West bengal Old Pension Scheme

জীবিত বৃদ্ধাকে ‘মৃত’ বানিয়ে বার্ধক্য ভাতা বন্ধ বানারহাটে

রাজ্য জেলা

ক্যাপশন- সজনা পাড়া গ্রামের বাড়িতে বৃদ্ধা।

সঞ্জিত দে - ধূপগুড়ি 
আশি বছরের জীবিত বৃদ্ধাকে মৃত বানিয়ে বার্ধক্য ভাতা না দেওয়ার অভিযোগ উঠল বানারহাটে। দুয়ারে সরকার শিবির থেকে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য, প্রত্যেকের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেও মিলছে না বার্ধক্য ভাতা। ঘটনাটি জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট ব্লকের সাকোয়াঝোরা-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সজনাপাড়ার ১৪/২০৩ এলাকায়। 
বৃদ্ধা রঞ্জিতা মজুমদার কানে কম শোনেন, ঠিকমতো চোখেও দেখতে পান না। তিনি কাঁচা ঘরে বসবাস করেন। ঘরে যাতে জল না পড়ে তাই প্লাস্টিক টাঙানো আর পাটকাঠির বেড়ায় ঘেরা ঘর। উত্তরবঙ্গের এই কনকনে ঠান্ডায় কোনোরকমে মাথা গুঁজে থাকেন। 
অভিযোগ প্রায় চার বছর ধরে দুয়ারে সরকার থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রধান, পঞ্চায়েত, বিডিও অফিস প্রত্যেক জায়গার দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেও মেলেনি বার্ধক্য ভাতা। সরকারি খাতায় তিনি এখন মৃত, জানানো হয়েছে, সে কারণেই তিনি আর পাচ্ছেন না বৃদ্ধ ভাতা। 
বৃদ্ধার ছেলেদের অবস্থাও বড়ই করুণ। দিন এনে দিন খেয়ে কোন রকমে চলে সংসার। ক্ষুব্ধ পড়শিরাও বলছেন, বৃদ্ধা মানুষ আর কত ঘুরবেন? সরকার যত দ্রুত সম্ভব ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করুক।
রঞ্জিতা মজুমদার বলেন, ‘‘সব জায়গায় গিয়েছি। আমাকে বলা হয় আমি নাকি মৃত। ভোট দিচ্ছি, সব জায়গায় যাচ্ছি, কে যে মৃত বলল জানি না। ভাতার টাকা দিয়েই নিজের চিকিৎসা করাতাম। কিন্তু টাকা বন্ধ হওয়ার পর থেকে চিকিৎসাও করাতে পারছি না। সরকারি ঘরও পাইনি।’’ 
বৃদ্ধার পুত্রবধূ রাধে মজুমদার বলেন, ‘‘আমার শাশুড়ি দশ বছর বার্ধক্য ভাতা পেয়েছেন। হঠাৎ চার বছর ধরে ভাতা বন্ধ। পঞ্চায়েত অফিস বিডিও অফিস দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে গিয়েও আবেদন জানিয়েছি কোন লাভ হয়নি। তারা সকলেই জানিয়েছেন আমার শাশুড়ি নাকি মারা গেছেন সরকারি খাতায়।’’ 
গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য সিপিআই(এম) এরিয়া কমিটির সদস্য বিরাজ সরকার বলেন, ‘‘জনগণের  হকের টাকা লুট করতে তৃণমূল এ রকম ভুরি ভুরি ঘটনা ঘটিয়েছে। এরাই মৃত মানুষকে জীবিত দেখিয়ে তাদের নামে ভাতা তুলছে।’’ 
স্থানীয় অনেকেই বলেছেন, তৃণমূলের প্রধান কোনও কাছের লোককে সুবিধা পাইয়ে দিতেই এই বৃদ্ধাকে মৃত দেখিয়ে নাম বাদ দিয়েছে। 
জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নুরজাহান বেগম এই বিষয়ে নজর দেবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘হয়ত কম্পিউটারের ভুল, হতে পারে। দিদি তো আমাদের বসিয়ে রাখেন না, আমাদের অনেক কাজ থাকে। ভুল হতেই পারে। আমাকে বৃদ্ধার নাম, ঠিকানা পাঠান, আমি দেখব কেন এরকম হচ্ছে।’’
 

Comments :0

Login to leave a comment