সংশোধীত ওয়াকফ আইনের বিভিন্ন ধারা ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশ জারি করলো সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার ওয়াকফ মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি গাভাইয়ের বঞ্চ নতুন আইনের ৩সি(৪) ধারার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে। এই ধারায় জেলা শাসককে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল ওয়াকফ সম্পত্তি নির্ধারন করার জন্য। বলা ছিল জেলা শাসককের ক্ষমতা থাকবে কোনটা ওয়াকফ সম্পত্তি এবং কোনটি সরকারি সম্পত্তি তা নির্ধারন করার। ওয়াকফ বিতর্ক মেটাতে পারবেন না জেলা শাসক, ট্রাইবুন্যালের মাধ্যমে তা মেটাতে হবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণে সরকারি আধিকারিকের হাতে এই ক্ষমতা তুলে দেওয়া ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ নীতির বিরোধী।
আইনে ব্যবহারের নিরিখে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে পরিগণিত বিষয়গুলিতে প্রশ্ন রয়েছে। আইনে এ ধরনের সম্পত্তিগুলিকে সরকারি দখলদারির মুখে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগ জানায় আবেদন কারীরা।
প্রধান বিচারপতি শুনানিতে বলেন, ‘আমরা দেখেছি যে পুরো আইনটিকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। কিন্তু মূল চ্যালেঞ্জ ছিল ধারা ৩(আর), ৩সি, ১৪। যেই ধারা গুলি চ্যালেঞ্জের অধীনে রয়েছে, আমরা তার ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছি।’
মামলার শুনানি এখানেই শেষ নয় বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
কেন্দ্রীয় সরকারের সংশোধীত আইনে বলা হয়েছিল ওয়াকফ তৈরি করার আগে ওই ব্যাক্তিকে অন্তত পাঁচ বছর ইসলাম ধর্ম পালন করতে হবে। এই ধারার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, একজন ব্যক্তি ইসলাম পালনকারী কিনা তা নির্ধারণের জন্য নিয়ম প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত এই নিয়ম স্থগিত থাকবে।
উল্লেখ্য কেন্দ্রের ওয়াকফ আইনে বলা হয়েছিল যে কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিল বা রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডে অ-মুসলিমদের সদস্য করা বাধ্যতামূলক। এই ধারায় কোন বদল না এনে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে ওয়াকফের মাথার ওপর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি রাখার চেষ্টা করতে হবে। সংসদে সংশ্লিষ্ট বিল পর্যালোচনার কমিটি তৈরি হলেও বিরোধীদের সংশোধনী রিপোর্টে জায়গা পায়নি। একতরফা বিল পাশের এই কৌশলেরও প্রতিবাদ জানান বিরোধীরা।
গত ৫ আগস্ট সংশোধীত ওয়াকফ আইনে রাষ্ট্রপতির সম্মতি পাওয়ার পর ৮ এপ্রিল নির্দেশিকা জারি করে কেন্দ্রীয় সরকার। নতুন এই ওয়াকফ আইনের বিরোধীতায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পথে নামেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ।
সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক এমএ বেবি সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে এক্সহ্যান্ডেলে লিখেছেন, সংশোধীত ওয়াকফ আইনের বিভিন্ন ধারার ওপর সুপ্রিম কোর্ট যেই স্থগিতাদেশ জারি করেছে তাকে স্বাগত জানাচ্ছে সিপিআই(এম)। উল্লেখ্য ওয়াকফ আইনের বিরোধীতায় সুপ্রিম কোর্টে যেই আবেদনকারিরা পিটিশন দেন তাদের মধ্যে অন্যতম সিপিআই(এম) পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম।
সুপ্রিম কোর্টের অন্তবর্তী রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও। সোশাল মিডিয়া পোস্টে তিনি উল্লেখ করেছেন যে রায়ে জেলা শাসককে বিচারের ক্ষমতা দেওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ, ওয়াকফ বোর্ডে অ-মুসলিম অংশগ্রহণের সংখ্যায় নিয়ন্ত্রণ এবং ওয়াকফে দান করার জন্য ৫ বছর ধর্মপালনের প্রমাণ দেখানো মতো শর্ত বাতিলের সিদ্ধান্তের উল্লেখ করেছেন তিনি।
মন্তব্যসমূহ :0