অন্যকথা
যে প্রতিষ্ঠানে গবেষণা করে রামণ পেলেন নোবেল
------------------------
তপন কুমার বৈরাগ্য
------------------------
মুক্তধারা
১৮৭৬খ্রিস্টাব্দে মহেন্দ্রলাল সরকার 'ভারতবর্ষীয় বিজ্ঞান সভা'
বা' ইন্ডিয়ানঅ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অভ্ সায়েন্স'
প্রতিষ্ঠা করেন।তিনি পেশাগত দিক থেকে ছিলেন একজন
স্বনামধন্য ডাক্তার।ইংরেজ সরকারের কোনোরকম সাহায্য
ছাড়াই নিজের একান্ত প্রচেষ্টায় এফং নিষ্ঠায় এই ধরনের
এক আধুনিক বিজ্ঞানাগার গড়ে তোলেন।মহেন্দ্রলাল সরকার
২রা নভেম্বর হাওড়ার মুন্সিরহাটে জন্মগ্রহণ করেন।তার প্রতিষ্ঠিত
এই গবেষণাগার আজ সারা পৃথিবীতে সমাদৃত।কারণ এই প্রতিষ্ঠানে গবেষণা করে চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটরামণ ১৯২৮খ্রিস্টাব্দে
রামণ এফেক্ট আবিষ্কার করেন এবং ১৯৩০খ্রিস্টাব্দে নোবেল
পুরস্কার পান।মহেন্দ্রলাল সরকার ২৩শে ফেব্রুয়ারি ১৯০৪খ্রিস্টাব্দে
মারা যান।এরপর ওই সংস্থার সম্পাদক হন স্যার আশুতোষ
মুখোপাধ্যায়।১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটরামন ইন্ডিয়ান
অ্যাসোসিয়েশন ফর কালটিভেশন অফ সায়েন্সের সদস্য হন।তারপর থেকে তিনি এখানে শব্দবিজ্ঞান,বাদ্যযন্ত্রের শব্দতত্ত্ব
ও আলোর তরঙ্গ ধর্মের উপর গবেষণা করতে থাকেন।তখন
তার বয়েস মাত্র কুড়ি বছর।তার এই সমস্ত গবেষণা সংক্রান্ত
বিখ্যাত প্রবন্ধগুলো নেচার,ফিলসফিক্যাল ম্যাগাজিন,
ফিলজফিক্যাল রিভিও পত্রিকায় একে একে প্রকাশিত হতে থাকে।সারা পৃথিবীর লোকের কাছে তিনি পরিচিত হতে থাকেন।
কঠিন, তরল,অথবা বায়বীয় স্বচ্ছ বস্তুর মধ্যে দিয়ে যখন আলো
যায় তখন সেই আলোর মধ্যে কিছু প্রকৃতিগত পরিবর্তন হয়।
একেই বলে রামণ এফেক্ট।রামণ এফেক্ট দ্বারা প্রমাণিত হয় আলোর ফোটন কণিকা অণুর সাথে চরম সংঘাত ঘটিয়ে পরমাণুর
গতিশক্তি থেকে বেশ কিছু শক্তি সংগ্রহ করে আরো শক্তিশালী হয়ে
ওঠে।এর ফলেই আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য কমে যায়।তিনি রবীন্দ্রনাথের
পর দ্বিতীয় ভারতীয় যিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
আমরা গর্বিত এই কলকাতার বুকেই তিনি গবেষণা করে
ভারতবর্ষের জন্য বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার এনে দেন।
এজন্য সবার আগে স্মরণ করতে হয় মহেন্দ্রলাল সরকারকে।
যিনি আমাদের দেশে আধুনিক বিজ্ঞানের বুনিয়াদ রচনা করে গেছেন।
আর ভারতবর্ষীয় বিজ্ঞান সভা বিশ্বের দরবারে স্থায়ী আসন লাভ করে ভারতের মুখ উজ্জ্বল করেছে।
Comments :0