Warm Will Be Cooler

উষ্ণতা কমে পারদ নামতে পারে কাল

রাজ্য

weather

ভরা ডিসেম্বরেও শীতের দেখা নেই। শীতের সময় এমন গরমের দমক পরিষ্কার জলবায়ু পরিবর্তনের ইঙ্গিত করছে। আর ঠান্ডা না পড়ার জেরে ফের কলকাতায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। করোনার নতুন প্রকরণের রক্তচক্ষুর মধ্যে ডেঙ্গুর উপদ্রব বাড়তে থাকলে নতুন বছরের শুরু থেকেই বাড়তি আশঙ্কা তৈরি হবে। 


আলিপুর হাওয়া অফিস অবশ্য জানাচ্ছে, শুক্রবার থেকে পৌষের ঠান্ডা পড়বে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে। দক্ষিণবঙ্গের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৩-৫ডিগ্রি সেলসিয়াস নামার কথা। তবে বড়দিনের মতোই বর্ষবরণের দিন তাপমাত্রা ফের বাড়বে। তা দুই দিন থেকে ফের পারদ নামা শুরু করবে। বুধবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রা এই সময়ের সর্বনিম্ন থেকে ৭ ডিগ্রি বেশি। তবে আশার কথা এদিনই দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এসময়ের স্বাভাবিক মাত্রাকে ছুঁয়েছে। 


এতদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি বেশি থাকা এদিন শূন্যে এসেছে। আর তাতেই মনে জেগেছে আশা। জানুয়ারির আগে এই তাপমাত্রা বেড়ে চলা গত ৫০ বছরে দেখা যায়নি। হঠাৎ করে শীতের অন্তর্ধান নিয়ে দারুণ উদ্বিগ্ন সকলে। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছিল শ্রীলঙ্কার কাছে দাঁড়িয়ে থাকা একটি শক্তিশালী নিম্নচাপই এর জন্য অনেকটা দায়ী।


ওই নিম্নচাপ থেকে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ অক্ষরেখা বঙ্গোপসাগর হয়ে গাঙ্গেয় উপত্যকা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। ওই নিম্নচাপ অক্ষরেখার জন্যই পূর্ব ভারত এবং সংলগ্ন বাংলাদেশের উপরে তৈরি হয়েছে একটি উচ্চচাপ বলয়। একে বিপরীত ঘূর্ণাবর্তও বলা হয়। এই বিপরীত ঘূর্ণাবর্তটি বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প টেনে আনছে। আর এর জেরেই উত্তর-পশ্চিমের শীতল বাতাস আসতে পারছে না দক্ষিণবঙ্গে। বাড়তি জলীয় বাষ্পের কলকাতা সহ রাজ্যের সর্বত্র ভোরে ঘন কুয়াশা দেখা মিলছে। 
ভোরের দিকে যখন তাপমাত্রা অনেকটা কমলেও ওই জলীয় বাষ্প দ্রুত কুয়াশায় রূপান্তরিত হয়ে মাটির কাছাকাছি নেমে আসছে। আবার সূর্য ওঠার পরে একই জলীয় বাষ্প বায়ুমণ্ডলের ওপরে উঠে গিয়ে উত্তর দিকে থেকে আসা ঠান্ডা বাতাসের যাত্রাপথে পাঁচিল তুলে দিচ্ছে। ফলে শীত আটকে যাচ্ছে। শ্রীলঙ্কার কাছের ওই নিম্নচাপটি বুধবার দুর্বল হয়েছে তাই বৃহস্পতিবার থেকেই কিছু পারদ পতন দেখা যাবে। পারদ নামার সুফল মিলবে শুক্রবার।


তবে অসময়ের পারদ বৃদ্ধির জেরে ডেঙ্গু বাড়ার প্রমাদ গোনা হচ্ছে। গত কয়েক বছরের মধ্যে এবছর বিশেষ করে কলকাতায় সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু হতে দেখা গিয়েছে। গত সপ্তাহ থেকে শীতের হঠাৎ উবে যাওয়ার জেরে শহরে ডেঙ্গু বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কলকাতা কর্পোরেশন। ডিসেম্বরের শেষ দিনে যখন কলকাতায় ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে থাকে। কিন্তু এবছরে এর মারাত্মক ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের জেরেই এই ঘটনা বলেই মনে করছেন আবহবিদরা। 


শীতে তাপমাত্রা না কমলে মশার উপদ্রব বাড়ে। এটা কলকাতার পাশাপাশি শহরতলির মানুষ ভালোই টের পাচ্ছেন। তাই মশার উপদ্রপ বাড়লে ডেঙ্গুর মতো ম্যালেরিয়ার দাপটও বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ১৫ ডিগ্রির নিচে নামলেই  ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে। কিন্তু এর বেশি তাপমাত্রা হলেই তা ফের  মশার বংশবিস্তারে আদর্শ পরিবেশ হয়ে ওঠে।  
এবছর ডিসেম্বর শুরুতে এমনটা দেখা গেলেও যত সময় এগিয়েছে ততই উধাও হতে থেকেছে ঠান্ডা। গত সপ্তাহ থেকে পরিস্থিতি এমন জায়গায় গিয়েছে যে কলকাতা শহরেতো বটেই রাতেও শোয়ার সময় লেপ-কম্বলের প্রয়োজন পড়ছে না। উলটে পাখা চালাতে হচ্ছে।

Comments :0

Login to leave a comment