Jhantu Ali Sheikh

নিহত জওয়ানকে শ্রদ্ধা সিপিআই(এম) নেতৃত্বের

রাজ্য জেলা

পহেলগামে নৃশংস সন্ত্রাসবাদী হানার পরে উপত্যকাজুড়ে শুরু হয় চিরুনি তল্লাশি অভিযান। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সেই অভিযান চলাকালীনই উধমপুর জেলার বসন্তগড় এলাকায় সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর গুলির লড়াইয়ে গুরুতর আহত হন নদিয়ার তেহট্টের পাথরঘাটার বাসিন্দা ঝন্টু আলি সেখ। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। জম্মুর মিলিটারি হাসপাতালে গান স্যালুটে কুর্নিশ জানানোর পর শুক্রবার রাতে কলকাতা বিমানবন্দরে আনা হয় ঝন্টু আলি সেখের কফিনবন্দি দেহ। রাতে দেহ রাখা হয় ব্যারাকপুরের সেনা ছাউনিতে। শনিবার সকালে সেখানে গার্ড অফ অনার দেওয়া হয়। এরপর তেহট্টর পাথরঘাটা গ্রামে পৌঁছায় ঝন্টু আলির কফিনবন্দি দেহ। সেনা জওয়ানদের কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে ঝন্টু আলি শেখের মৃতদেহ নিয়ে আসা হয় বাড়িতে। হাজার মানুষ রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন নিহত জওয়ানকে দেখার জন্য এবং শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। ঝন্টু আলি শেখের বাড়িতে তাঁর মরদেহে শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত ছিলেন সিপিআই(এম) রাজ্য কমিটির সদস্য রমা বিশ্বাস, শতরূপ ঘোষ, গণ সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্ব এসএম সাদি সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।

 শোকাহত পরিবারের সঙ্গে কথাও বলেন সিপিআই(এম) নেতৃত্ব। ছেলের মৃতদেহ আগলে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহত জওয়ানের স্ত্রী ঝুমা শেখ সহ গোটা পরিবার। শোকাহত গোটা গ্রামের মানুষ। সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইয়ে বীরের মৃত্যু বরণ করা ঝন্টু আলি সেখ সেনাবাহিনীর এলিট স্পেশাল ফোর্স ইউনিটের একজন প্যারা-কমান্ডো ছিলেন। গ্রামের হাজার হাজার গ্রামবাসীরাও এদিন হাজির ছিলেন নিহত জওয়ানকে শ্রদ্ধা জানাতে। ফুল, অশ্রুতে বীর ছেলেকে বিদায় জানালেন এলাকার মানুষ। জানা গেছে গান স্যালুটের মধ্যে দিয়ে সম্মান জানিয়ে শেষকৃত্য সেনা জওয়ান ঝন্টু আলি শেখের।  নদীয়ার তেহট্ট ১ ব্লকের পাথরঘাটা ১ পঞ্চায়েতের পাথরঘাটা গ্রামের অত্যন্ত গরিব পরিবারের তিন ভাই, এক বোনের মধ্যে ঝন্টু আলি সেখই ছিলেন সকলের ছোট। বয়স ৩৬ বছর। বড় দাদা রফিকুল সেখও সেনাবাহিনীতে কর্মরত। তাঁরও পোস্টিং বর্তমানে কাশ্মীরেই। রফিকুল সেখ ১৯৯৮ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ঝন্টু আলি সেখ ২০০৮ সালে। মেজভাই পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে সৌদি আরবে কর্মরত। শহীদ ঝন্টু আলি সেখ, তাঁর স্ত্রী শাহানারা পারভিন ও তাঁদের এক ছেলে (১২), এক মেয়ে (৭)-কে নিয়ে দিল্লিতে সেনা আবাসনে থাকতেন। বাড়িতে পেশায় খেতমজুর বাবা সবুর আলি সেখ ও মা রয়েছেন। সদ্য স্বামীহারা ঝন্টুর স্ত্রী চোখ মুছতে মুছতে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা মুসলিম, ওরাও মুসলিম, কিন্তু ওদের মনে বিদ্বেষ রয়েছে।’’

Comments :0

Login to leave a comment