উত্তরবঙ্গের বিপর্যস্ত মানুষের জন্য ত্রাণ সংগ্রহ হয়েছে ধর্মতলায়। বৃহস্পতিবার সিপিআই(এম) কলকাতা জেলা কমিটির উদ্যোগে ত্রাণ সংগ্রহে ছিলেন প্রবীণ সিপিআই(এম) নেতা এবং বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু।
সংবাদমাধ্যমে বিমান বসু বলেন, ‘‘ক্ষয়ক্ষতি ভয়ঙ্কর। ১৯৬৮ সালে জলপাইগুড়িতে অনেক মানুষ মারা গিয়েছিলেন। তখনও কলকাতায় ত্রাণ সংগ্রহে নেমেছি। এবার সবচেয়ে বেশি ক্ষতি মিরিক আর নাগরাকাটায়।
পাহাড়ি এলাকায় ধস ভয়ঙ্কর।’’
হিমালয়ের শিলাস্তর গঠনের পর্বেই রয়েছে। তা ব্যাখ্যা করে বিমান বসু বলেন, ‘‘ অপরিকল্পিত কাঠামো বাড়ি, রিসর্ট, হোম-স্টে করে ক্ষতি হয়েছে প্রচণ্ড। ক্ষয়ক্ষতি প্রচুর। ৩২ জনের দেহ মিলেছে। এই বিপর্যয়ে দক্ষিণবঙ্গ এবং বিশেষ করে কলকাতা মহানগরীকে পাশে দাঁড়াতেই হবে।
শীত এবার বেশি হবে। পূর্বাভাস রয়েছে। বৃষ্টির পূর্বাভাসও ছিল। সেই মতো প্রস্তুতি নিলে ক্ষয়ক্ষতি কমানো যেত।’’
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, কমবয়সী বামপন্থী কর্মীরা প্রথম দিন থেকে ত্রাণ এবং উদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ছাত্র-যুবরা পড়ে রয়েছে। একদল যাচ্ছে, ফিরে আসছে, আরেকদল যাচ্ছে।
সিপিআই(এম) কলকাতা জেলা কমিটির উদ্যোগে এদিন ত্রাণ সংগ্রহ হয়েছে। পরিস্থিতি জানিয়ে সিপিআই(এম) বলেছে যে প্লাবিত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম, জনপদ। ভেসে গেছে ঘরদুয়ার, গাছ, গবাদি পশু, ভেসে গেছে হাজার হাজার সংসার। মারা গিয়েছেন বহু মানুষ। ধান্দাবাজি, লুট আর মুনাফার লাগামছাড়া লোভে প্রকৃতি-পরিবেশকে নষ্ট করার ফলে আামাদের দেশ সহ গোটা দুনিয়া জুড়েই মাথাচাড়া দিয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ। এর উপরে 'উন্নয়ন'-এর নামে নির্মমভাবে একের পর এক বিস্ফোরণে পাহাড়কে ভেঙেচুরে ফেলা হচ্ছে। নদীতে ইচ্ছেমতো বাঁধ দেওয়া আর 'ট্যুরিজম'-এর নামে যত্রতত্র চলছে অপরিকল্পিত নির্মাণ। চলছে নদী, নদীর খাত, জঙ্গল গিলে খাওয়া। চলছে ছোট বড়ো নালা, জলাশয়, জলপ্রবাহ বুজিয়ে দেওয়া। তার উপরে আছে আবার বালি চুরি, পাথর চুরি থেকে বনভূমি সাফ করে কাঠ পাচার।
সিপিআই(এম)’র দাবি, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পরিকাঠামোর ঘাটতি কাটিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সহ অন্যান্য স্থানীয় হাসপাতালে আহত মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। মৃতদের পরিবারকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সব ঘর হারানো মানুষের জন্য অবিলম্বে ঘরের ব্যবস্থা করতে হবে। রাস্তা, সেতু, কালভার্ট দ্রুত সারাতে হবে, তোলাবাজি-কাটমানি সংস্কৃতি চলবে না।
সিপিআই(এম)’র দাবি, বেআইনি নির্মাণ, জলাশয় বোজানো, নদীখাত থেকে বালি পাথর তোলা, এবং জঙ্গল ধ্বংস বন্ধ করতে হবে। পরিবেশ রক্ষার্থে কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে, এ'জন্য রাজ্য সরকারকে অবিলম্বে সর্বদলীয় সভা ডাকতে হবে।
Comments :0