MONDA MITHI — SHARAD NATUNPATA / PALLAV MUKHOPADHYA

মণ্ডা মিঠাই / শারদ নতুনপাতা — পল্লব মুখোপাধ্যায়

ছোটদের বিভাগ

MONDA MITHI  SHARAD NATUNPATA   PALLAV MUKHOPADHYA

শারদ নতুনপাতা

মণ্ডা মিঠাই 

শারদসংখ্যা
পল্লব মুখোপাধ্যায়

শারদোৎসবের সময় উৎসব সংখ্যা বলে একসময় কিছু ছিল না। উৎসবের ছুটি
কাটানোর সময় হাতে প্রিয় পত্রিকার উৎসব সংখ্যা থাকলে উৎসবের বৈচিত্র্য আরও
বেড়ে যায়। সেকারণেই পাঠক-পাঠিকার হাতে এই উৎসব সংখ্যা তুলে দেওয়ার জন্য
গোটা বছর ব্যাপী প্রস্তুতি, আয়োজন। ১৯২৪ সালের 'প্রবাসী'-র বিজ্ঞাপন অনুসারে
আশ্বিনের 'প্রবাসী' অন্যান্য সংখ্যার থেকে বেশি ছাপা হয়েছিল। সেসময় 'ভারতবর্ষ'
ছিল মাসিক পত্রিকা | সেসময় মাসিক পত্রিকা উৎসব সংখ্যা বলে আলাদা করে
প্রকাশিত হয়নি। তবে উৎসবের মাসের পত্রিকাটি হত একটু বেশি পৃষ্ঠার। ১২৮০
বঙ্গাব্দে কেশবচন্দ্র সেন-এর ভারত সংস্কার সভা থেকে প্রকাশিত হওয়া 'সুলভ
সমাচার' অংশে প্রথম 'ছুটির সুলভ' প্রকাশিত হয়। দাম ছিল ১ পয়সা। 'ভারতবর্ষ' -এর
১৩২০ বঙ্গাব্দের কার্তিক সংখ্যাটি ছিল নানা ছবি ও গুণী লেখকদের লেখার সমাহারে
২০০ পৃষ্ঠার। ১৯২২ সালের মাসিক 'বঙ্গবাণী' পত্রিকায় শারদোৎসবের সময়
শরৎচন্দ্রের 'মহেশ' প্রকাশিত হয়। ১৯২৫ সালের মাসিক 'বসুমতী' পত্রিকাটি
শারদোৎসব উপলক্ষে উৎসব সংখ্যা হিসেবে প্রকাশিত হয় |

 তখনও উৎসব সংখ্যা
হিসেবে আলাদা করে সংখ্যা প্রকাশ করার চল ছিল না। ১৯২৫ থেকে ১৯২৭ সাল পর্যন্ত
পরপর তিন বছর 'বার্ষিক বসুমতী' প্রকাশিত হয়েছিল। মলাটে লেখা থাকত 'শারদীয়া'
কথাটি। ১৯২৬ সালে প্রথম আলাদাভাবে উৎসব সংখ্যা প্রকাশিত হয়। দাম ছিল ২
আনা। এই উৎসব সংখ্যার বৈশিষ্ট্য ছিল হলুদ রঙের একটু মোটা কাগজের মলাট।
মলাটে কোনও ছবি বা প্রচ্ছদ ছিল না। পৃষ্ঠা সংখ্যা ছিল ৫৪।  মলাটের ওপর অংশ ছিল
লাল কালিতে ছাপা। ১৯২৬ সালেই ঠাকুর বাড়ির পত্রিকা 'ভারতী'-তে উৎসব নম্বর বের
হয়েছিল। দাম ছিল ১ টাকা। বস্তুত, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে বাংলা সাহিত্যে
উৎসব সংখ্যা সংখ্যায় বাড়তে থাকে। ১৯৩৯ সালের উৎসব সংখ্যায় রবীন্দ্রনাথ-এর
বড় গল্প 'রবিবার' এবং মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়-এর উপন্যাস 'শহরতলী' ছাপা হয়েছিল।
এই উৎসব সংখ্যার প্রচ্ছদশিল্পী ছিলেন যতীন সেন। সেকালে উৎসব সংখ্যায় দু-
একটি করে নাটকও লেখা হত। উৎসব সংখ্যায় ছিল ছোটদের বিভাগও। ১৩৪৩
বঙ্গাব্দে একটি পত্রিকার উৎসব সংখ্যার ছোটদের বিভাগের নাম ছিল 'শিশুমহল'।

 


'যুগান্তর' এবং 'বসুমতী' পত্রিকার শিশুদের বিভাগের নাম ছিল যথাক্রমে 'ছোটদের
পাততারি' এবং 'ডাকঘর'। ১৩৪৭ বঙ্গাব্দে 'আনন্দমেলা' চালু হয়। 'গণশক্তি'
পত্রিকার উৎসব সংখ্যা পত্রিকার পাঠক-পাঠিকাদের কাছে এক আকর্ষণ। এ বছরের
উৎসব সংখ্যা শেষ করে বছরভর হা-পিত্যেশ করে বসে থাকা আগামী উৎসব সংখ্যার
জন্য। আর এই উৎসব সংখ্যার বিশেষ আকর্ষণ 'ছোটদের বিভাগ'। বছরভর 'নতুন

পাতা'-র পাঠক-পাঠিকাদের কাছে 'গণশক্তি'-র শারদসংখ্যায় প্রকাশিত নব কলেবরে
'ছোটদের বিভাগ' উৎসবের দিনগুলিতে এক বাড়তি পাওনা।

Comments :0

Login to leave a comment