বেহাল খানাখন্দে ভরা গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয় আট থেকে আশি সকলকে। গ্রামের মধ্যে অ্যাম্বুল্যান্স ঢোকে না। অসুস্থ রোগীকে খাটিয়াতে করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাধিকবার জানিয়েও হয়নি কোনও কাজ। প্রশাসনিক উদাসীনতায় মুমূর্ষুকে রোগীকে বাঁচাতে মাচা বা খাটিয়া এম্বুলেন্সই একমাত্র ভরসা। এমনই ঘটনা পিংলা ব্লকের গোবর্ধনপুর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার কুলতাপাড়া মৌজায়। গত সাত আট বছর ধরে গ্রামের রাস্তা বেহাল। ৩ কিলোমিটার বেহাল খানাখন্দে ভরা গ্রামীণ রাস্তা পার হলেই তবেই মেলে সড়ক রাস্তা। সেই রাস্তায় এম্বুলেন্স চলাচল তো দূরের বিষয়, সাইকেল, ভ্যান রিকসাও চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এই বর্ষার সময়ে। কেউ অসুস্থ হলে রোগী নিয়ে ঘর থেকে বের করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায় না। স্থানীয় হাতুড়ে ডাক্তার ডেকে এনে চলে চিকিৎসা। আর তাতে না হলে বাঁশের মাচা বা খাটিয়া বানিয়ে তাতেই রোগীকে নিয়ে যেতে হয়। এমনই উন্নয়নের জোয়ার পথশ্রীর বেহাল কদর্য রূপ উঠে এলো। কুলতাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সুমন ধাড়া বলেন, ‘‘গত কয়েকদিন আগে তাঁর মা সাবিত্রী ধাড়া হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন। জ্বরও ছিলো। টানা বৃষ্টির কারণে ঘর থেকে মাকে নিয়ে হাসপাতাল বের হওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিলো না। এম্বুলেন্সে নিয়ে যেতে হলে গ্রাম থেকে তিন কিলোমিটারের উপর কাদা রাস্তায় রোগী নিয়ে গিয়ে সড়ক রাস্তায় উঠতে হবে। আগে ছোটো চারচাকা সহ এম্বুলেন্স গ্রামেই চলে আসত। বেহাল রাস্তার কারণে এখন রিকশাও চলে না। হঠাৎ করেই তাঁর মা আরোও অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রস্রাব বন্ধ হয়ে গেলে গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তার ক্যাথেটার লাগিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করেন। আকাশ একটু সহায় হওয়ায় মাকে বাঁশের মাচায় করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যাবস্থা করেন।
বর্তমানে পিংলার বিধায়ক, যিনি গত ১৫ বছর ধরে জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি অজিত মাইতি। এর আগে দুই বারের বিধায়ক সহ মন্ত্রী ছিলেন সৌমেন মহাপাত্র। পিংলার গ্রামীণ রাস্তার এমন হাল। বর্ষা শুরু হলেই আতঙ্কে ভোগেন এলাকার মানুষ! জীবন দুর্বিসহ হয়ে ওঠে এলাকাবাসীর। হাঁটু সমান কাদা ভেঙে নিত্য কাজে যাতায়াত করতে হয় এলাকাবাসীকে। আর কেউ অসুস্থ হলে বা মুমূর্ষকে বাঁচাতে তাই চিকিৎসা কেন্দ্র নিয়ে যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম বাঁশের মাচা। কুলতাপাড়া মৌজায় সাড়ে তিনশ অধিক পরিবারের বাস। ওই গ্রাম থেকে সড়ক রাস্তা পর্যন্ত আরোও তিনটি গ্রাম রয়েছে। এমন জনবসতি এলাকায় বেহাল রাস্তা আজ সাত বছর ধরে।
Comments :0