INSAF JATRA

শুধু যুবদের নয়, সবার কথা বলছে ‘ইনসাফ যাত্রা’

রাজ্য

উৎপল মজুমদার - অনির্বাণ দে

 

একলা কোনও যুব সংগঠনের নয় ‘ইনসাফ যাত্রা’। ফসলের দাম, মজুরির দাবির লড়াইয়ের সঙ্গী এই পদযাত্রা। শ্রমজীবীর আয় কেড়ে মুনাফা করছে আদানি আম্বানিরা।
শনিবার ইনসাফ যাত্রায় এই বক্তব্যে সরব হয়েছেন ডিওয়াইএফআই নেতৃবৃন্দ। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জী বলেন, ‘‘কোচবিহারের তৃণমূল নেতাদের বন্দুকের ভয়কে উপেক্ষা করে সেখানকার মানুষ ইনসাফ যাত্রায় পা মিলিয়েছেন। চকচকা শিল্প তালুকের শ্রমিক, চা বাগানের শ্রমিক, নাগরাকাটা বানারহাটের কৃষক সহ সমস্ত বঞ্চিত মানুষ ইনসাফ যাত্রায় পা মেলাচ্ছেন।’’ 
যুব নেতৃবৃন্দ বলছেন, ‘‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানের দাবি, আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি, স্মার্ট মিটারের প্রতিবাদে চলছে ইনসাফ যাত্রা। এই লড়াই আপনার, আমার সবার।’’


গত ৩ নভেম্বর কোচবিহার থেকে শুরু হয় ডিওয়াইএফআই’র ইনসাফ যাত্রা। শুক্রবার রাতে গাজোলে এসে পৌঁছায় ইনসাফ যাত্রায় অংশগ্রহণকারী সদস্যরা। শনিবার সকালে শংকরপুর মোড় এলাকা থেকে শুরু হয় বাম যুবকর্মীদের ইনসাফ যাত্রার মিছিল। রাঙা ভিটা মোড়, কদুবাড়ি মোড়, থানা মোড়, করলা ভিটা মোড় হয়ে মিছিল শেষ হয় গাজোল বাসস্ট্যান্ডে। মিছিলে ছিলেন ডিওয়াইএফআই’য়ের সর্বভারতীয় সম্পাদক হিমগ্নরাজ ভট্টাচার্য, রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জী, রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা, প্রাক্তন যুবনেতা শতরূপ ঘোষ, জেলা সম্পাদক অরূপ পোদ্দার সহ বহু বাম নেতৃত্ব।
এদিন গাজোল বাসস্ট্যান্ডে পথসভায় ছিলেন প্রচুর মানুষ। মীনাক্ষী বলেন, ‘‘বিজেপি তৃণমূলের এমপি’রা নিজেদের বখরা নিতে লোকসভায় যায়। কিন্তু লাল ঝান্ডার এমপি’রা লোকসভায় দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষের জন্য কথা বলে। বাম সাংসদদের দাবির জেরে দেশে শুরু হয়েছিল ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প। আর বিজেপি সরকার এই প্রকল্পকে বন্ধ করে দিতে চাইছে। রাজ্যের তৃণমূল সরকার ১০০ দিনের কাজের হিসাব না দিয়ে গরিবের মজুরি আটকে দিয়েছে। প্রকল্প বন্ধ করে দিতে মরিয়া মোদী সরকারকে সুযোগ দিয়েছে। তাই এই দুই সরকারকেই পাল্টাতে হবে।’’ 


ওল্ড মালদহ শহর থেকে সভা শেষে ইনসাফ যাত্রা শুরু করে। মহানন্দা সেতু পেড়িয়ে তা মালদহ শহরে প্রবেশ করে। এরপর তা সুকান্ত মোড় হয়েৎ বাঁশবাড়ী ফুলবাড়ী, নেতাজী মোড়, ফোয়ারা মোড়, এল আই সি মোড়, থানা, ষ্টেট বাস ষ্ট্যান্ড, রাজ হোটেল মোড়, হয়ে রবীন্দ্র মূর্তির সামনে দিয়ে রথবাড়ীতে এসে জনসভায় যোগ দেয়। পথের দুধারে বিভিন্ন গণসংগঠনের সদস্যরা অংশগ্রহণকারীদের ফুল ছিটিয়ে সংবর্ধনা জানায়। রথবাড়ীতে এসে উপস্থিত হলে সংবর্ধনা জানায় পরিবহন কর্মীরা। সভা শেষে ইনসাফ যাত্রা কালিয়াচকের দিকে রওনা দেয়।


শনিবার সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদের ফারাক্কায় ইনসাফ যাত্রাকে বরণ করেন ফারাক্কার মানুষ। তিলডাঙ্গায় সভায় শামিল হয়েছিলেন খেতমজুর থেকে ফারাক্কা ব্যারেজ প্রোজেক্টের ঠিকা শ্রমিকরা। এসেছিলেন কাজ হারানো নদীর মাঝি থেকে ভাঙনে ভিটে হারানো মানুষ। 
সভায় মীনাক্ষী বলেন, ‘‘রাজ্য জুড়ে সারের কালোবাজারি চলছে। সরকারের মদতেই চলেছে কালোবাজারি। কৃষকদের পাশে নেই সরকার। প্রতিদিন ভিনরাজ্যে প্রাণ হারাচ্ছে জেলার পরিযায়ী শ্রমিকরা।’’ তিনি প্রশ্ন করেন, ‘‘যখন ভাঙনে মানুষের ঘর নদীর গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে তখন কোথায় ছিল সরকার ? কোথায় ছিল তৃণমূলের বিধায়করা?’’ 
তিলডাঙ্গায় ফেরারি মোড়ে সমাবেশে মীনাক্ষী মুখার্জি ছাড়াও বক্তব্য রাখেন ডিওয়াইএফআই’এর মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক সন্দীপন দাস, জেলা সভাপতি সৈয়দ নুরুল হাসান, গণআন্দোলনের নেতা দিলীপ মিশ্র, ডিওয়াইএফআই নেতা হিমাংশু শেখর সাহা, মহম্মদ ফিরোজ জাহাঙ্গীর।

Comments :0

Login to leave a comment