Yogi Gyanvapi Polarisation

বিদ্বেষ, মেরুকরণই একমাত্র ভরসা, বোঝাচ্ছেন আদিত্যনাথ

জাতীয়

আদালতকে প্রভাবিত করতে চাইছেন যোগী আদিত্যনাথ। সেই সঙ্গে বুঝিয়ে দিচ্ছেন বিদ্বেষ ছড়িয়ে লোকসভা ভোট লড়বে বিজেপি।

বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ প্রসঙ্গে যোগীর মন্তব্যকে এভাবেই ব্যাখ্যা করছে বিভিন্ন অংশ। একটি সংবাদসংস্থার সাক্ষাৎকারে সোমবার যোগী বলেছেন, ‘‘জ্ঞানবাপীকে মসজিদ বলাই সমস্যার। ভেতরে ত্রিশূল কেন, আমরা তো রেখে আসিনি। কেন জ্যোতির্লিঙ্গ। দেওয়াল থেকে চিৎকার ভেসে আসছে।’’

৩ আগস্ট পর্যন্ত এলাহাবাদ হাইকোর্ট রায় ঘোষণার স্থগিত রেখেছে জ্ঞানবাপী নিয়ে দায়ের মামলাতেই। বারাণসীর আদালত জ্ঞানবাপীতে ‘বিজ্ঞানসম্মত সমীক্ষার’-র নির্দেশ দিয়েছেন পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বা এএসআই’কে। তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যায় মসজিদ কমিটি। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে এলাহাবাদ হাইকোর্টে যায় মামলা। গত শুক্রবার রায় ঘোষণা স্থগিত রাখে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। ৩ আগস্টের আগে সমীক্ষায় স্থগিতাদেশও রয়েছে। তার মধ্যেই, সোমবার, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্য।

যোগী আরও বলেছেন, ‘‘মুসলিমদের উচিত ভুল শুধরে নেওয়া।’’

জ্ঞানবাপী মসজিদ কাশী বিশ্বনাথ মন্দির লাগোয়া। অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলার পর উগ্র হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক অংশগুলি স্লোগান তুলেছিল যে অযোধ্যা শুরু। এরপর কাশী, মথুরায় হবে। অনেকেই সেই স্লোগান মনে করাচ্ছেন। এই অংশের মত, লোকসভা ভোটে বিজেপি যে ধর্মীয় মেরুকরণ তীব্র করেই প্রচার চালাবে, তা-ও নিশ্চিত করেছেন যোগী।

রবিবারই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছিলেন সমাজবাদী পার্টির অন্যতম নেতা স্বামীপ্রসাদ মৌর্য। তাঁর বক্তব্য, কেদারনাথ বা বদ্রিনাথ কেবল নয় দক্ষিণে কেরালায় সবরিমালা মন্দির এমনকি পুরীর জগন্নাথ মন্দির তৈরি হয়েছিল বৌদ্ধ স্তূপ ভেঙে। তিনি যদিও বলেছিলেন যে সমাজবাদী পার্টি বা তিনি নিজে এমন কোনও খোঁড়াখুঁড়ি চান না। তবে সব মসজিদ ভেঙে মন্দির তৈরির দাবি উঠলে মন্দিরে মন্দিরে সমীক্ষার দাবি ওঠাও সঙ্গত।

অনেকেই মনে করাচ্ছেন যে বাবরি মসজিদ-রাম মন্দির মামলায় হাজার খোঁড়াখুঁড়ি করেও কোনও নির্দিষ্ট বিজ্ঞানসম্মত প্রমাণ মেলেনি যা থেকে প্রমাণ করা যায় যে মন্দির ভেঙে মসজিদ হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট রামমন্দিরের পক্ষে রায় দিলেও এমন কোনও তথ্যের উল্লেখ করেনি। বরং ধর্মীয় সংখ্যাগরিষ্ঠের ভাবাবেগকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল। এখানেও এমন ভাবাবেগ তৈরি করতে নেমেছেন যোগী নিজে।

বিভিন্ন অংশই মনে করছেন, মন্দির ভেঙে মসজিদের আখ্যান কয়েকশো বছর পুরনো। আজ এই বিবাদ খুঁড়ে তোলা হচ্ছে কোনও ধর্মের জন্য নয়, হচ্ছে ধর্মীয় ভাবাবেগে ভর করে রাজনৈতিক সুবিধা পাওয়ার জন্য। বিদ্বেষের রাজনীতিতে দেশ ধস্ত হলেও বিজেপি-আরএসএস সেই পথেই চলবে। কারণ গরিব সাধারণ বেকারি, মূল্যবৃদ্ধি, রোজগারের সঙ্কট বাড়ছে কেন্দ্রে তাদের সরকারের নীতিতেই।  

Comments :0

Login to leave a comment