TMC Threat

প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে গায়ের জোরে বাম প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার

রাজ্য জেলা

TMC Threat

দীপশুভ্র সান্যাল



রাজ্যজুড়ে তৃণমূলী দুষ্কৃতীবাহিনীর লাগাতর হুমকি -হামলা, বাড়ি ভাঙচুর, মারধর করেও বামপন্থী প্রার্থীদের টলাতে পারে নি। পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর থেকে বামপন্থী প্রার্থীদের নাম প্রত্যাহার করাতে তৃণমূলীরা নানাভাবে সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে। মনোনয়ন জমাতে বাধা দেওয়া, হিংসা ও জোর করে মনোনয়ন প্রত্যাহারের দাবিতে সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে শাসকদলের দুষ্কৃতীরা। তাদের মদত দিচ্ছে পুলিশ। পুলিশ অপরাধীদের গ্রেপ্তার না করে আক্রান্তদের গ্রেপ্তার করেছে। মঙ্গলবার দাসপুর থানার পুলিশ জোর করে সিপিআই(এম)’র মহিলা প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে তুলে নিয়ে যায় এমনটাও দেখা গেছে। কিন্তু বামপন্থী প্রার্থীদের অনড় মনোভাব এবং পার্টি নেতা কর্মী সহ গ্রামবাসীদের ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের কাছে তৃণমূলীরা পিছু হাটতে বাধ্য হচ্ছে। গত দুদিন ধরে বাড়ি বাড়ি অত্যাচার চালিয়ে সমস্ত প্রশাসনিক শক্তি ব্যয় করে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪ জন সিপিআই(এম) প্রার্থীকে গায়ের জোরে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করাল তৃণমূলের দুষ্কৃতীবাহিনী। 


সোমবার রাতে পাহাড়পুরের সারদাপল্লী ২১৯ নম্বর বুথের সিপিআই(এম) প্রার্থীর বাড়িতে হামলা চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলবার সকালে আক্রান্ত প্রার্থীর বাড়িতে গিয়ে তাদের সঙ্গে নিয়ে থানায় এফআইআর করেন পার্টি নেতৃবৃন্দ। ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ জিতেন দাস, সদর পশ্চিম এরিয়া কমিটির সদস্য শুভাশিস সরকার, সদর পূর্ব এরিয়া কমিটির সদস্য নীলাঞ্জন নিয়োগী, দীপশুভ্র সান্যাল সহ অন্যান্য পার্টির নেতৃবৃন্দ। 
বাম প্রার্থী পায়েল রাজবংশীর মা জানিয়েছেন, ‘‘রাতভর বাড়িতে অত্যাচার চালায় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। ছোট পানের দোকানে রাতে আশ্রয় নেয়। সেখান থেকে লাঠি বল্লম দিয়ে মারধর করে। দুষ্কৃতীরা মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে বলে গেছে পায়েল নমিনেশন না তুললে তাদের এলাকা ছাড়া করা হবে’’। 


গত কয়েকদিন ধরেই তার মেয়ে পায়েল প্রার্থী হওয়ায় পরিবারের উপর আক্রমণ নামিয়ে আনছিল তৃণমূল। পায়েলের স্বামী গৌরী হাটে ছোট মাছ ব্যবসায়ী হাটে তাদের বসতে দেওয়া হয়নি নমিনেশন না তুলে নিলে এলাকা ছাড়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের তরফে।
এই ঘটনার পরিপেক্ষিতে প্রাক্তন সংসদ জিতেন দাস বলেন, ‘‘আসলে তৃণমূল ভয় পেয়েছে। পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন বুথে তারা এভাবে প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের জন্য অত্যাচার চালাচ্ছে। এই বুথে তৃণমূল আর সিপিআই(এম)এর প্রার্থী। তৃণমূলের প্রার্থীর ওপর এলাকার মানুষের বিরাট ক্ষোভ রয়েছে।  আমাদের প্রার্থীর পেছনে গোটা সারদা পল্লী টিবি হাসপাতাল পাড়ার মানুষের সমর্থন রয়েছে। তাই হেরে যাওয়ার ভয়ে তৃণমূল এই ধরনের সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে। আমরা সর্বতোভাবে প্রার্থীর পরিবারের পাশে আছি। মাঝরাত থেকেই যোগাযোগ করে পুলিশ প্রশাসনের কাছে সমস্ত বিষয়টা জানিয়েছি। আমরা এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। তিনি বলেন, আক্রমণ করে সিপিআই(এম)কে রাখা যায়নি। সন্ত্রাসের কালো দিন পেরিয়েই আমরা এগিয়েছি মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছে’’। 


এদিন এফআইআর কপি জমা দেওয়ার সময় গণশক্তির সংবাদদাতা ভিডিও করতে গেলে থানার ভেতর ভিডিও করার পারমিশন নেই বলে কোতোয়ালি থানার ডিউটি অফিসার উত্তেজিত হয়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। আপনাকে এরেস্ট করা হলো, আপনি মোবাইল দিয়ে দিন বলে তাকে ডিউটি অফিসার রুমে বসিয়ে রাখে। তবে কিছুক্ষণ পরে ডিএসপি হেডকোয়ার্টার সমীর পালের সঙ্গে কথা বলে পার্সোনাল বন্ডে জামিন নিয়ে তাকে মুক্ত করেন সিপিআই(এম) নেতা নীলাঞ্জন নিয়োগী। 

Comments :0

Login to leave a comment