DHUPGURI MINAKSHI MUKERJEE

খাদের কিনারায় জনতা, এদের কিছু যায়-আসে? প্রতিবাদের আহ্বান মীনাক্ষীর

রাজ্য জেলা

DHUPGURI MINAKSHI MUKERJEE ধূপগুড়িতে মীনাক্ষী মুখার্জি। ছবি: প্রবীর দাশগুপ্ত।

‘‘পঞ্চায়েতে কত মায়ের কোল খালি হয়ে গেল, ছেলেমেয়েরা বাইরে চলে কোনওরকমে একটা কাজের জন্য যাচ্ছে, আলুর দাম কৃষক পায় না,  সারের বস্তায় ৬০০ টাকা লেখা বিক্রি হয় ১২০০ টাকায়। এদের কিছু যায়-আসে?’’

শুক্রবার ধূপগুড়ির জনসভায় জনজীবনের, বিশেষ করে যুবজীবনের যন্ত্রণায় এই ভাষাতেই সোচ্চার হলেন যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জি। ডিওয়াইএফআই’র রাজ্য সম্পাদক জনতার সামনে তুলে ধরেছেন তাঁদেরই কথা, তাঁদেরই চড়া ক্ষোভের সুরে। ধুপগুড়ি উপনির্বাচনে বামফ্রন্ট সমর্থিত সিপিআই(এম) প্রার্থী ঈশ্বর চন্দ্র রায়ের সমর্থনে হয়েছে এই সমাবেশ।

এদিন জীবনমানের সঙ্কটে ‘এদের’, মানে কেন্দ্রের বিজেপি আর রাজ্যের তৃণমূল সরকার, দু’য়েরই ভূমিকার প্রতিবাদে সরব হয়েছে সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। 

মীনাক্ষী বলেছেন, ‘‘স্মার্ট মিটার বসবে, যখন সবচেয়ে বেশি দরকার আলো, তখনই সবচেয়ে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনতে বাধ্য হবেন আপনি। এদের কিছু যায় আসে? ২১ হাজার মদের দোকান খুলেছে, এদের কিছু যায় আসে? লকডাউনের পর আমার বাড়ি আপনার বাড়ির ছেলেমেয়েরা স্কুলে না গিয়ে ইটভাটা টালিভাটায় চলে গেল, এদের কিছু যায় আসে? চা বাগানের জমি বেসরকারি মালিককে বেচে দিচ্ছে, মল তৈরির জন্য, অ্যাপার্টমেন্ট তৈরির জন্য। এদের কিছু যায় আসে?’’ 

তার আগে বক্তব্যে সেলিমও তুলে ধরেন জীবনের অভিজ্ঞতা। তিনি সমবেত জনতাকে প্রশ্ন করেছেন, ‘‘বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে ২০১১’তে ধূপগুড়ি থেকে শিলিগুড়ি যেতে কত টাকা খরচ করতে হতো?’’ উত্তর এসেছে, বাইশ টাকা। ফের প্রশ্ন সেলিমের, ‘‘এখন কত খরচ?’’ ফের জবাব, ‘‘সত্তর টাকা।’’

সেলিম বলেছেন, ‘‘২২ থেকে ৭০’র যত ফারাক, কেন্দ্রে বিজেপি আর রাজ্যে তৃণমূলের লুটের বহরও তত।’’ কৃষিপ্রধান এলাকা ধূপগুড়িতে সার, বীজ থেকে কীটনাশকের দাম বেড়ে যাওয়ার খতিয়ান দেন তিনি। তিনি বলেছেন, ‘‘কৃষক দাম পান না। অথচ বাজারে ক্রেতা কিনতে গিয়ে নাজেহাল। মাঝে চলছে লুট।’’ 

বামফ্রন্টের সময়েই হয়েছে এলাকার উন্নয়ন। সে কথা মনে করিয়ে সেলিম বলেছেন, ‘‘এখন মহকুমা হলো না। ডাম্পিং গ্রাউন্ড হলো না। চোর জোচ্চোর লুটেরাদের ডাম্পিং গ্রাউন্ডে পাঠাতে হবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘ফূপগুড়ির মানুষ সারা দেশকে সবজি দেন। কৃষি বাণিজ্য বাড়াতে মার্কেট কমপ্লেক্স হয় বামফ্রন্টের সময়ে। মোদী আর দিদি বলল কিষান মান্ডি হবে। কিন্তু কৃষকের থেকে ফসল সংগ্রহ করবে পঞ্চায়েত, সেই পঞ্চায়েত উঠে গেল। কোল্ড স্টোরেজে আলু রাখতে হলেও তৃণমূলকে টাকা দিতে হবে।’’ 

অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘কেন্দ্রের মোদী সরকার তা নয় বছরের মেয়াদে কেবল জ্বালানি থেকে ৩২ লক্ষ কোটি টাকার কর আদায় করেছে। অন্যায্য দাম নিয়েছে গ্যাসের, ভোটের মুখে মাত্র ২০০ টাকা দাম কমিয়েছে।’’ 

মীনাক্ষী বলেছেন, ‘‘চারশো টাকার গ্যাস ১২০০ টাকা করেছে। এখন ২০০ টাকা দাম কমিয়েছে। আমাদের সর্বনাশ করেছে। প্রতিবাদ করতে হবে।’’ 

Comments :0

Login to leave a comment