MODI HATAO

মোদ্দা কথা বিজেপি হটাও

সম্পাদকীয় বিভাগ

Modi crony capital adani bjp rss bengali news

নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন আরএসএস-বিজেপি’র সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বিরোধী দলগুলির সলতে পাকানোর কাজ শুরু হয়ে গেছে। গত বেশ কয়েক মাস ধরে একাধিক বিরোধী নেতা পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে বিরোধী দলগুলির মধ্যে সমন্বয়ের চেষ্টা করছিলেন। নানা উপলক্ষে একাধিক দলের নেতারা এক জায়গায় উপস্থিত হলে সেখানেও প্রাথমিক কিছু কথাবার্তা হয়েছে। 

অতপর সব বিরোধী দলগুলির মধ্যে যোগাযোগ করে এবং তাদের সঙ্গে মত বিনিময় করে একজায়গায় মিলিত হবার উদ্যোগ নেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব। দু’জনে বেশ কিছুদিন ধরে রাজ্যে রাজ্যে ঘুরে বিরোধী দলগুলির শীর্ষদের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং আরএসএস-বিজেপি’র ধর্মনিরপেক্ষতা বিরোধী ও গণতন্ত্র বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে সার্বিক বিরোধী ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান। 

নিজ নিজ রাজ্যে রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা থাকায় কয়েকটি দল সেই উদ্যোগে নিজেদের যুক্ত না করলেও বেশিরভাগ বিরোধী দলই বিজেপি হটানোর লড়াইয়ে জোট বেঁধে লড়াইয়ে শামিল হবার সম্মতি জানিয়েছে। সেই সম্মতিরই প্রতিফলন ঘটেছে পাটনায় বিরোধী দলগুলির বৈঠকে। কংগ্রেস এবং বামপন্থীরা সহ মোট ১৭টি বিরোধী দলের শীর্ষ নেতারা। ছিলেন বিরোধী শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও।


পাটনার এই বৈঠকের মধ্য দিয়েই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-কে হটানোর একমাত্র লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। আম আদমি পার্টির ভূমিকায় কিঞ্চিৎ ছন্দ পতন হলেও মোদী সরকারকে অপসারণের মূল লক্ষ্যে সব দলই একমত হয়েছেন। 

এমনকি কেজরিওয়ালের দলও তাতে সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। প্রথম বৈঠকেই সকলে কথা বলেছেন এক সুরে এবং বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনেও অংশ নিয়েছেন বেশিরভাগ নেতা। শুধু অংশ নেননি সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তরও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সকলে দিয়েছেন।


প্রথমদিনের বৈঠকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে জাতীয় স্তরে ঐক্যের উপর এবং মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণে। জাতীয় স্তরে কেন্দ্রীয় ইস্যুতে সকলে একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ঠিক হয়েছে সন্দেহাতীতভাবে মোদী সরকার হটানো। 

এই সরকার যে চূড়ান্তভাবে অগণতান্ত্রিক এবং এরা ক্ষমতায় থাকলে দেশে গণতন্ত্র বলে কিছু আর অবশিষ্ট থাকবে না। ধর্মীয় সংখ্যাগুরুবাদকে সামনে রে‍‌খে এক আধিপত্যবাদী একদলীয় স্বৈরাচারী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে যাকে হিন্দুত্ব রাষ্ট্র বলে অভিহিত করা হয়। 

দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। এদের যে আর বাড়তে দেওয়া যায় না, আগামী নির্বাচনেই যে এদের বিদায় জানানো দরকার তা সব দলই একবাক্যে মেনে নিয়েছেন। বিরোধী দলের প্রথম বৈঠকের এই প্রধান সাফল্য।


এটা ঠিক কংগ্রেস, সিপিআই(এম) এবং খানিকটা আপ ছাড়া বাকি সব দলই কার্যত আঞ্চলিক দল— একটি রাজ্যে সীমাবদ্ধ। তাই রাজ্য রাজনীতিতে সকলেরই কমবেশি বাধ্যবাধকতা আছে। তাই রাজ্যস্তরে মত বিরোধী আছে তাতে সন্দেহ নেই। 

তাই একথাও উঠেছে বৃহত্তর লক্ষ্যকে সামনে রেখে খানিকটা নমনীয়তা দেখিয়ে একটা বোঝাপড়ার রাস্তা তৈরি করতে হবে। সেই লক্ষ্যে ঐক্যের প্রাথমিক সূত্রাবলী তৈরির জন্য দ্বিতীয় বৈঠক বসবে আগামী মাসে সিমলায়। তারপর আরও বৈঠক হতে পারে। মধ্যবর্তী সময়েও পারস্পরিক আলোচনা করে প্রয়োজনে রাজ্যস্তরে এবং দ্বিপাক্ষিক স্তরেও আলোচনা হতে পারে। মোদ্দা কথা বিজেপি-কে ক্ষমতা‍‌ থেকে ছুঁড়ে ফেলতে হবে।

Comments :0

Login to leave a comment