Cane Art Jalpaiguri

বেতশিল্প আঁকড়ে শচীন্দ্র-সোনাই, চাইছেন সরকার 'একটু ভাবুক'

জেলা

বেতের জিনিস পারি দিচ্ছে সুদুরে।

দীপশুভ্র সান্যাল, জলপাইগুড়ি 

 

বিলুপ্তির পথে বেত শিল্প। পরিবেশ বান্ধব সরঞ্জাম তৈরি করে এই শিল্প। কিন্তু বিপণন পরিকাঠামো নেই। সরকারি পরিকল্পনারও অভাব রয়েছে।

তবুও তাকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রাণপন চেষ্টা করছেন জলপাইগুড়ির শচীন্দ্র। জলপাইগুড়ি শহরের শেষ প্রান্তে তাঁর বাড়ি থেকেই দেশ- বিদেশের বিভিন্ন বড় শহরে যাচ্ছে বেতের সরঞ্জাম। 

বেত শিল্পী শচীন্দ্র নাথ দাস আর তাঁর স্ত্রী সোনাই, দু'জনে মিলে নিজের বাড়ির কারখানাতেই সবার অলক্ষ্যে সারাদিন খেটে বেতের নানান জিনিস বানান। 

ঘরে ব্যবহারযোগ্য প্রয়োজনীয় জিনিস বানানো হয়, স্ত্রী সোনাই বেত দিয়ে ফল রাখার ঝুড়ি, টেবিল ল্যাম্প, ডাইনিং টেবিলে রাখার জন্য বেতের ট্রে সহ বিভিন্ন জিনিস তৈরির কাজ করেন। 

একটা সময় শহরের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ মোড় এলাকায় বেশ কয়েকটি বেতের সামগ্রী বিক্রির দোকান ছিল। করোনাকালে বিক্রি বন্ধ হয়ে যাওয়া, শহরের সামনে দিয়ে যাওয়া হাইওয়ে চার লেনের রাস্তায় পরিবর্তিত হওয়ায় উচ্ছেদ হতে হয় তাঁদের। 

এখন পাহাড়পুর মোড় এলাকায় সাকুল্যে চলছে মাত্র দুইটি দোকান। স্থানীয় বাজারে বেতের সামগ্রীর চাহিদা কম থাকায় সকলেই অনলাইনে সামগ্রী বিক্রি করতে আগ্রহী। 

এ বিষয়ে শচীন্দ্র বলেন, "আগে খুব একটা চাহিদা ছিল না। তবে এখন ভিন রাজ্য এবং বিদেশ থেকে অর্ডার আসছে, কিছুটা হলেও কাজের সাফল্য সামনে আসছে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে মানুষ এইগুলো যেমন কিনছে তার সঙ্গে আমেরিকার মতো দেশ থেকেও আসছে বেত দিয়ে তৈরি জিনিসের অর্ডার।"

শচীন্দ্র বলছেন, চাহিদার তুলনায় জিনিসের যোগান এখনও তারা দিয়ে উঠতে পারেন না পুঁজির অভাবে। 

বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে ক্ষুদ্র শিল্পের জন্য ডিআইসি'র মাধ্যমে ঋণের ব্যবস্থা ছিল। তবে তৃণমূল সরকারের সময়ে কোন  সরকারি সাহায্য মেলেনি। ব্যাঙ্কের লোনও মেলা ভার। মহাজনী ঋন নিয়ে চড়া সুদে কাজ করে চলেছেন বৈরাগী পাড়ায় এই শিল্পী। তিনি বলছেন, "বেতশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার আনন্দ আলাদা। তবে সরকার আমাদের নিয়ে ভাবলে সুবিধা হত।"

Comments :0

Login to leave a comment