State Election Commission

জয়ী প্রার্থীদের ভবিষ্যত আদালতের রায়ে, নির্দেশিকা জারি কমিশনের

রাজ্য

State Election Commission


লুটের ভোটে জয়ী হয়ে সবুজ আবীর মাখা তৃণমূলের নির্বাচিত পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের কাছে এখন পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে তাঁর অনিশ্চিত জয়ের চিঠি! 
জয়ের শংসাপত্র নিয়ে ঘরে ফেরা ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের নির্বাচিত সদস্যদের হাতে কোর্টের নির্দেশ ধরাচ্ছে রাজ্য প্রশাসন! আদালতের নির্দেশ সহ নির্বাচন কমিশনের চিঠির প্রতিলিপি হাতে ধরিয়ে সই করিয়ে নেওয়া শুরু হয়েছে জয়ী প্রার্থীদের কাছ থেকে। এরাজ্যের প্রশাসনের সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত আধিকারিকের কথায়, ‘‘কর্মক্ষেত্রে বহু অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। কিন্তু ভোট হয়ে যাওয়ার পর জয়ীদের কাছে চিঠি পৌঁছে জানাতে হচ্ছে, তোমার জয় অনিশ্চিত। এমন অভিজ্ঞতা বিরল।’’ 


ভোট লুট হয়েছে। কারচুপি হয়েছে গণনাকেন্দ্রে। ভোট হিংসায় একের পর এক নজির তৈরি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস তাকে মদত দিয়ে গেছে রাজ্য প্রশাসন, পুলিশ থেকে শুরু করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত। কিন্তু তারপরেও জয়ী হওয়া পঞ্চায়েত সদস্য, সমিতি ও জেলা পরিষদ সদস্যদের নির্বাচিত হওয়া অনিশ্চিত, এমন নজির এরাজ্যের পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় নেই।
সাধারণভাবে ভোটের পর নির্বাচিত দলের সদস্যরা পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করে। পাঁচ বছরের মেয়াদে ভোট হওয়ার সুবাদে এরাজ্যে আগামী আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে গড়তে হবে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের বোর্ড। তারজন্য রাজ্যের পঞ্চায়েত দপ্তর বিজ্ঞপ্তি জারি করবে। কিন্তু তার পরিবর্তে এখন জেলা প্রশাসন থেকে ব্লক প্রশাসন হয়ে পঞ্চায়েত কর্মচারীদের ব্যবহার করে ব্লক এলাকায় নির্বাচিত সদস্যদের হাতে ধরানো হচ্ছে কোর্টের আদেশের প্রতিলিপি সহ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা। নির্বাচিত সদস্যদের সেই চিঠি ধরিয়ে করিয়ে নেওয়া হচ্ছে স্বাক্ষরও। যার মোদ্দা কথা, নির্বাচিত হলেও জয়ী পঞ্চায়েতের প্রতিনিধির ভবিষ্যত এখনও অনিশ্চিত। 


কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ গত বুধবার রায় দিয়ে নির্বাচিত হয়ে যাওয়া জয়ী প্রার্থীদের ভবিষ্যতকে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ঝুলিয়ে দেন। তারপরেও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে ওইদিনই জেলাশাসকদের কাছে নির্দেশিকা পাঠিয়ে বলা হয়েছিল, গণনার পরে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে যাঁরা নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁদের কাছে কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়ের কপি পৌঁছে দিতে হবে। গত বুধবার নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে জেলাশাসকদের কাছে এই নির্দেশিকা পাঠানো হলেও তা নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে কোনো উচ্চবাচ্য ছিল না। কিন্তু এদিন সকাল থেকে জেলা প্রশাসন বিডিওদের কাছে নির্দেশ পাঠান, কমিশনের এই চিঠিকে পৌঁছে দিতে হবে নির্বাচিতদের কাছে। 
আগামী মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ফের পঞ্চায়েত মামলার শুনানি। ওই দিনই রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে হলফনামা জমা দিতে হবে। তার আগে আদালতের রায় মেনে নির্বাচিত হলেও তাঁদের জয় যে অনিশ্চিত তা নিয়ে চিঠি পৌঁছে দিতে হবে জয়ী প্রার্থীদের কাছে। প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গেছে, ভোট ও গণনার পর এদিন রাজ্যের বহু বিডিও অফিসের কর্মীদের উপস্থিতি ছিল হাতে গোনা। সোমবার কর্মচারীরা দপ্তরে আসবেন। ওই একদিনেই যা করার করতে হবে।

Comments :0

Login to leave a comment