‘‘সিপিআই(এম) নিশ্চয় আরেকজন সাধারণ সম্পাদক পাবে। কিন্তু আমরা সীতারাম ইয়েচুরিকে পাবো না।’’ এমনই শব্দে স্মরণসভায় বক্তব্য রাখলেন আরজেডি সাংসদ মনোজ ঝা।
আর ‘আপ’ নেতা গোপাল রাই সবাইকে বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকেও জেলে ভরা হলো। অন্য একাধিক নেতা জেলে। কথা বলেছিলাম সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে। সেদিন ওই বিপদের সময়ে ওই আলোচনা ভুলতে পারব না। মনে হয়নি অন্য কোনও দলের নেতার সঙ্গে কথা বলছি।’’
বক্তব্য রেখেছেন সিপিআই’র সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা বলেছেন, ‘‘সীতারামের প্রয়াণ গোটা দেশের জন্য ক্ষতি। ছাত্র রাজনীতি থেকে আমাদের দুজনের সম্পর্ক শুরু। সেই সময় থেকে একসঙ্গে বহু কাজ করেছি।’’ বক্তব্য রেখেছেন আরএসপি’র সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য, সিপিআই(এমএল)’র সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, ফরওয়ার্ড ব্লকের সাধারণ সম্পাদক জি দেবরাজনও।
রাজা বলেন, ‘‘সংসদে বামপন্থীদের কথা তুলে ধরার ক্ষেত্রে, গরিব প্রান্তিক মানুষের কথা তুলে ধরার ক্ষেত্রে আলোচনা করেছি।’’
মনোজ ঝা বলেন, ‘‘সিপিআই(এম) একজন সাধারণ সম্পাদক পাবে কিন্তু আমরা কোন সীতারাম ইয়েচুরি পাবো না। একথা লালু প্রসাদ যাদব এবং তেজস্বী যাদবকেও জানিয়েছি।’’ তিনি বলেন, ‘‘শেষবার যখন ওঁর সঙ্গে কথা হয় উনি বলেছিলাম, নির্বাচনে হেরেছি কিন্তু আশা হারাইনি।’’ তিনি বলেন, ‘‘জওহরলাল নেহেরুর প্রয়াণের পর সংবাদপত্রে লেখা ছিল ‘নেহেরু লিভস’। আমি বলতে চাই ‘সীতারাম লিভস’।’’
রামগোপাল যাদব বলেন, ‘‘সীতারামের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক। রাজ্যসভায় ১২ বছর একসঙ্গে পাশাপাশি বসতাম। সংসদীয় ব্যবস্থায় সব বামপন্থী নেতাদের থেকে শিখেছি।’’ তিনি স্মরণ করেন প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত হরকিষেণ সিং সুরজিতকেও। তিনি বলেন, ‘‘সুরজিত আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে দিয়েছিলেন।’’ তিনি বলেন, ‘‘কমিউনিস্ট আন্দোলন যদি দুর্বল হয় তবে দেশ দুর্বল হয়ে পড়বে।’’
এনসিপি নেত্রী সুপ্রিয়া সুলে বলেন, ‘‘সীতারাম ইয়েচুরি সর্বদা তাঁর মতাদর্শ, সিপিআই(এম)’র মতাদর্শ অনুযায়ী কাজ করেছেন। আবার তিনি রাজনৈতিক বৃত্তে অন্য অংশের সঙ্গে সংযোগ রাখতে সেই মতাদর্শ বজায় রেখে।’’ তিনি বলেন, ‘‘বোঝাপড়া নিয়ে সমস্যা হলে বহুবার তিনিই সামলেছেন। মহারাষ্ট্রের গরিব মানুষ তাঁদের এই নেতাকে কখনও ভুলবেন না।’’
গোপাল রাই বলেন, ‘‘অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তারির পর উদ্যোগ নিয়ে তিনিই গোটা দেশের সব নেতাকে রামলীলা ময়দানে জড়ো করেছিলেন। তিনি অভিভাবকের মতো আমাদের আগলে রেখে ছিলেন। তাঁর শুধু একটাই চিন্তা ছিল,দেশ বাঁচানো।’’
অরবিন্দ কেজরিয়াল শোকবার্তায় লিখেছেন, ‘‘তিনি সেই রাজনীতিবিদ যিনি সংবিধান বাঁচানোর জন্য লড়াই করেছিলেন। ব্যাক্তিগত ভাবে আমি আমার এক বন্ধুকে হারিয়েছি, তাঁর থেকে অনেক কিছু শিখেছি।’’
সিপিআই(এমএল) সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সীতারাম যখন রাজনৈতিক জীবন শুরু করছে তখন বামপন্থী আন্দোলন বাড়ছে। আজকে সময় বদলছে। এখন আরএসএসকে আটকাতে বামপন্থী আন্দোলনকে বিকোশিত করতে হবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘ ২০১৪ সালে যখন মোদী সরকার গঠন হয় তখন ভারতে রাজনৈতিক পটভূমিতে একটা পরিবর্তন আসে। ভারত বাঁচাতে হলে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে হবে।
ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার প্রভা রাঁচি বলেন, ‘‘বিরোধীদের ওপর যখন আক্রমণ বাড়ছে সেই সময় সীতারাম ইয়েচুরি সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লাগাতার লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। সংসদে গরিব মানুষের কথা তুলে ধরেছেন তিনি।’’
মনোজ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সীতারামের প্রয়াণ আমাদের সবার জন্য ক্ষতি। দেশের পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য লড়াই আমাদের। তাদের ঐক্য গড়া আমাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। মাকর্সবাদী, লেনিনবাদী দলগুলিকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। বাম-গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য মজবুত রাখতে হবে।’’
Sitram Yechury Condolence Talkatora
‘...আমরা সীতারাম ইয়েচুরিকে পাব না’, স্মরণসভায় আক্ষেপ আরজেডি নেতার
×
Comments :0