POST EDITORIAL FOR 16TH JANUARY

সমস্ত শ্রমজীবীর ঐক্যই আজকের আওয়াজ

সম্পাদকীয় বিভাগ

Citu coordination committee trade union leftist movement

সমস্ত ধরনের আপসকামিতার বিরুদ্ধে সংগ্রামের শপথ নিয়ে শ্রমিক শ্রেণির মুক্তির  লক্ষ্যে সিআইটিইউ’র পথ চলা শুরু হয়েছিল ১৯৭০ সাল থেকে। ৫২ বছর আঁকাবাঁকা কাঁটা বিছানো দুস্তর পথ অতিক্রম করে রক্তাক্ত হতে হতে অনেক বাধা পেরিয়ে রক্ত পতাকাকে অনেক শহীদের রক্তে আরও লাল করে ১৭তম সিআইটিইউ’র সর্বভারতীয় সম্মেলন আগামী ১৮ থেকে ২২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বেঙ্গালুরুতে।


এই দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে গতরে খাটা গরিব মানুষ, সাধারণ শ্রমজীবী গরিব মানুষ, কর্মচারীদের শোষণ বঞ্চনা বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রতীক হয়ে উঠেছে সিআইটিইউ। লক্ষ্য এবং আদর্শগতভাবে শোষণ মুক্ত সমাজ গড়ার স্বপ্নের একমাত্র কারিগর সিআইটিইউ। পরাধীন ভারতে সংগঠিত শ্রমিক আন্দোলনের প্রতিষ্ঠার আগে থেকেই বিচ্ছিন্নভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ক্ষেত্রভিত্তিক আন্দোলন ছিলই। পরবর্তীতে এআইটিইউসি গঠিত হয়।

 স্বাধীন ভারতবর্ষের শাসক জাতীয় কংগ্রেসের অক্ষমতা বা পুঁজিবাদ, সামন্তবাদকে তোষণ প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ দিন দেশ পরিচালনার কারণে, স্বাধীনতার সুফল থেকে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের মানুষ, গরিব কৃষক প্রমুখ স্বাভাবিক কারণেই বঞ্চিত হচ্ছিল। শ্রমিকশ্রেণিকে তার প্রতিটি অধিকার আদায় করার জন্য জান কবুল লড়াই করতে হয়েছে, শহীদ হতে হয়েছে এমনকি শ্রমিকদের সংগঠিত হবার জন্য ইউনিয়নের স্বীকৃতি পাবার জন্যও। কোনও অধিকারই সরকারের দয়ার দান ছিল না। কাজের ঘণ্টা, মজুরি বৃদ্ধি থেকে শুরু করে সামাজিক সুরক্ষা সম্পর্কিত সব অধিকার অর্জিত হয়েছে ঐতিহাসিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। 

সেই সময়ে গড়ে ওঠা সংগঠিত ট্রেড ইউনিয়নের একাংশ নেতৃত্বই পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতির প্রয়োজনে সরকার এবং মালিক শ্রেণির বিরুদ্ধে যখন প্রত্যক্ষ সংগ্রামের প্রয়োজন হয়ে উঠছিল তখন দোদুল্যমানতা, আপসকামী মনোভাবের বিরুদ্ধে ১৯৭০ সালে পৃথক ট্রেড ইউনিয়ন সিআইটিইউ গঠন করতে বাধ্য হয়েছিলেন। তারপর থেকে সিআইটিইউ তার লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্পষ্ট ঘোষণা করে যে, ট্রেড ইউনিয়নের প্রথম দাবি অবশ্যই অর্থনৈতিক, কিন্তু আদর্শগতভাবে আমরা বিশ্বাস করি শোষণমুক্ত সমাজ গঠন করতে না পারলে শ্রমিক, কৃষক, গরিব ও সাধারণ মানুষের প্রকৃত অর্থে মুক্তি নেই। শ্রেণি বিভক্ত সমাজে তাই শ্রেণি আন্দোলন অপরিহার্য। তাই প্রয়োজন রাজনৈতিক সংগ্রামের। এখানেই অন্য ট্রেড ইউনিয়নের সঙ্গে সিআইটিইউ’র প্রধান পার্থক্য।


তথাপি সিআইটিইউ নীতিগতভাবে ঐক্য সংগ্রাম ঐক্যে বিশ্বাসী। পরিস্থিতির প্রয়োজনে শ্রমিকশ্রেণির স্বার্থে ট্রেড ইউনিয়নগুলির ঐক্যবদ্ধ যুক্ত আন্দোলনের প্রচেষ্টা প্রথম থেকেই সততার সঙ্গে জারি রেখেছে এবং তার প্রতিফলন বাস্তবে ঘটাতে সক্ষম হয়েছে।


আজকের যে পরিস্থিতিতে সিআইটিইউ’র সর্বভারতীয় সম্মেলন হতে চলেছে তেমন পরিস্থিতির মুখোমুখি অতীতে আমাদের দেশকে কখনও হতে হয়নি। স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে পুঁজিবাদ, সামন্তবাদের পৃষ্ঠপোষক বুর্জোয়া সরকারগুলি শাসন ক্ষমতা অর্জন করেছে, দেশ পরিচালনা করেছে। এমনকি উদার অর্থনৈতিক নীতির প্রয়োগ প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে জাতীয় কংগ্রেসের শাসনে। নির্বাচনে ক্ষমতার হাত বদল হয়েছে কিন্তু কখনও আজকের পরিস্থিতির কল্পনা করা যায়নি। শোষণ, বঞ্চনা, বৈষম্য, অত্যাচার ছিল। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে দমন করতে নৃশংসতাও ছিল কিন্তু তার সঙ্গে আজকের পরিস্থিতির মিল খুঁজতে যাওয়া ভুল করা হবে। বুর্জোয়া সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় গণতন্ত্র নির্মূল হয়নি। চেষ্টা হয়েছিল, তা সফল হয়নি। ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ, বাক্‌স্বাধীনতাকে স্তব্ধ করা, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতার উপর আঘাত এমন বীভৎসতা তখন দেখা যায়নি। এমন নির্মম খোলাখুলি নিপীড়ন, দেশের এবং দেশের মানুষের এমন সর্বনাশা নীতি গ্রহণ করার সাহসও দেখাতে পারেনি পূর্ববর্তী শাসককুল।  
বর্তমানে দেশে এবং আমাদের রাজ্য সহ অনেকগুলি রাজ্য মতাদর্শগতভাবে কর্পোরেট পুঁজির স্বার্থে নির্লজ্জভাবে দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্ধবিরোধী নীতি গ্রহণ করে তা কার্যকর করে চলেছে।


এই কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টি করতে আরএসএস অত্যন্ত গোপন প্রথম থেকে তাদের দর্শন অনুযায়ী ভারতবর্ষকে হিন্দু রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তোলার কাজ করে চলেছে। ধর্মনিরপেক্ষতা নয় হিন্দুত্বকেই একমাত্র ধর্ম হিসাবে প্রাধান্য দেওয়ার লক্ষ্যে কমিউনিস্ট, মুসলমান ও খ্রিস্টানদের প্রধান শত্রু হিসাবে ঘোষণা করে ধর্মীয় ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র, মনুবাদী মতাদর্শে গড়ে তোলার কাজ করছে। এই কাজ করতে তাদের পক্ষে ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে পুরাতন বুর্জোয়া পার্টিগুলির উপর মানুষ বীতশ্রদ্ধ হওয়ার ফলে। সেই মানুষের মধ্যে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করে সংসদীয় গণতন্ত্রকে নানা কৌশলে ব্যবহার করে ধীরে ধীরে আজকের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। কমিউনিস্ট পার্টি সহ বামপন্থীরাও দুর্বল হয়েছে।  


বিশ্বজোড়া একটা দীর্ঘ সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে পুঁজিবাদ। বহু চেষ্টা করেও সেই সঙ্কট থেকে মুক্ত হতে পারছে না। যার সমস্ত বোঝা চাপছে সাধারণ মানুষ ও গরিব মানুষের উপর। নীতি নৈতিকতা, মানবিকতা বিসর্জন দিয়ে যে কোনও নির্মম কাজ করতেও পিছু পা হচ্ছে না পুঁজিবাদ, কর্পোরেট পুঁজি, লগ্নিপুঁজি।


খোদ আইএমএফ স্বীকার করেছে যে, ১৯৭০ সালে আসা পুঁজিবাদী সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার জন্য যে উদার অর্থনৈতিক নীতি প্রয়োগ করা হচ্ছিল তা কানাগলির মধ্যে ঢুকে পড়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে নরেন্দ্র মোদীর সরকার অত্যন্ত আক্রমণাত্মকভাবে সেই নীতিকেই কর্পোরেট প্রভূদের সহজে মুনাফা করার সুযোগ করে দিতে সেই নীতিকেই কার্যকর করে চলেছে।


গ্রাম ভারতেও পুঁজির বিকাশ ও প্রসার ঘটছে। কর্পোরেটের জন্য জমি অধিগ্রহণ, সরকারি জমি জমি হাঙ্গরদের হাতে ছেড়ে দেওয়া বিপজ্জনভাবে বেড়ে চলেছে। গ্রামাঞ্চলে শ্রেণিগতভাবেও মানুষ বিভক্ত হয়ে পড়ছেন। কৃষক, খেতমজুর ছাড়াও অকৃষি শ্রমজীবী মানুষ ক্রমশ বাড়ছে বিশাল সংখ্যায়। এই তিন অংশের যুক্ত আন্দোলন ব্যতিরেকে গ্রামে নতুন করে তৈরি হওয়া নব্য ধনী, ক্ষয়িষ্ণু সামন্ততন্ত্রের অবশিষ্ট অংশ ধনতান্ত্রিক জমিদার ঠিকাদার ব্যবসায়ীদের চরম শোষণ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।


সব মিলিয়ে দে‍‌শের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের মানুষ, সব পেশার মানুষ শোষণের যাঁতাকলে পড়ে ছটফট করছেন। মুদ্রাস্ফীতি, দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, কাজ নেই, মানুষের আয় ক্রমশ কমছে। খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা, বস্ত্র, বাসস্থান এবং কাজের অধিকার যা সংবিধানে মৌলিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃত সব ক্ষেত্রই আক্রান্ত-দক্ষিণপন্থী স্বৈরতান্ত্রিক মৌলবাদী সরকার দ্বারা। ভারত কল্যাণকর রাষ্ট্র এটা বিজেপি সহ চরম দক্ষিণপন্থী রাজ্যের ও কেন্দ্রের সরকার মানতে রাজি নয়। তাই মানুষের সামাজিক সুরক্ষা, ভরতুকি মুক্ত সব ধরনের পরিষেবা সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকারের দেমাকে শুধুমাত্র ঘোষণা করে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।

 সরকারের প্রত্যক্ষ মদতে কর্পোরেট পুঁজি, পুঁজিপতিরা মুনাফার নতুন নতুন পন্থা তৈরি করে নিচ্ছে। কোনও বিনিয়োগ ছাড়া সঞ্চয় বৃদ্ধি তার একটা উদাহরণ। যেমন লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিচ্ছে শোধ করছে না। পুঁজির স্বার্থবাহী সরকার সেই ঋণ মকুব করে দিচ্ছে। সাধারণ মানুষের সঞ্চিত অর্থ লুট হয়ে সঞ্চয় বাড়চ্ছে পুঁজিপতিদের। এছাড়া সহজে ব্যবসা করার এবং প্রচুর মুনাফা কামানোর পথ করে দিতে বিনিয়োগ ছাড়া এমনকি কোথাও কোথাও কোনও পরিকাঠামো ছাড়াই কোটি কোটি টাকা মুনাফা করতে ‘‘গিগ ইকনমি’’, ‘‘গিগ এমপ্লয়মেন্ট’’ ঘোষণা করে চালু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। যেমন অ্যাপ-ক্যাব-এর ব্যবসা, অ্যামাজন ধরনের ডেলিভারি অ্যাপ নির্ভর ব্যবসা। কোনও বিনিয়োগ নেই- কোটি কোটি টাকা মুনাফা। অ্যাপ চালক বা ডেলিভারি বয় পরিচয়হীন শ্রমিক হিসাবে সস্তায় শ্রম বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। আমাদের দেশে এই ধরনের গিগ শ্রমিকের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ২ কোটি ছাড়িয়ে গেছে।


শ্রমিক তথা শ্রমজীবী মানুষের যতটুকু আইনি অধিকার ছিল যা লড়াই করেই অর্জিত হয়েছিল এক এক করে সেই সব অধিকারগুলি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। শ্রমের মূল্য কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। স্থায়ী শ্রমিক কমছে, বাড়ছে বেকার, বাড়ছে চুক্তি ভিত্তিক বা ঠিকা শ্রমিক। মানুষের অর্জিত অধিকার যা আইনসম্মতভাবে স্বীকৃত সেগুলো আইন পরিবর্তন করে নিচ্ছে সরকারকে ব্যবহার করে।
শ্রমিকদের অর্জিত অধিকারগুলি কেড়ে নিতে যেমন শ্রমকোড চালু করেছে একইভাবে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন পরিবর্তন করার মদত দিয়ে কৃষক-কর্মচারীর সরাসরি ক্ষতি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি আপামর সাধারণ মানুষের ক্ষতির কারণ হয়ে উঠেছে। উৎপাদনহীন, কর্মসংস্থানহীনভাবে শুধু পুঁজি বৃদ্ধির খোলাখুলি সুযোগ করে দিচ্ছে সরকার। আত্মনির্ভরতার স্লোগানের আড়ালে সমস্ত সরকারি প্রতিষ্ঠান জলের দামে, এমনকি বিনামূল্যে বেসরকারি কর্পোরেট পুঁজিকে দিয়ে দিচ্ছে দেশের সরকার। বাদ নেই কিছুই। 

জল, জমি, জঙ্গল সবই দিয়ে দেওয়া হচ্ছে বেসরকারি ব্যক্তি বা সংস্থার কাছে। কয়লা খনি, বন্দর, বিমান, রেল, ব্যাঙ্ক, বিমা থেকে শুরু করে সমস্ত সরকারি সংস্থা লুট হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে সমাজের হাতে গোনা ধনিক কুল সর্বোচ্চ মুনাফা করছে আর বেশির ভাগ শ্রমিক, কৃষক, খেতমজুর, কর্মচারী, গরিব শ্রমজীবী মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন। সমাজে বাড়ছে বৈষম্য। এ‍‌ই সমস্ত শোষণ বঞ্চনার হাত থেকে নিজেদের, দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা করাই আজকে দে‍‌শের শ্রমিক শ্রেণির সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ।


এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার পথের নির্দিষ্ট দিশা নির্ণীত হবে সিআইটিইউ’র ১৭তম সর্বভারতীয় সম্মেলনে। ভয়ঙ্কর নির্দয় শোষণ শাসনের বিরুদ্ধে, ধর্মীয় এবং চরম দক্ষিণপন্থী ফ্যাসিবাদী শক্তির কবল থেকে দেশ ও দশের মানুষকে রক্ষার দায়িত্ব পালনে শ্রমিক শ্রেণির উপযুক্ত সংগ্রাম গড়ে তোলার প্রশ্নে এই সম্মেলনের অসীম গুরুত্ব।


এই আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই জারি আছে। ক্ষেত্র ভিত্তিক সংগ্রাম, যুক্ত আন্দোলন-সাধারণ ধর্মঘট, বিশাল বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ লাগাতার ভাবে সিআইটিইউ’র নেতৃত্বে জারি আছে দেশ জুড়ে। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে বেপরোয়া সরকারকে তার সিদ্ধান্ত রূপায়ণে বাধাদান করে থামিয়ে রাখা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু যে চরম আক্রমণের মুখে মানুষ এবং দেশ রয়েছে তাতে প্রয়োজন সব অংশের মানুষের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ আক্রমণাত্মক আন্দোলনের।


শ্রমিক শ্রেণিকে মতাদর্শগতভাবে সেই আন্দোলনকে নেতৃত্ব প্রদানকারী অবস্থানে পৌঁছাতে হবে। তার জন্য একদিকে যেমন ট্রেড ইউনিয়নগুলির কর্মচারী সংগঠনগুলির ঐক্য গড়ে তোলার দায়িত্ব সিআইটিইউ’কে নিতে হবে একইভাবে শ্রমিক, কৃষক, খেতমজুর এবং সমাজের সব অংশের মানুষের ঐক্য গড়ে তুলে এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার দায়িত্বও ঐতিহাসিক কারণেই গ্রহণ করতে হবে।


এই ঐক্য গড়ে তোলার জন্য একদিকে যেমন প্রচেষ্টা জারি আছে তেমনই ঠিক তার বিপরীতে শাসক মানুষের মধ্যে অনৈক্যের বীজ গভীরভাবে প্রোথিত করে চলেছে জাত, পাত, ধর্ম, বর্ণ, ভাষার নামে। আক্রান্ত মানুষের কাছে আক্রমণকারী আড়াল করতে একদিকে মিথ্যার নির্মাণ করে চলেছে, অন্য দিকে সব অধিকার কেড়ে নিয়ে ইচ্ছায় ভিক্ষা হিসাবে সাময়িকভাবে আর্থিক সাহায্য তথা ডোলের প্রলোভনের জালে জড়িয়ে ফেলছে।


দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রান্তিক স্তর পর্যন্ত‍‌ শোষিত প্রত্যেকটি মানুষের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলে তাদের কাছে প্রকৃত শত্রুকে চিহ্নিত করতে হবে। তাদের সংগঠিত করতে হবে, সচেতন করতে হবে এবং লড়াইতে শামিল করতে হবে। এখন আর কোনও অবকাশ নেই থেমে থাকার। প্রতিবাদ, প্রতিরোধের প্রস্তুতি সর্বক্ষেত্রে গড়ে তোলার আওয়াজই হবে সর্বভারতীয় সম্মেলনের দিক নির্দেশ। 


 

Comments :0

Login to leave a comment