেন পড়ুয়া এবং জুনিয়র চিকিৎসকরা।
আর জি কর হাসপাতালে প্রমাণ নষ্টের চেষ্টা চলছে। আন্দোলনের ওপর হুমকি দেওয়া হচ্ছে প্রথম দিন থেকে। বুধবার হাসপাতালের ভেতরেই চলেছে হামলা। কলকাতা এবং জেলায় আন্দোলনরত চিকিৎসকদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। হস্টেলে হস্টেলে চলছে ধমকি।
বুধবার, ১৪ আগস্ট, মধ্যরাতে বাংলাজুড়ে রাস্তায় নেমেছেন নারীরা। জেগে তেকেছেন সর্বস্তরের মানুষ। ওইদিনই মাঝরাতে সেই আর জি কর হাসপাতালেই বিক্ষোভরতদের ওপর হামলা চালায় একদল দুষ্কৃতী। ঢুকে পড়ে হাসপাতালের ভেতর। একের পর এক ঘর তছনছ করে। তাদের ছবি বেরিয়ে পড়ায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে তৃণমূলের যোগ।
ঘটনা ঘোরাতে বামপন্থীদের এবং বিজেপি-কে দায়ী করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। শুক্রবার মৌলালি থেকে মিছিলও শুরু করছেন প্রতিবাদের নামে। অথচ চিকিৎসকরা বারবার বলছেন মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে চলা প্রশাসনই বারবার সাক্ষ্য প্রমাণ লোপাটে নেমেছে।
পড়ুয়া এবং জুনিয়র চিকিৎসকরা বলেছেন, ‘‘কলকাতা এবং জেলার মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলে রীতিমতো ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে।’’ তাঁরা বলেছেন, ‘‘অ-রাজনীতির আড়ালে অপরাধে যারা মদত দিচ্ছে, অপরাধের প্রমাণ মুছে ফেলার চেষ্টা করছে এবং অপরাধের প্রতিবাদ করলে আক্রমণ নামিয়ে আনছে, তাদের বিরুদ্ধে হক কথা সোচ্চারে বলার সংগ্রাম জারি থাকবে।’’
আর জি কর হাসপাতালে বুধবার রাতে বিক্ষোভের সব মঞ্চ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় দুষ্কৃতী বাহিনী। শুক্রবারও কলকাতা হাইকোর্টে ঘটনার জন্য ভর্ৎসনার মুখে পড়েছে কলকাতা পুলিশ। নিন্দার মুখে পুলিশের যুক্তি কয়েক হাজার লোক আক্রমণ করেছিল। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা বলছেন হাতে গোনা কয়েকজনের একটি বাহিনী চালিয়েছে হামলা। পুলিশ পালিয়েছে সবার আগে। তাদের সামনেই চলেছে তাণ্ডব। উলটে প্রতিবাদীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এই বিবৃতিতে মনে করানো হয়েছে যে ডিউটিরত অবস্থায় কোনও চিকিৎসক ছাত্রীর এমন ভয়ঙ্কর পরিণাম অতীতে হয়নি। পুলিশ এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তার করে দায় সারলেও মূল দোষীদের আড়াল করা হচ্ছে।
RG KAR
হস্টেলে হস্টেলে চলছে হুমকি, প্রতিবাদের বার্তা পড়ুয়া-জুনিয়র চিকিৎসকদের
×
Comments :0