DYFI INSAAF YATRA

তাঁতশিল্পকে বাঁচানোর দাবি উঠল ইনসাফ যাত্রায়

রাজ্য

আলেক শেখ - কালনা

শুক্রবার সকালে ইনসাফ যাত্রার শুরুতেই জনজোয়ার দেখা যায় কালনা মহকুমার পূর্বস্থলী ১ ব্লকে। ইনসাফ যাত্রার ৪৩ দিনে নসরতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোয়ালপাড়া থেকে শুক্রবার শুরু হয়। এসটিকেকে সড়ক ধরে এই যাত্রা ৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে সমুদ্রগড়ের নিমতলায় পৌঁছায়। মধ্যাহ্ন ভোজের পর আবার যাত্রা শুরু হয়ে ২ কিমি পথ অতিক্রম করে হেমাতপুর মোড়ে পৌঁছায়। সেখানে জনসভায় বক্তব্য রাখেন যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জি, ধ্রুবজ্যোতি সাহা, বীরেশ্বর নন্দী, অয়ণাংশু সরকার প্রমুখ।  সভা পরিচালনা করেন অমিত মন্ডল।


 

ইনসাফ যাত্রাকে সড়কের মোড়ে মোড়ে থামিয়ে পুষ্পস্তবক দিয়ে অভ্যর্থনে জানান এলাকার মহিলারা। কালনা মহকুমার তাঁতশিল্প নিবিড় এলাকাগুলি হল কালনা শহর, কাদিপাড়া, নশরতপুর, সমুদ্রগর, মাজিদা, শ্রীরামপুর প্রভৃতি। এখানে সাধারণত ঢাকাই জামদানি শাড়ি বেশি উৎপাদিত হতো। আর এই শাড়ি বেশির ভাগই বুনতেন উত্তরবঙ্গ থেকে আসা পরিযায়ী তাঁত শ্রমিকরা। কিন্তু প্রথম লকডাউনে তাঁরা বাড়ি ফিরে যাওয়ার পর আর এদিকে কেউ পা বাড়াননি। অন্যদিকে জীবন জীবিকার টানে এখানকার তাঁত মালিকরা নিজেরাই শ্রমিক হয়ে গিয়ে তাঁতে বসে যান। কিন্তু কাপড় হাটগুলোতে তাঁত কাপড়ের খরিদ্দার না থাকায় ১২শো টাকা মূল্যের কাপড়ের দাম নেমে আসে মাত্র সাড়ে চারশো টাকায়। ফলে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হন তাঁত শিল্পীরা। আগে যে শাড়ি বুনে মজুরি মিলতো ৫০০ টাকা এখন মজুরি মেলে মাত্র দেড়শ টাকা। তাও আবার সবসময় কাজ পাওয়া যায় না। ফলে এই এলাকার সরস্বতী বসাক, নিমাই বসাক, সমিরন বসাক, দয়াল বসাকের মত মানুষরা সেই ক্ষতি সমাল না দিতে পেরে আত্মঘাতী হন। এদিন মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, এখানকার দয়াল বসাকদের রাজ্য ও কেন্দ্র দুই সরকারই দেখছে না। তাই তাঁত শিল্পীদের আত্মঘাতী হওয়ার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এঁরা শিক্ষিত বেকার যুবকদের মতোই ইনসাফ পাচ্ছে না। কালনা মহাকুমা কৃষি নিবিড় মহকুমাও বটে। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের দাম পাচ্ছেন না বলেই সারা রাজ্যের সাথে এখানেও কৃষকের আত্মহত্যা দিন দিন বাড়ছে। তিনি আরো বলেন এই এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ এদের জন্য কিছুই করছেন না। তাই আত্মহত্যার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কৃষক বা তাঁতশিল্পী যিনিই আত্মহত্যা করুন না কেন, সরকারিভাবে বলে দেওয়া হচ্ছে পারিবারিক কলহের জেরেই এরা আত্মঘাতী হয়েছেন। এই বেইনসাফী কথার বিরুদ্ধেই আমাদের এই ইনসাফ যাত্রা। আর এই ইনসাফ যাত্রায় দেখা গেল পুলিশ টিয়ার গ্যাস, বন্দুক, লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দেখে মনে হচ্ছে পুলিশ কোন সন্ত্রাসবাদ অভিযান চালাচ্ছে। বেকারদের কাজের দাবিতে এই সামান্য ইনসাফ যাত্রাও ওদের সহ্য হচ্ছে না। যত ভয় দেখাক না কেন এই ইনসাফ যাত্রা চলবে। যাত্রার শেষে ৭ জানুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশও অনুষ্ঠিত হবে। এদিন এই ইনসাফ যাত্রায় পা মেলান, মহিলা নেত্রী অঞ্জু কর, সাখাওয়াত হোসেন, সূকুল শিকদার, আলিম শেখ, তাপস চ্যাটার্জি, সাহাদুল খান প্রমুখ।

Comments :0

Login to leave a comment