cbi interrogation

সিবিআই'র জেরা শিক্ষা সচিবকে

কলকাতা

 

শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির তদন্তে সিবিআই আধিকারিকরা ফের হানা দিলেন বিকাশ ভবনে। বুধবার সন্ধ্যে ৬টা নাগাদ সিবিআই’র দুই জন আধিকারিক বিকাশ ভবনে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরের সচিব মণীশ জৈনের ঘরে যান। সেই সময়ে শিক্ষা সচিব নিজের ঘরেই ছিলেন। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, শিক্ষক নিয়োগের বিষয় নিয়ে কিছু ধোঁয়াশা সম্পর্কে তথ্য জানতেই সিবিআই’র দুই আধিকারিক মণীশ জৈনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। এদিন সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা নাগাদ সিবিআই’র আধিকারিকরা বিকাশ ভবন থেকে বের হয়ে যান।
রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগে একাধিক বেনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এসেছে। সেই সব বিষয়ে ইডি এবং সিবিআই উভয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাই আলাদাভাবে তদন্তে নেমেছে। নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় আগেই গ্রেপ্তার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গ্রেপ্তার করা হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়, এসএসসি'ও প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যকেও। তৃণমূলের অপর এক বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে। রাজ্যের তৎকালীন একাধিক শিক্ষাকর্তাকেও গ্রেপ্তার করেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর বিকাশ ভবনের ছয় তলায় যান সিবিআই’র আধিকারিকরা। এই ছয় তলাতেই শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বসেন। তাঁর ঘরের উলটোদিকেই তাঁর অফিস রুমের একাধিক কম্পিউটার খতিয়ে দেখা হয়, সেখান থেকে বিভিন্ন নথিও সংগ্রহ করেন গোয়েন্দা আধিকারিকরা। একাধিক ফাইলও দীর্ঘক্ষণ ঘাঁটেন তাঁরা। বিকাশ ভবনে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের স্টোররুমেও যান সিবিআই আধিকারিকরা। সেখানে বিভিন্ন নথি ঘেঁটে দেখার পরে সেদিন ওই স্টোর রুম সিল করে দিয়ে যান সিবিআই আধিকারিকরা। 
স্কুলে গ্রুপ-সি থেকে গ্রুপ-ডি, এসএসসি নিয়োগকাণ্ডের একের পর এক দুর্নীতির ছবি সামনে এসেছে। নবম-দশমে নিয়োগে দুর্নীতির ন্যক্কারজনক ছবি প্রায় প্রতিদিনই সামনে আসছে। নবম-দশমে ৯৫২ জন চাকরিপ্রার্থীর ওএমআর শিট আদালতের নির্দেশ মেনে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে বাধ্য হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। শূন্য পেয়ে, খালি খাতা জমা দিয়েও এসএসসি'র পরীক্ষায় রীতি মতো 'উত্তীর্ণ' হয়ে চাকরি করছেন, এমন অভিযোগ ভূরি ভূরি। গ্রুপ-ডি পদেও ১০০ জন পরীক্ষার্থীর ওএমআর শিট প্রকাশ করেছে কমিশন। সেখানে দেখা গিয়েছে, শূন্য পাওয়া পরীক্ষার্থীদের সবাই আশ্চর্যজনকভাবে ৪৩ নম্বর করে পেয়েছে, ৫০ জনের নাম প্যানেলেও উঠেছে। 
কিছু দিন আগেই অবৈধ প্রার্থীদের জন্য শূন্যপদ সৃষ্টি সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে শুনানিতে এসেছিল ব্রাত্য বসুর প্রসঙ্গ। এই মামলায় বিচারপতি শিক্ষা সচিব মণীশ জৈনকে আদালতে তলব করেছিলেন। শুনানি চলাকালীন এজলাসে বিচারপতি তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, স্কুলে চাকরির ক্ষেত্রে অযোগ্য প্রার্থীদের পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত কীভাবে নেওয়া হয়েছে? শিক্ষা সচিব জানিয়েছিলেন, উপযুক্ত স্তর থেকেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসুই তাঁকে বলেছিলেন, এই সিদ্ধান্ত রাজ্য মন্ত্রীসভার।
 

Comments :0

Login to leave a comment