SILIGURI SFI RALLY

ছাত্র সংসদ নির্বাচন সহ একাধিক দাবিতে
এসএফআই’য়ের মিছিল শিলিগুড়িতে

রাজ্য

SILIGURI SFI RALLY

রাজ্য জুড়ে যদি তৃণমূল কংগ্রেস উন্নয়নের জোয়ার এনে থাকে তাহলে রাজ্যের কলেজগুলোতে কোন ভয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ রেখেছে সরকার ? পুলিশ প্রশাসন লেলিয়ে দিয়ে ভয় দেখিয়ে গোটা রাজ্যের মানুষকে বেশীদিন চুপ করিয়ে রাখা যাবে না। সাগর থেকে পাহাড় পর্যন্ত রাজ্যবাসী তথা রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের অধিকার বুঝে নিতে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। শিলিগুড়িতে ছাত্র মিছিল ও সভা থেকে এই হুঁশিয়ারি দিলেন ছাত্র নেতৃবৃন্দ। 


অবিলম্বে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা সহ একাধিক দাবিতে শিলিগুড়িতে ছাত্রদের মিছিল ও সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের  জমি অবৈধভাবে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, রাজ্য জুড়ে নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া এবং সকলের জন্য শিক্ষা ও সকল যোগ্য বেকারের চাকরির দাবি জানানো হয়েছে এদিনের ছাত্র মিছিল ও সভা থেকে। এসএফআই দার্জিলিঙ জেলা কমিটির পক্ষ থেকে বুধবার দুপুরে এয়ারভিউ মোড় লাগোয়া মহানন্দা সেতুর নীচে লালমোহন মৌলিক ঘাট থেকে মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি হিলকার্ট রোড ধরে এগিয়ে যায়। হাসমিচকে মিছিলের সমাপ্তি হয়। 


মিছিল শেষে অনুষ্ঠিত সভায় এসএফআই রাজ্য সভাপতি প্রতিকূর রহমান পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, রাস্তা সবার। তৃণমূলের একার নয়। তাই এই রাস্তায় দাঁড়িয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করার অধিকার সকলের রয়েছে। প্রশাসনের কাজ সাধারন মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া। সেই কাজ না করে একেবারে তৃণমূলের দলদাস হয়ে কাজ করছে প্রশাসন। রাজ্যবাসীর কাছে লজ্জাজনক। একটা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড়িয়ে রয়েছি আমরা। ছাত্রদের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। আমাদের লড়াই মানে শুরু এসএফআই—র নয়, লড়াইটা বাংলার মাটিতে শিক্ষা ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখার লড়াই। প্রতিদিন বাংলার মাটিতে চাকরি চুরি, দুর্নীতি, স্বজনপোষন হয়েছে তা প্রত্যেকেরই জানা। তৃণমূলের নেতারা চাকরি চুরির সাথে যুক্ত। রাজ্যের গোটা শিক্ষা সেল দুর্নীতির দায়ে জেলে। সমস্ত বাধা প্রতিহত করে পশ্চিমবঙ্গের দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূল সরকার ও কেন্দ্রের সাম্প্রদায়িক বিজেপি—র বিরুদ্ধে আগামীদিনে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। 


রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, রাজ্যের ছাত্র ভোট গত পাঁচ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। চোর, গুন্ডা, লম্পন, অপদার্থদের হাতে ছাত্র ইউনিয়নগুলি দখল হয়ে রয়েছে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতিগ্রস্ত উপাচার্য দুর্নীতির দায়ে জেলে রয়েছে। দুর্নীতিগ্রস্ত সেই উপাচার্যের সময়ে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা বিস্তীর্ন অংশের জমি বেসরকারি হাতে তুলে দেবার চক্রান্ত কার্যকরী করার চেষ্টা চালাচ্ছে বর্তমান উপাচার্য। পড়াশুনার জমি অন্য কোন কাজে কোনভাবেই ব্যবহার করা চলবে না। অঙ্কিতা অধিকারীরা চারিদিকে হাজারে হাজারে ছড়িয়ে রয়েছে। দুর্নীতি করে চাকরি পাওয়া সকলের চাকরি বাতিল করে যোগ্য প্রার্থীদের চাকরি দিতে হবে। তৃণমূলের ছত্রছায়ায় থাকা সমস্ত চোরদের ধরে জেলে পুড়তে হবে। উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। শিলিগুড়ি শহরের উন্নয়ন যা কিছু বিগত বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে হয়েছে। বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি সময়ে শিলিগুড়ি শহরবাসীর জন্য কোন বাড়তি সুবিধা এনে দিয়েছে। ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা, চাকরিতে নিয়োগ সবক্ষেত্রেই দুর্নীতি প্রশ্রয় পেয়েছে। ছাত্ররা যাতে প্রশ্ন করতে না পারে তার জন্য গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাকেই ভেঙে দেবার চক্রান্ত করা হচ্ছে। একই কারনে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হচ্ছে না। ডিএ না পেয়ে তৃণমূলের শিক্ষা সেলের দার্জিলিঙ জেলার শিক্ষক নেতারা পদত্যাগ করছে এমনও খবর রয়েছে। আগামীদিনে তৃণমূল সাফ হয়ে যাবে। বামপন্থীদের উত্থান শুরু হয়েছে। 


সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী বলেন, গোটা দেশ ও পশ্চিমবাংলা জুড়ে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের রাজত্বের দরুন সবচাইতে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ছাত্ররা। দুই সরকারের নীতি একই। গরীব মধ্যবিত্ত ছাত্র পরিবারের রোজগারের ওপর আক্রমন নামিয়ে এনেছে দুই সরকার। কোথাও কাজ নেই। চাকরির নিয়োগে সর্বত্র দুর্নীতি চলছে। নয়াজাতীয় শিক্ষানীতির নামে অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে। তৃণমূল কংগ্রেস গোটা রাজ্যের কলেজগুলিতে গণতন্ত্র নামক শব্দটি মুছে ফেলেছে। দলতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের মেজাজ টের পেয়েই ওরা কলেজগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার সাহস পাচ্ছে না। 


সংগঠনের দার্জিলিঙ জেলা সম্পাদক অঙ্কিত দে বলেন, শিলিগুড়ির বিভিন্ন কলেজগুলোতে অনার্স ও পাসের নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা ছাত্রদের কাছ থেকে তুলে তাদের ভর্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই কাজ মেনে নেওয়া হবে না। দখলদারির বিরুদ্ধে জেলার কলেজগুলিতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। এদিনের সভায় সভাপতিত্ব করেন ছাত্র নেতা লক্ষ্মন সাহানি। মিছিলে ও সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফরিদা করিম চৌধুরী, তন্ময় অধিকারি, সুরজ কুন্ডু প্রমুখ।
 

Comments :0

Login to leave a comment