এর পালটা তৎপরতা দেখিয়েছে পেট্রোলিয়াম উৎপাদক দেশগুলির যৌথমঞ্চ ওপেক। ওপেকের তরফে বলা হয়, এক পাক্ষিক ভাবে ও তথ্যগত বিভ্রান্তি ছড়িয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য পেট্রোলিয়াম ও খনিজ জ্বালানী ব্যবহারকে দায়ী করা উচিত নয়।
এই সম্মেলনে পেট্রোলিয়াম কোম্পানিগুলির হয়ে তদ্বির করার জন্য হাজির ছিলেন ২ হাজারের বেশি প্রতিনিধি।
সম্মেলন শেষে রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুটেরেজ বলেছেন, ‘‘ দ্রুততার সঙ্গে আমাদের জীবাশ্ম জ্বালানী নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বিশ্ব উষ্নায়ন লক্ষ্যমাত্রায় বেঁধে রাখার জন্য জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। রাষ্ট্রগুলি মোট কার্বন নির্গমণের হার শূন্যে নামিয়ে আনার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তার প্রতিও আন্তরিক থাকতে হবে। এই প্রশ্নে আরও নজরদারি প্রয়োজন।’’
নতুন প্রজন্মের প্রতি বার্তা দিয়ে মহাসচিব বলেছেন, ‘‘বিশ্ব উষ্ণায়নের হার শিল্পায়নের আগের সময়ের তুলনায় ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বেঁধে রাখার লড়াই এখানেই শেষ হয়নি। একজোট হয়ে লড়াই করলেই একমাত্র আমরা জয়ী হতে পারব। চাপ বজায় রাখুন। প্রয়োজনে চাপ বৃদ্ধি করুন। রাষ্ট্রনেতাদের দায়বদ্ধ করুন।’’
রাষ্ট্রসংঘ জানাচ্ছে, ‘‘গত বছরে চালু হওয়া সমস্ত শক্তি প্রকল্পগুলির ৮৩ শতাংশ সৌরশক্তি কিংবা বায়ুশক্তির মত অপ্রচলিত শক্তিকে ব্যবহার করে গড়ে উঠেছে। বিশ্ব উষ্ণায়নের হার ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বেধে রাখতে ২০৩০ সালের মধ্যে পরিবেশবান্ধব অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার ৩ গুণ বৃদ্ধি করতে হবে।’’
পেট্রোলিয়ামের মতো জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার বাড়ানোর মতো শিল্প পরিকাঠামো গড়ে তুলতে শিল্পোন্নত দেশগুলি এশিয়া এবং আফ্রিকার দেশগুলিকে ২০২০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি। রাষ্ট্রসংঘের একটি পৃথক হিসেব অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে এই দেশগুলির ২ ট্রিলিয়ান মার্কিন সহায়তা প্রয়োজন অপ্রচলিত শক্তির বিকাশ ঘটাতে। সেই তহবিল কোথা থেকে আসবে, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই।
এশিয়া এবং আফ্রিকার এই দেশগুলি ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলির প্রাক্তন উপনিবেশ। ঔপনিবেশিক শাসনের ফলে এই দেশগুলির অর্থনীতি যথেষ্ট দুর্বল। উন্নয়ন এবং শিল্প স্থাপনের জন্য তাঁরা জীবাশ্ম জ্বালানির উপরেই নির্ভরশীল, কারণ সেটা সস্তা। শিল্পোন্নত দেশগুলি সহায়তা না করলে তাঁদের পক্ষে অপ্রচলিত শক্তির বিকাশ ঘটানো সম্ভব নয়।
Comments :0