Fire in Howrah

হাওড়ার বস্তিতে আগুন, খোলা আকাশের নীচে ১৩০টি পরিবার

রাজ্য জেলা

আচমকাই আগুন লাগে বস্তিতে। আগুনে পুড়ে যায় প্রায় ১৩০টি ঘর। হাওড়ার অত্যন্ত জনবহুল রাস্তা ড্রেনেজ ক্যানেল রোডের ধারে আনন্দময়ী আশ্রমের ধারে সব হারালেন বস্তিবাসীরা। দরিদ্র ও হত দরিদ্র মানুষের বসবাস এই বস্তিতে। বস্তির সামনেই রয়েছে রাজ্য সরকারের বহুতল আবাসন।  
মঙ্গলবার বিকাল ৫ টা নাগাদ বস্তির ভিতরে একটি ঘরে আগুন দেখতে পান বস্তি বাসীর। চারদিকে ফাঁকা জায়গা হওয়ায় সাথে দমকা হাওয়া চলার জন্য আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের হাত থেকে বাঁচতে বাসিন্দারা নিজেদের ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন। নিমেষের মধ্যেই ভষ্মীভূত হয়ে যায় বস্তিতে থাকা ১৩০ টি ঘর। আগুন নেভাতে হাত লাগান স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর দেওয়া হয় দমকলে। আগুন লাগার প্রায় এক ঘণ্টা পর সন্ধ্যা ছয়টা দমকলের দুইটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছালেও পর্যাপ্ত জল না থাকায় আগুন নেভাতে অসুবিধায় পড়েন দমকল কর্মীরা। আগুনের ভয়াভয়তা দেখে দমকলের ১২টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয়। ঘটনাস্থলে আসেন রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু সহ দমকলের আধিকারিকরা। প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনায় হতাহতের কোন খবর নেই বলে জানান দমকল মন্ত্রী।

 

হাওড়া জেলায় একের পর এক জায়গায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে। মঙ্গলবার ভোর রাতে পাঁচটায় আগুন লেগে ভষ্মীভূত হয়ে যায় একটি পেপার টিস্যু মিল। সন্ধ্যায় আবারও বস্তিতে আগুন লাগায় আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। হাওড়ার কদমতলা থেকে কোনা এক্সপ্রেস ওয়েতে যাবার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ড্রেনেজ ক্যানেল রোড। সেই রাস্তার ধারেই বামফ্রন্ট সরকারের উদ্যোগে তৈরি করেছিল বহুতল আবাসন। আবাসনের সামনেই ছিল এইচ আই টি কয়েক বিঘা জমির উপর সবহারা বস্তি। বস্তিবাসীদের সুরক্ষিত রেখেই গড়ে তোলা হয়েছিল আবাসন। সরকার পরিবর্তন হবার পর জমি হাঙরদের নজর পড়ে এই বস্তির জমিতে। বস্তিবাসীদের অভিযোগ আগুন লাগানো হয়েছে। যাতে করে বস্তির গরীব মানুষদের উচ্ছেদ করা যায়। তাদের আরও অভিযোগ আগুন লাগার প্রায় এক ঘণ্টা পরে দমকলের ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসে। সঠিক সময়ে দমকলের ইঞ্জিন এলে হয়তো বেশ কিছু ঘরকে আগুনের হাত থেকে বাঁচানো যেত।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল ঘর পুড়ে যাওয়া মানুষের আর্তনাদ। সব হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বস্তিবাসিরা। শীতের রাতে আচমকাই মাথার উপর থেকে ঘরের ছাউনি চলে যাওয়ায় কিভাবে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রাত কাটাবেন, কি খাবেন, কোথায় থাকবেন এই ভেবেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। সব হারা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বস্তি উন্নয়ন সমিতির কর্মীরা। আগুন লাগার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছায় সমিতির কর্মীরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সিপিআই(এম) কর্মীরা। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন তাঁরা।

আগুন লাগার ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছান হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার প্রবীন কুমার ত্রিপাঠী। তিনি সাংবাদিকদের জানান, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের রাতে থাকার ব্যবস্থা করা হবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। আর কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সাহায্য করা যায় তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে জেলা প্রশাসন। তিনি আরও জানান আগুন লাগার কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছে হাওড়া সিটি পুলিশ। 

Comments :0

Login to leave a comment