Md Salim at Purba Medinipur

বারবার কানমলা খেয়েও শিক্ষা হচ্ছে না কমিশনের: সেলিম

রাজ্য

CPIM RALLY


রামশঙ্কর চক্রবর্তী


আদালতে বারবার কানমলা খেয়েও শিক্ষা হচ্ছে না নির্বাচন কমিশনের। বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী না রাখার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। 
রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে তিন কিলোমিটার পদযাত্রায় নেতৃত্ব দেন সেলিম। এদিন কমিশনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বোঝা যাচ্ছে কোন বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে না পঞ্চায়েত ভোটে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে যেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে তাতে বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের কোন কথার উল্লেখ নেই। কমিশন নির্দেশিকায় জানিয়েছে যে, নাকা চেকিং এবং টহলদারির জন্য বাহিনীকে ব্যবহার করা হবে।


এই প্রসঙ্গেই সেলিমকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। তিনি বলেন, ‘‘সিপিআই(এম) প্রথম থেকেই বলছে সাধারণ মানুষ যেন নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে তা নির্বাচন কমিশনকে নিশ্চিত করতে হবে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করা কমিশনের দায়িত্ব। তা পালন করছে না বলেই আদালতে বারে বারে কানমলা খাচ্ছে কমিশন। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ নিয়েও তা হয়েছে। তবু কমিশনের শিক্ষা হচ্ছে না।’’
শনিবার চণ্ডীপুরে পদযাত্রা হয় এড়াশাল প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে থেকে ১১৬ বি জাতীয় সড়ক, চন্ডীপুর থানার সামনে থেকে ক্ষুদিরাম মোড় পর্যন্ত দীর্ঘ তিন কিলোমিটার রাস্তায়। এই পদযাত্রায় নেতৃত্ব দেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। ছিলেন সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ। মিছিল শেষে ক্ষুদিরাম মোড়ে সভা হয়। সভায় সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন মহম্মদ সেলিম। সভায় বক্তব্য রাখেন মহম্মদ সেলিম, অনাদি সাহু, নিরঞ্জন সিহি, মহাদেব মাইতি। সভাপতিত্ব করেন মঙ্গলেন্দু প্রধান।
নন্দীগ্রামের প্রবেশপথ এই চন্ডীপুর ২০০৭ সাল থেকে সমস্ত চক্রান্তের সাক্ষী। ২০০৮’র পঞ্চায়েত নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ এবং অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেস। আর সেই সময় থেকেই পূর্ব মেদিনীপুরে শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে কার্যত দুবৃত্তায়ন হয়েছিল। সেই শুভেন্দু অধিকারী এখন বিজেপি’তে। 


সেলিম মনে করিয়ে দেন যে ২০১৮’র ভোট লুটে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তখন তৃণমূল সরকারের মন্ত্রী তিনি। শুভেন্দু বলেছিলেন, বিরোধীশূন্য করলে পাঁচ কোটি করে টাকা দেওয়া হবে। ২০১৮’র সেই স্মৃতি মনে আছে এ রাজ্যের মানুষের। সিপিআই(এম) বলেছিল ২০১৮ আর ২০২৩ এক নয়। পুলিশ তৃণমূলের যৌথ আক্রমণের পরেও সিপিআই(এম) সহ বামপন্থীরা প্রার্থী দিয়েছে অনেক বেশি আসনে।
সেলিম বলেন, ‘‘তৃণমূল আর বিজেপি ধর্ম, বর্ণ, জাতির মধ্যে বিভাজন তৈরি করেছে। পাহাড় থেকে সমতল জাতি, গোষ্ঠী আর ধর্মের নামে মানুষের মধ্যে বিভাজনের বিষ ঢেলেছে। এই পূর্ব মেদিনীপুরে ২০০৮ সালে জেলা পরিষদ দখল করেছিল তৃণমূল। তখন তৃণমূলের যুব নেতা শুভেন্দু অধিকারী স্লোগান দিয়েছিলেন যে জেলায় লাল ঝান্ডা কেন লাল কাপড় খুঁজে পাওয়া যাবে না। লাল ঝান্ডাকে হটানো যায়নি। কিন্তু এখন সেই শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের ঝান্ডাটা নিয়ে মোদী অমিত শাহের জুতো পরিষ্কার করছে।"


সভায় অনাদি সাহু বলেন "তৃণমূলের দুর্নীতি এবং স্বজন পোষণ চলছে রাজ্যে। এ রাজ্যের বাসিন্দা হিসেবে মাথার নিচু হচ্ছে সারা দেশের কাছে। এ রাজ্যটাকে ২০১১ সালের পর থেকে বোমা বন্দুকের রাজ্যে পরিণত করেছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত গুলিকে লুটের আখড়াতে পরিণত করেছে তৃণমূল। শ্রমিক, কৃষক বিরোধী দুই শক্তিকে পঞ্চায়েত থেকে সরাবেন সাধারণ মানুষ।"
নিরঞ্জন সিহি বলেন "এ জেলায় তৃণমূল ২০১১ সালের পর থেকে যা যা সন্ত্রাস করেছে তার সবটাই হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে।’’

Comments :0

Login to leave a comment