Sujan Chakraborty

স্বপ্নদীপেও ফেরেনি হুঁশ, পাঁশকুড়ায় ছাত্র পেটানোর হুমকি তৃণমূলের, নিন্দা চক্রবর্তীর

রাজ্য

CPIM BJP RSS TMC WEST BENGAL POLITICS BENGALI NEWS 2023 PANCHAYAT ELECTION STUDENT DEATH SWAPNADEEP

র‍্যাগিং মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় চাই। স্বপ্ন খুনের অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।  এই দাবিতে চলা ছাত্র মিছিল আটকেছে পুলিশ। যারা খুনি তাদের পাশে দাঁড়াতে উঠে পড়ে লেগেছে রাজ্য সরকার। র‍্যাগিং মুক্ত শিক্ষাঙ্গনের দাবি জানালে সরকারের আপত্তি কোথায়? বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে এই প্রশ্ন তুললেন সিপিআই(এম)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী।

শুক্রবার নদীয়ায় স্বপ্নদীপের বাড়িতে যাওয়ার কথা সুজন চক্রবর্তীর। পাঁশকুড়া কলেজে টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবসে না যাওয়া পড়ুয়াদের পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে এক টিএমসিপি নেতা। তিনি বলেন, স্বপ্নদ্বীপের মৃত্যুর পরেও এদের হুঁশ ফেরেনি। জলপাইগুড়িতে পার্টি অফিসে ঢুকে হামলা চালানো হয়েছে।

চক্রবর্তীর অভিযোগ, হোস্টেলের সুপার নিজে বলছেন তিনি জানতেন র‌্যাগিং হত। জানা সত্ত্বেও তিনি এতদিন কী করলেন? কেন ইউজিসি’র নির্দেশিকা মানা হলো না? কেন রাঘবন কমিটির নির্দেশিকা মানা হলো না? অরাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নামে তৃণমূলের হয়ে ভাড়া খাটা দুষ্কৃতীরা দিনের পর দিন হোস্টেল দখল করে রেখেছে। তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হল না?

চক্রবর্তী আরো বলেন, ইউজিসির প্রতিনিধিদের তো যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার কথা ছিল। তাঁরা এলেন না কেন? আমাদের আশঙ্কা, দিল্লি থেকে বলা হয়েছে এখন আপনারা যাবেন না। গেলে মমতা ব্যানার্জির সরকার সমস্যায় পড়তে পারে। রাজ্য সরকার কোন নির্দেশিকা মানে না। তাঁদের প্রশ্রয়ে কোন বিশ্ববিদ্যালয়তেও নির্দেশিকা মানা হয় না। যাদবপুরের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। যাদবপুরের দিকে তো রাজ্যপালেরও নজর দেওয়ার কথা। তিনি তো বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য। কিন্তু তিনিও নজর দেননি। আর এখন যাদবপুর নিয়ে রাজভবন আর নবান্ন লাফালাফি করে চলেছে। 

এই ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে সুজন চক্রবর্তী বলেন, আমাদের দাবি স্বপ্নদ্বীপ খুনের যথাযথ তদন্ত হোক। এটা গোটা সমাজের দাবি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তদন্তকে প্রভাবিত করতে কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু করেছেন। তিনি ষড়যন্ত্র করছেন। কারা ঘটনা ঠিক পরে জিবি করেছে? কারা হোস্টেলের গেট বন্ধ করেছে? কারা পুলিশ এবং সংবাদমাধ্যমকে ঢোকার ঢুকতে বাধা দিয়েছে? এই প্রশ্নগুলির উত্তর খোঁজার প্রয়োজন। আসলে তৃণমূলের সহযোগীরা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এই দাপট দেখিয়ে বেরিয়েছে। তাঁদের আড়াল করতে আবোল তাবোল বকছেন মুখ্যমন্ত্রী। 

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে চক্রবর্তী বলেন, যাদবপুরে যা ঘটছে সেটা রাজ্যের অন্যান্য কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে। যাদবপুরে আমরা দেখেছি বহিরাগতরা হস্টেলের ‘বাপ’ হয়ে বসে রয়েছে। একই কায়দায় রাজ্যের অন্যান্য কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে একই কাজ করছে টিএমসিপির বহিরাগতরা। দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি। তাহলে ছাত্র সংসদগুলি কারা চালাচ্ছে ? নির্বাচিত ইউনিয়ন ছাড়া কলেজ সোশ্যালে বিপুল টাকা কীভাবে খরচ হচ্ছে?  আসলে কলেজের টাকায় তৃণমূলের বহিরাগত বাহিনীকে পোষা হচ্ছে প্রশাসনের মদতে। 

সুজন চক্রবর্তী আরও বলেন, যাদবপুরের ঘটনার পরে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও পদক্ষেপ নিতে চাইছে বলে শুনেছি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বলছে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের জন্য আলাদা হোস্টেলের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু নির্দেশিকাতেই তো এই কথা বলা রয়েছে। এতদিন সেটা মানা হয়নি কেন? এসএফআই ইতিমধ্যে দাবি করেছে, কলেজ ক্যাম্পাস এবং ইউনিয়ন রুমকে বহিরাগত মুক্ত করতে হবে। এই দাবি নিয়ে বৃহস্পতিবার যাদবপুরে মিছিল করছিল ছাত্ররা। তাঁদের উপর পুলিশ লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে টিএমসিপি’র বিরুদ্ধে। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে চক্রবর্তী বলেন, একটা ছেলে দুঃখজনক ভাবে মারা গিয়েছে। তার মৃত্যুর প্রতিবাদ হওয়া উচিত। কিন্তু সেই অবস্থায় দাঁড়িয়েও দাপট দেখানোর চেষ্টা করছে টিএমসিপি। ইচ্ছাকৃতভাবে বুধবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্ররোচনা তৈরি করেছে তাঁরা। স্মারকলিপি জমা দেওয়ার নামে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা হয়েছে। এসএফআই’র রাজ্যস্তরের নেত্রী শিল্পী আফরিন টিএমসিপির হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। 

 

Comments :0

Login to leave a comment