Modi

রেউড়িই এখন মোদীর ভরসা

জাতীয়


জাতীয় স্তরে দ্বিতীয়, তৃতীয় বা চতুর্থ এবং রাজ্য স্তরের প্রথম, দ্বিতীয় বা তৃতীয় কোনও নেতার উপর ভরসা করা যাচ্ছে না। কি কেন্দ্র, কি রাজ্য, বিজেপি পরিচালিত সরকারগুলির বিরুদ্ধে আমজনতার ক্ষোভের আঁচ এতটাই প্রবল যে আসন্ন পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে এবং পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেই বৈতরণী পারের একমাত্র কান্ডারি হিসাবে বেছে নিতে হয়েছে আরএসএস-বিজেপি-কে। নির্বাচনমুখী কোনও রাজ্যেই দলের পক্ষে কোনও গ্রহণযোগ্য মুখ্যমন্ত্রীর মুখ নেই। এমনকি বর্তমান এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীদেরও পাতে দেবার যোগ্য মনে করছে না দল। তাই সব রাজ্যে মোদীকেই দলের প্রধান এবং একমাত্র মুখ হিসাবে দেখিয়ে নির্বাচনী প্রচারে ঝাঁপ দিয়েছে মোদীর দল। তাই রাজ্যে রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারে নিজের ভোট চাইছেন তিনি। জিতলে যাকে মুখ্যমন্ত্রী করা হবে বলে ভেবে রাখা হয়েছে প্রচারে তাকেও সামনে আনা হচ্ছে না পরাজয়ের ভয়ে। যিনি মুখ্যমন্ত্রী হবেন তাঁকে সামনে রেখে তাঁর নামে ভোট চাওয়া হচ্ছে না, হচ্ছে তাঁর নামে যিনি মুখ্যমন্ত্রী হবেন না। এটাও এক ধরনের প্রতারণা। মানুষকে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে এবং বিভ্রান্ত করে ভোট চাওয়া।
ছত্তিশগড়ে নিজের নামে ভোট চাইতে গিয়ে দুর্গের এক জনসভায় এহেন প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন রেশনে বিনামূল্যে খাদ্য দেওয়া হবে আরও পাঁচ বছর অর্থাৎ ২০২৮ সাল পর্যন্ত। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় এমন কোনও সিদ্ধান্ত হবার আগেই ভোটের তাড়নায় তাঁর স্বীকারোক্তি এই ঘোষণা নাকি রাজনৈতিক চমক নয়, ‘মোদীর গ্যারান্টি’। দল, সরকার সব বাতিল এখন ‘সম্রাট’ মোদীর ইচ্ছা-অনিচ্ছাই শেষ কথা। প্রসঙ্গত আগের দিনই ছত্তিশগড়ের ভোটে বিজেপি’র যে নির্বাচনী ইশ্‌তেহার প্রকাশ করেছেন অমিত শাহ তার শিরোনাম ‘মোদী কি গ্যারান্টি ২০২৩’। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মোদী ইশ্‌তেহারের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে গ্যারান্টির নমুনা হাজির করলেন মোদী। লক্ষণীয় গোটা দেশের ৮০ লক্ষ মানুষের জন্য আগামী পাঁচ বছরের বিনামূল্যে রেশন দেবার ঘোষণা করা হলো ছত্তিশগড়ে এক দলীয় নির্বাচনী জনসভায়। তারপরও বলছেন এটা রাজনৈতিক চমক নয়। বোঝাই যাচ্ছে কেবলমাত্র ভোটের দিকে তাকিয়েই তাঁকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে এবং ভোট প্রচারে গিয়েই সেটা ঘোষণা করতে হয়েছে। নিজের নামে ভোট চাইতে গিয়ে তাঁর এমনটা করা ছাড়া উপায় ছিল না।
নির্বাচনের আগে বিভিন্ন ধরনের জনমুখী প্রকল্প, ভরতুকি দিয়ে মূল্যে ছাড়, অনুদান, ভাতা ইত্যা দি দেবার ঘোষণাকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘রেউড়ি সংস্কৃতি ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করেছেন বারবার। বলেছেন ভোটের জন্যই নাকি বিরোধীরা এসব করে থাকে। এইভাবে আসলে তারা অর্থনীতির অগ্রগতিকে থমকে দেয়। এবার সেই রেউড়ি সংস্কৃতিকেই আঁকড়ে ধরে ভোট বৈতরণী পার হবার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন মোদী? কথা বলে গুঁতোয় বেড়াল গাছে ওঠে।

Comments :0

Login to leave a comment