INSAF JATRA

ইনসাফ চেয়ে পদযাত্রায় অংশ নিলেন টিকিয়াপাড়ার মহিলা, শ্রমিকরা

রাজ্য

মহিলারা সম্বর্ধনা জানাচ্ছেন যুব নেতৃবৃন্দকে। ছবি: শুভাশিস দেব সরকার।

শুভাশিস দেব সরকার- হাওড়া

কাজ, শিক্ষা সহ বিভিন্ন দাবিতে কোচবিহার থেকে শুরু হওয়া ইনসাফ যাত্রা হাওড়া জেলার বিভিন্ন পথ অতিক্রম করে বালিখাল হয়ে মঙ্গলবার বিকালে হুগলি জেলায় প্রবেশ করে ইনসাফ যাত্রা। এদিন ৪০ দিন পূর্ণ করলো ইনসাফ যাত্রা। এদিন সকাল হতেই শিবপুর অশোকা সিনেমার সামনে থেকে সাদা পায়রা উড়িয়ে শান্তির বার্তা পৌঁছে পদযাত্রা পথ চলা শুরু করে। পদযাত্রার পথে বিভিন্ন জায়গায় পদযাত্রীদের সম্বোধন জানানো হয়। বিভিন্ন অঞ্চলের জনবহুল স্থানে পদযাত্রীদের সম্বর্ধনা জানানো হয়। রাস্তায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে পদযাত্রীদের সম্বোধন দিতে দেখা যায় সাধারণ মানুষকেও। হাওড়া শহরে যুবকদের উৎসাহ উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। এদিন শিবপুর থেকে শুরু হয়ে হাওড়া শহরের বিভিন্ন রাস্তা পরিক্রমা করে পদযাত্রা শেষ হয় বালিখালে। পদযাত্রা চলাকালীন সময়ে বহু সাধারণ মানুষ, বহু সংগঠনের পক্ষ থেকে ব্রিগেড সমাবেশ সফল করার জন্য অর্থ তুলে দেন মীনাক্ষী মুখার্জীর হাতে। 


 

১৯৭০ সালে নকশাল বাহিনীর হাতে শহীদ হন সিপিআই(এম) কর্মী কমরেড শ্যামল মিত্র। ইনসাফ চাওয়ার দাবিতে পদযাত্রা যখন কদমতলা প্রকাশ করে তখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে ইনসাফ যাত্রার পদযাত্রীদের সংর্বধনা দিতে অশক্ত শরীরে শহীদ কমরেড শ্যামল মিত্রের দাদা অরুণ মিত্র মীনাক্ষী মুখার্জীর হাতে ফুলের স্তবক তুলে দেন। ইনসাফ যাত্রা সংখ্যালঘু প্রধান এলাকা টিকিয়াপাড়ায় প্রবেশ করা মাত্র মহিলারা বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে পদ যাত্রীদের সম্বোধন জানান। জড়িয়ে ধরেন মীনাক্ষী মুখার্জীকে। তাঁকে কাছে পেয়ে নিজেদের অভিযোগ জানান মহিলারা। তাঁরাও ইনসাফ চেয়ে এই পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। পদযাত্রায় দাবি ওঠে সমস্ত বেকার যুবক, অবস্থান রত চাকরীপ্রার্থী, প্রতারিত সাধারণ মানুষের হক ছিনিয়ে আনতেই এই ইনসাফ যাত্রা। এদিন ইনসাফ যাত্রায় অংশ নেন মীনাক্ষী মুখার্জী, ধ্রুবজ্যোতি সাহা, হিমঘ্নরাজ ভট্টাচার্য, গণ আন্দোলনের নেতা দিলীপ ঘোষ, তরুণ ব্যানাজী, কৃষক নেতা পরেশ পাল। 


এদিন ইনসাফ যাত্রা হাওড়া শহরের যে যে অঞ্চলের মধ্য দিয়ে গেছে সেই অঞ্চলের সাধারণ মানুষ অধীর আগ্রহ নিয়ে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে পদযাত্রীদের দাবির সমর্থনে নৈতিক সমর্থন জানিয়েছেন। যেমনভাবে সমর্থন জানিয়েছেন রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের সংগঠন ১২ জুলাই কমিটি। পোড়া ময়দানে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে পদ যাত্রীদের সম্বর্ধনা জানিয়েছেন সরকরী কর্মচারীরা। পদযাত্রা পিলখানায় পৌঁছালে ব্রিজ এন্ড রুফ কারখানার শ্রমিক কর্মচারীরা কারখানার বাইরে বেরিয়ে এসে পদ যাত্রীদের সম্বর্ধনা জানান। মীনাক্ষী মুখার্জীকে সম্বর্ধনা জানান প্রবীণ শ্রমিক নেতা দীপক দাশগুপ্ত। লাভজনক সরকারী সংস্থা হওয়া সত্বেও কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বেসরকারি মালিকের হাতে তুলে দিতে চায় ব্রিজ এন্ড রুফ কারখানাকে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লাগাতার লড়াই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিক কর্মচারীরা। ব্রিজ এন্ড রুফ কারখানার শ্রমিক কর্মচারীদের পাশে থাকার অঙ্গিকার জানিয়ে পদ যাত্রীরা এগিয়ে চলেন। দীর্ঘ পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হাওড়া কর্পোরেশনের নিবার্চিত পৌর বোর্ড নেই। ভোট না করে জোর করে দখল করে পৌরসভা পরিচালিত করছে তৃণমূল কংগ্রেস। সর্বত্র দুর্নীতি চলছে এর বিরুদ্ধেও সরব হন পদ যাত্রীরা। এছাড়াও হাওড়া জুট মিল সহ বহু জুটমিল বন্ধ হাওড়া জেলায়। কয়েক হাজার জুট মিলের শ্রমিক কাজ হারিয়েন। অবিলম্বে জুট মিল খোলার দাবিও ওঠে পদ যাত্রীদের কাছ থেকে।

Comments :0

Login to leave a comment