ভারতের মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে (JNU) মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে একাডেমিক ব্যয় প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক হিসাব থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে।
শিক্ষাদান, পরীক্ষা, সমাবর্তন এবং ছাত্রদের কল্যাণকর প্রকল্প সহ একাডেমিক কার্যক্রমের সামগ্রিক ব্যয় ২০১৪-১৫ সালের ৩৭.৩৪ কোটি টাকা থেকে ২০২৩-২৪ সালে ২০.৩০ কোটি টাকা হ্রাস পেয়েছে।
২০১৪ সালের মে মাসে প্রথম মোদী সরকার কার্যভার গ্রহণ করে।
এই ব্যয় হ্রাস গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিকে প্রভাবিত করেছে, যেমন গবেষণার জন্য ফিল্ডওয়ার্ক, স্কলারশিপ সহায়তা, একাডেমিক জার্নাল কেনা, ল্যাবরেটরি অপারেশন এবং সেমিনার আয়োজন। জেএনইউ ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, এই সকল ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্য কাটতি দেখা গেছে।
কেউ কেউ এই হ্রাসগুলিকে JNU-এর মুক্তচিন্তা, বিরুদ্ধতা, প্রগতিশীল ভাবনার পরিবেশকে পদ্ধতিগতভাবে ‘‘ধ্বংস’’ করার হিন্দুত্ববাদী প্রকল্প।
এখানে এটাও উল্লেখ করা দরকার যে সুবিধাবঞ্চিত স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ছাত্রদের সমর্থন করার উদ্দেশ্যে, জেএনইউ-এর বেশ কয়েকটি বৃত্তির ব্যয়, প্রায় এক দশক ধরে প্রতি মাসে ২,০০০ টাকাতেই আটকে আছে।
পিএইচডি শিক্ষার্থীদের প্রতি মাসে ৮,০০০ টাকার একটি নন-নেট ফেলোশিপও রাজধানীতে জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় এবং একাডেমিক ব্যয়ের জন্য যথেষ্ট অপর্যাপ্ত স্তরে আটকে রয়েছে।
এই আর্থিক সীমাবদ্ধতার মধ্যে, ভাইস-চ্যান্সেলর সন্তিশ্রী ধুলিপুদি পণ্ডিত সম্প্রতি অতিরিক্ত সংস্থান তৈরির জন্য প্রাইভেট সংস্থাগুলির সাথে সহযোগিতায়- গোমতী গেস্ট হাউস এবং সিটি সেন্টার - দুটি প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন।
এছাড়াও, পন্ডিত ১২টি সরকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ভাড়া চাওয়ার পরিকল্পনার ইঙ্গিত দিয়েছেন যারা বর্তমানে JNU এর মূল ক্যাম্পাসে ভাড়া ছাড়া অফিস পরিচালনা করে।
ইতিমধ্যে, ভারতের প্রিমিয়ার স্টেট ইউনিভার্সিটিতে গবেষকদের সাথে বিমাতৃসুলভ আচরণের আরও প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করে জুলাই মাসে একটি আরটিআই-এর তদন্ত প্রকাশ করে দেখা গেছে যে JNU এর ছাত্রদের বিরুদ্ধে দায়ের করা FIRগুলির উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
অবশ্যই, বিরোধিতাকারীরা যুক্তি দিতে পারে যে এটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের চেয়ে পড়ুয়াদের ওপর উপর বেশি খড়গহস্ত- ২০১৬ সাল থেকে, JNU প্রশাসন নিজেই তার নিজের ছাত্রদের বিরুদ্ধে ৩৫টি এফআইআর দায়ের করেছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে রেকর্ড করা সর্বোচ্চ সংখ্যা।
স্বভাবতই, শিক্ষামহলে প্রশন্ন উঠছে, পূর্ববর্তী দশকের পড়ুয়ারা কি শৃঙ্খলাপরায়ন এবং আইন-কানুন মেনে চলা ছিল, নাকি বর্তমান প্রশাসনের ছাত্রদের ভিন্নমতের প্রতি অধৈর্য হওয়ার প্রবণতাই বেশি এবং শৃঙ্খলার বিষয়ে অতিরিক্ত কঠোর অবস্থান রয়েছে?
Comments :0