MASIDUR RAHMAN DENIED

মর্মান্তিক! প্রশাসনের প্যাঁচে প্রার্থী হওয়া হলো না অদম্য মাসিদুরের

রাজ্য জেলা

MASIDUR RAHMAN DENIED

উৎপল মজুমদার

টানা পাঁচদিন ঘোরার পর মিলল জাতগত শংসাপত্র। কিন্তু  পেতে পেতে শনিবার বিকেল গড়িয়ে গেল। সময় পেরিয়ে যাওয়ার যুক্তিতে প্রশাসনই স্ক্রুটিনি পর্বে তা আবার জমা নিল না। অন্তত, শনিবার রাত পর্যন্ত, যা পরিস্থিতি তাতে পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী হওয়া হলো না বিশেষভাবে সক্ষম মহম্মদ মাসিদুর রহমানের। 

সিপিআই(এম)’র হয়ে প্রার্থীপদ জমা দিয়েছিলেন মাসিদুর। কেবল সিপিআই(এম) কর্মী সমর্থকরাই নন, বন্ধু বান্ধবরাও বলছেন প্রশাসনের এই ভূমিকা মর্মান্তিক।   

মাসিদুরকে চলতে হয় হামাগুড়ি দিয়ে। দুই পা অসাড়। প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করেই মাথা উঁচু করে বেঁচে রয়েছেন। পঞ্চায়েতে প্রার্থীও হয়েছেন। মালদহের কালিয়াচক-১ ব্লকের সুজাপুর বিধানসভা কেন্দ্রের গয়েশবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে সিপিআই(এম)র প্রার্থী তিনি। 

১২ জুন অন্য অনগ্রসর অংশের শংসাপত্র চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। আর তা মিলল শনিবার, ১৭ জুন, স্ক্রুটিনির দিনে। তা—ও মিলল বেলা চারটের পর। এর মধ্যে বিশেষভাবে সক্ষম মাসিদুর বার পাঁচেক ঘুরেছেন মালদহ এসডিও দপ্তরের দরজায় দরজায়। শুক্রবারই তাঁকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে ‘গণশক্তি’।  

অভিযোগ, কালিয়াচক-১ ব্লকের বিডিও সময় পেরিয়ে যাওয়ার কারণ দেখিয়ে শংসাপত্র জমা না নিলেও গাজোলে তা হয়েছে। অনেকে সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর গাজোলের বিডিও দপ্তরে নথি জমা করতে পেরেছেন। স্থানীয় সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ বলছেন, যে মাসিদুরকে সবার আগে ব্যবস্থা করার কথা ছিল তাঁকেই এসডিও দপ্তর ঠেলে দিয়েছে পিছনে। 

মাসিদুর নিজেও বলেছেন, ‘‘আমার পরে আবেদন করে অনেকে নথি পেয়ে গিয়েছে। অথচ আমাকে ঘোরানো হলো।’’ প্রার্থীপদে মনোনয়ন স্বীকৃতির জন্য এবার মামলার পথে হাঁটতেও রাজি গৃহশিক্ষকতার পেশায় যুক্ত এই যুবক। 

সিপিআই(এম)’র কর্মী সমর্থকরা বলছেন যে রাজনৈতিক পক্ষপাতের মনোভাব থেকেই ফিরিয়ে দেওয়া হলো মাসিদুর রহমানকে। প্রশাসনের প্রতি স্তরে এই মনোভাব দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। নিজের গ্রাম গয়েশবাড়ির বুথে জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী মাসিদুর। এলাকার মানুষও জানেন ওর সম্ভাবনা যথেষ্ট। একজন বিশেষভাবে সক্ষম যুবক প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়ে এমন জায়গায় পৌঁছেছে। অথচ তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হলো। 

মাসিদুর প্রত্যাখ্যানে ক্ষুব্ধ বহু বাসিন্দাই বলছেন, অন্য অনগ্রসর অংশ বা ওবিসি’র যে পরিচয় মাসিদুর দিয়েছেন তা বৈধ। কারণ প্রশাসনই তা স্বীকার করে শংসাপত্র দিয়েছে। অথচ কাজটা সময়ে করা হলো না। ন্যূনতম সহমর্মিতা দেখানো হলো না। যে আধিকারিকরা এমন অমানবিক আচরণ করলেন তাঁরা সমাজে সম্মান পাবেন কি?

Comments :0

Login to leave a comment