Justice Abhijit Gangopadhyay

তৃণমূলের চালেই কুপোকাত তৃণমূল, অভিষেক ও কুন্তলকে একসঙ্গে জেরা

রাজ্য

Justice Abhijit Gangopadhyay


‘দাদা’কে বাঁচানোর আকূল আর্তি বিপদে ফেলল সেই ‘দাদা’কেই। অভিষেক-কুন্তল ‘এপিসোড’ দেখে এমনটাই বলছেন আইনজীবী থেকে শুরু করে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। একইসঙ্গে তাঁদের ইঙ্গিত, সবটাই ইচ্ছাকৃত ভাবে করা হল না তো?

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে এবার সরাসরি চলে এলো তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জির নামও। নিয়োগকাণ্ডে ধৃত খাতায় কলমে ‘বহিষ্কৃত’ যুব তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুন্তল ঘোষের অভিযোগের চিঠির পরিপেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন, ‘প্রয়োজন হলে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত কুন্তল ঘোষ ও অভিষেক ব্যানার্জিকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা যেতেই পারে। বৃহস্পতিবার, বিচারপতি বলেন, অভিষেক ব্যানার্জি এবং কুন্তল ঘোষকে খুব দ্রুত জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত। প্রয়োজনে দুজনকেই একসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করুক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এই প্রথম নিয়োগকান্ডে আদালতের নথিতে সরাসরি অভিষেক ব্যানার্জির নাম চলে এলো। তারই দলের যুব তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুন্তল ঘোষের অতিচালাকির ফলে। তৃণমূলের চালেই কি তৃণমূল কুপোকাত হলো প্রশ্ন আইনজীবী মহলে।

গত ২৯ তারিখ শহীদ মিনারে দলীয় সভা থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি অভিযোগ করেছিলেন কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলো জেরায় তাঁর নাম বলতে চাপ দিচ্ছে। অভিষেক ব্যানার্জি দাবি করেন, ‘এই তো মদনদা জেলে ছিলেন। কুণাল ঘোষও জেলে ছিলেন। এদের বলা হয়েছিল, আমার নাম নিলেই ছেড়ে দেবে। অভিষেক ব্যানার্জির এমন মন্তব্যের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধৃত সরকারি চাকরি বিক্রির এজেন্ট যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল সাংবাদিকদের সামনে তার ‘নেতা অভিষেক ব্যানার্জির’ সুরেই বলেন, তদন্তকারী সংস্থা তাকে চাপ দিচ্ছে প্রভাবশালীদের নাম জানানোর জন্য। গত ৬ এপ্রিলও আদালতে ঢোকার মুখে প্রিজন ভ্যান থেকে নামার পরে সাংবাদিকদের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘বিভিন্নভাবে ভয় দেখিয়ে আমাদের থেকে নেতাদের নাম বার করার চেষ্টা করছে এজেন্সি। আমরা মা মাটি মানুষের আদর্শে বিশ্বাসী। অভিষেক ব্যানার্জির নাম বলতে কেন্দ্রীয় এজেন্সি চাপ দিচ্ছে, আমি আদালতে জানাবো!’

তারপরেই কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তে হেনস্থার অভিযোগ এবং অভিষেক ব্যানার্জির নাম বলতে নাকি বাধ্য করা হচ্ছে দাবি করে হেস্টিং থানায় অভিযোগ করে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত এই তৃণমূল যুব নেতা। মঙ্গলবারই প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারের মাধ্যমে হেস্টিংস থানায় অভিযোগ দায়ের করে কুন্তল ঘোষ। একইসঙ্গে আলিপুর আদালতের বিচারককেও একই অভিযোগ জানিয়ে চিঠি দেয় জেলবন্দি কুন্তল ঘোষ। এই ঘটনার পরেই বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ইডি। তাঁদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ জেলবন্দির তা আদালতের কাছে জানতে চায় ইডি। 

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে আদালতে জানানো হয় পরিকল্পিতভাবে তদন্তকে বিপথে চালিত করতে, বিভ্রান্ত করতে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, ‘প্রয়োজনেনিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত কুন্তল ঘোষ ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জিকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা যেতেই পারে।
 

Comments :0

Login to leave a comment