গল্প
সারপ্রাইজ
সৌরীশ মিশ্র
নতুনপাতা
১৫ই জুন, রাত দশটা
রাতের খাওয়া সেরেছি সবে। খাওয়ার পর বাড়ির মধ্যেই একটু হাঁটি। এঘর-ওঘর ঘুরে ড্রইং রুমে এলাম। দেখি, আমার সাত বছরের মেয়ে কুঁড়ি মেঝেতে বসে এক মনে ড্রইং খাতায় কি সব আঁকছে। মেঝেময় ছড়ানো স্কেচ পেন।
"কি আঁকছিস রে?"
আমার কণ্ঠস্বর শুনে যেন চমকে উঠল আমার মেয়ে। বুঝতে পারি, এতোটাই মনোযোগ দিয়ে ও আঁকছিল যে আমি ঘরে যে ঢুকেছি সেটা খেয়ালও করেনি।
"কিছু না, বাবা।" বলেই খাতাটা দু'হাতে নিজের পিছনে লুকানোর চেষ্টা করে সে। তারপর ফের বলতে থাকে, "বাবা, তুমি এখান থেকে এখন প্লিজ যাও, প্লিজ।"
মেয়ের এই অদ্ভুত আচরণ আমাকে বিস্মিত করে খুব। কুঁড়ি তো কখনো এর'ম ব্যবহার করে না। কি আঁকছিল ও ড্রইং খাতায় যেটা ও লুকাতে চাইল? প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছিল যদিও মাথায়, তবু কথা বাড়াই না। বেড়িয়ে আসি ঐ ঘর থেকে।
১৬ই জুন, সকাল সাড়ে সাতটা
রবিবার আজ। তাই, ঘুম ভাঙল দেরীতে। তাও কুঁড়ির ডাকাডাকিতে। বিছানায় উঠে বসতেই হাসি হাসি মুখে মেয়ে একটা ড্রইং খাতার পাতা আমার দিকে এগিয়ে দিল। দেখি, পাতাটায় আমাকে আর নিজেকে এঁকেছে কুঁড়ি। ও আমার হাতটা ধরে আছে ছবিতে। ছবিটার নিচে লেখা- হ্যাপি ফাদার্স ডে।
বুঝতে পারি, কাল রাতে এই ছবিটাই আঁকছিল ও। আমাকে সারপ্রাইজ দেবে বলে দেখায়নি তখন।
আমি আমার মেয়েকে জড়িয়ে ধরি বুকে। আমার চোখে জল।
Comments :0