দীপশুভ্র সান্যাল
জেলার বিভিন্ন ব্লকের আলু খেতের (উঁচু জমির) আলু তোলা এখনো শুরু হয়নি, জানা গেছে আরো দিন ১৫-২০ পর থেকে আলু তোলা শুরু হবে। তবে নদীর চরের জমি থেকে আলু তুলতে দেখা যাচ্ছে মহিলাদের।
আলুর ফলন এই বছর ভালো হয়েছে। ওই সমস্ত জমি থেকে পাইকারি দরে আলুর বস্তাবন্দি করছেন আলু চাষীরা।
নিজেদের পরিশ্রম ও অর্থ খরচ করেও লাভের মুখ দেখবেন না আলু চাষীরা। যদিও এবার আলুর ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু পাইকারি দরে আলুর দাম তেমনভাবে নেই। জলপাইগুড়ির তিস্তার বালিযুক্ত জমিতে সারদা পল্লীর বাসিন্দারা দীর্ঘ বছর ধরে এই নদীর জমিতে আলু চাষ করে থাকেন।
আলুর দাম কি হবে তা নিয়ে চিন্তার ভাঁজ আলুচাষিদের মধ্যে। মহাজনেরা সেই আলু বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া শুরু করেছেন।
আলুর উৎপাদন যা হবে হিমঘরে স্থান সঙ্কুলান হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। সেই আশঙ্কা মাথায় নিয়ে জলপাইগুড়িতে আলুর বন্ড বিলি শুরু হয়েছে ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে।
প্রশাসনের নির্দেশ, প্রতিটি হিমঘরে অন্তত ৩০ শতাংশ স্থান সংরক্ষিত রাখতে হবে ছোট এবং প্রান্তিক চাষিদের জন্য।
জলপাইগুড়ি জেলার ২৬টি হিমঘরে প্রায় ৪ লক্ষ ৭১ হাজার টন আলু রাখা সম্ভব। কৃষি দপ্তরের প্রাথমিক হিসেব, এ বছর জলপাইগুড়ি জেলায় প্রায় ১০ লক্ষ টন আলু উৎপাদন হতে পারে। সব আলু হিমঘরে যায় না। কিছু আলু বিভিন্ন বাজারে চলে যায়, কিছু আলু বীজের জন্য রাখা হয়। তারপরেও বিপুল পরিমাণ আলু হিমঘরে ঢোকানো নিয়ে শুরু হয় টানাপড়েন। জেলায় উৎপাদন হওয়া প্রায় পাঁচ লক্ষ আলু হিমঘরে ঠাঁই পাবে না বলে আশঙ্কা।
সারা ভারত কৃষক সভা ও সিপিআই(এম) জলপাইগুড়ির জেলা কমিটির জেলা শাসককে স্মারকলিপি দেওয়ার পর আলুর বন্ড বিলি নিয়ে যাতে কোনও বিশৃঙ্খলা না হয় তার জন্য কড়া নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শামা পারভিন জানিয়েছেন, মাত্র ত্রিশ শতাংশ জায়গা হিমঘরে সংরক্ষিত করা হচ্ছে। ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ মার্চ পর্যন্ত আলুর বন্ড বিলি চলবে। ১১ মার্চ থেকে আলু হিমঘরে ঢোকানোর শুরু হবে।
হিমঘরগুলি পরিদর্শন করবে প্রশাসন। হিমঘরের গ্যাস লিক করছে কিনা, সুরক্ষা সংক্রান্ত সব ব্যবস্থা রয়েছে কিনা দেখা হবে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ থেকে ছাড়পত্র নিতে হবে হিমঘর কর্তৃপক্ষকে।
জানা গেছে, বাজারে এখনো আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হলেও পাইকাররা মাঠে মাঠে ঘুরে বেড়াচ্ছে ৬ থেকে ৯ টাকা দরের মধ্যে কেজি প্রতি আলু কিনতে। যাতে গাড়ি প্রতি আলুর দাম দাঁড়ায় ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকা।
জলপাইগুড়ি গরাল বাড়ি এলাকার আলু চাষী মোহাম্মদ অহিদুল জানান এ অবস্থা চললে কৃষকদের মাঠের খরচ উঠবে না লাভ তো দূরের কথা।
সারা ভারত কৃষক সভা ও সিপিআই(এম)’র দাবি, প্রকৃত আলু চাষীদের আলু রাখার ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে হবে হিমঘরে। তার জন্য জেলা প্রশাসন কোনও সদর্থক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে জানা যায়নি।
Comments :0