গল্প / নতুনপাতা
মায়ের আত্মত্যাগ
শ্রীজা মুখার্জী
মোহন নামে একটি ছেলে ছিল যে তার মাকে সবথেকে বেশী ভালবাসতো । তার বাবা এক দুরারোগ্য রোগে মারা যায় । তারা ভালই ছিল । কিন্তু একদিন কয়েকজন লোক তাদের বাড়ীতে এসে তার মা-কে জানালো যে মোহনের বাবা মারা যাওয়ার আগে তাদের কাছ থেকে অনেক টাকা ধার নিয়েছিল যা সে শোধ দেয়নি । সেই টাকাটা এখন তাদের প্রয়োজন তাই তারা। সেই টাকা ফেরৎ নিতে এসেছে। মোহনের মা এই ঝামেলার মধ্যে মোহনকে রাখতে চায়নি । তাই সে তার ২০ বছর হতে না হতেই তাকে পড়তে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছিল। মোহনও বৃদ্ধা মাকে ছেড়ে বিদেশে চলে গেল । মোহনের মা তার সবকিছু বিক্রী করে ধার শোধ করলো। ছ বছর পেরিয়ে গেল । তার ছেলে এখন বিয়ে করে একজন পুত্র সন্তান নিয়ে বিদেশের এক বিরাট বড় বাংলোতে বাস করছে। সে ভুলেও গেছে যে তার মা বেঁচে আছে । একদিন তাদের বাংলোর দরজার সামনে এসে কে যেন ধাক্কা দিচ্ছিল । ছেলেটির স্ত্রী বেরিয়ে এলেন, তিনি দেখলেন একজন বৃদ্ধা মহিলা দাঁড়িয়ে আছেন । তিনি তার কাছে গিয়ে বললেন, 'কে আপনি, আর এখানে দাঁড়িয়ে আছেন কেন? বৃদ্ধা মহিলা বললেন, 'এই বাড়ীর মালিকের সঙ্গে দেখা করবো, ও আমার ছেলে'। তার ছেলের স্ত্রী ছুটে তার স্বামীকে বলতে গেল, “দেখ, দেখ, তোমার মা এসেছেন'।
ছেলেটি বলল, ‘মা আবার এখানে কি করে এল, ঠিক আছে, আমি যাচ্ছি । তারপর সে তার মা-র কাছে গেল । সে কিছু বলার আগেই তার মা বলল, তুই জানিস আমি কেন তোকে দূরে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম ? কারণ তোর বাবা অনেক টাকা ধার করেছিলেন । বাবার বন্ধুরা টাকাটা ফেরৎ চাইতে এসেছিল । এই ঝামেলার মধ্যে আমি তোকে রাখতে চায়নি বলে দূরে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। । তার ছেলে শুনে বলল, ঠিক আছে, তুমি দু দিন থেকেই যাও । এই বলে ছেলেটি তার মা-কে একটা গুদাম ঘরে নিয়ে গেল। সে বলল, তুমি এখানেই থাক । তার মা অবাক হলেও ঘাড় নেড়ে সেখানেই শুয়ে পড়ল কিন্তু তারা জানতো না যে তাদের ছেলে সবটা শুনছিল। সে বাবার কাছে গিয়ে বললো যেন তার ঠাম্মা তাদের সঙ্গেই খেতে বসতে পারে। তারা যখন সবাই খেতে বসেছিল। তখন তাদের ছেলেটি ঠাম্মাকে বলল 'দেখ কিন্তু ঠাম্মা, গুদাম ঘরটা যেন নোংরা করে দিও না, ওখানে তো মা বাবাকেও থাকতে হবে । তার মা বলল, 'কেন আমাদেরও ওখানে কেন থাকতে হবে? তার ছেলে বলল, 'মা, আমি যখন বিয়ে করে আসবো, তখন তো তোমাদের ওখানেই থাকতে হবে তার মা বাবা নিজেদের ভুল বুঝতে পারলো । এবং পুরো পরিবার একসঙ্গে ভালভাবে থাকতে লাগলো।
নতুনবন্ধু
শ্রীজা মুখার্জী, সপ্তম শ্রেণী, ডি.এ.ভি. পাবলিক স্কুল
৯৮৩১৫ ৭১২৭২
Comments :0