DYFI Insaf Yatra

ঠকছেন তাঁরা, পেট ফুলছে মিল মালিকদের, পদযাত্রীদের বলছেন কৃষকরা

রাজ্য

শঙ্কর ঘোষাল

গ্রামের নাম কুলীন। জামালপুরের এই অঞ্চল মূলত কৃষির উপর নির্ভরশীল। ধান আর আলু প্রধান ফসল। 

সেই গ্রামেই শনিবার সকাল ৯টায় পৌঁছানোর কথা ইনসাফ যাত্রার। কিন্তু ২ ঘন্টা  দেরি হলো। কুলীন গ্রামের কৃষক, খেতমজুরদের ধৈর্যচ্যুতি এতটুকু হয়নি। চোখে পড়েছে প্রচুর মানুষকে, স্বাগত জানাতে প্রস্তুত ইনসাফ যাত্রাকে। 

এদিন মেমারী থেকে ইনসাফ যাত্রাকে জামালপুরে যাওয়ার পথে রেলগেটে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়াতে হয়েছিল। প্রতিনিধিদের সংবর্ধিত করেই এদিন শুরু হলো দীর্ঘ পথ হাঁটা। চোখে পড়ল কৃষকদের ধান কাটার ব্যস্ততা, আলু পাতার কাজও শুরু হয়েছে।  পরিচয় হলো মিত্র পাড়ায় শেখ শাজাহানের সঙ্গে। তিনি বললেন, "আমার সাথেই অন্যায় হয়েছে, আমার বাড়ি জমি জোর করে শাসকদল ঘিরে নিয়েছে। আমিও ইনসাফ চাইছি। ওরা গাঁয়ে অন্যায়, লুট করে চলেছে। ভয়ে মানুষ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। ইনসাফ যাত্রা আমাদের ভরসাস্থল।"

 ধান কাটার সময় সাবিত্রী হাঁসদা, মিঠু হাজরার মুখোমুখি পদযাত্রীরা। তাঁরা এক মুখ হাসি নিয়ে ইনসাফ যাত্রাকে হাত নেড়ে বলেছেন, লাল ঝান্ডা ছিল বলেই ৭দিন আগে আমাদের মজুরি বেড়েছে। আগে পেতাম ২২০, এখন বেড়ে হয়েছে ২৬০ টাকা। 

ধান কেটে ভ্যানে বাড়ি নিয়ে চলেছেন শিশির রানা। তিনি বলেছেন, "ধানের দাম নেই, ১০৫০ টাকায়ও কেউ কেনার খদ্দের নেই। তাই বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি।" 

শেখ ইব্রাহিমও একই কথা বলেছেন, তাঁর বাড়ি কাঁটাগড়ে। ৬বিঘে জমি আছে তাঁর। তিনি বলেছেন "সরকারকে ধান বিক্রি করা অনেক হেপা। বস্তায় ৪ কেজি ঢলতা বাদ তার উপর টাকা পেতে ৩-৪ মাস অপেক্ষা করতে হয়। তাই ফড়েদের কাছে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।" 

সরকার এখানেও ঠকাচ্ছে কৃষকদের, মিল মালিকদের পেট ভরছে।  

কুলীন গ্রাম থেকে জৌগ্রাম  মোট ৮ কিলোমিটার রাস্তা। এতটাট পথ হেঁটেই যাবেন ইনসাফের প্রতিনিধিরা। মিছিলের পুরোভাগে আছেন মীনাক্ষী মুখার্জি, ধ্রুবজ্যোতি সাহা, সমর ঘোষ, অপূর্ব চ্যাটার্জি, অয়নাংশু সরকার, অমিত মন্ডল সহ অন্যান্য’রা। সাথে আছেন প্রচুর মানুষ। অনেকটা পথ আসার পরই জৌগ্রামের রানাপাড়াতে প্রতিমা হিমঘরের কাছে আসতেই এখানকার হিমঘরের মহিলা শ্রমিকদের একটা দল গেটের সামনে বেড়িয়ে  হাত নেড়ে ইনসাফ’র জন্য যে পথ ধরেছে যৌবনের তারুন্যে ভরা বাংলার যৌবন তাঁকেই হাত নেড়ে উৎসাহ দিলেন তাই নয় একদল মহিলা শ্রমিক আদিবাসী নাচের সাথে পা মিলিয়ে হাঁটলেনও। ঝর্না পোড়েল, পূর্নিমা বাগ, জয়ন্তী খাড়াদের নাচ দেখে দীর্ঘ পথ হাঁটার কষ্ট অনেকটাই যেন লাঘব হলো ইনসাফ যাত্রার প্রতিনিধিদের। অনেক মহিলা শ্রমিক গেটের বাইরে না আসতে পেরে গেটের ফাঁক দিয়েই হাত নেড়ে যেন  বলতে চাইলেন আমরাও আছি তোমাদের সাথে এই ইনসাফ’র লড়াইয়ে।

Comments :0

Login to leave a comment