Agricultural Workers Rally Purulia

চোখে চোখ রেখে কথা দুই শাসকের সঙ্গেই: ঘোষণা খেতমজুর সমাবেশে

রাজ্য জেলা

Agricultural Workers Rally Purulia রবিবার পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের শাঁখায় সমাবেশের একাংশ।

দুই সরকারই ধাপ্পা দিচ্ছে মানুষকে। দুই সরকারই কেড়ে নিচ্ছে মানুষের অধিকার। কেন্দ্র আর আর রাজ্যের দুই শাসকদলকেই চালাচ্ছে এক শক্তি। তার নাম আরএসএস। শাসকদের দুই দলের বিরুদ্ধেই লড়তে হবে জোট বেঁধে। এখন সেই লড়াইয়ের প্রথম ধাপ পঞ্চায়েত নির্বাচন। 

 

জনসভায় বক্তব্য রাখছেন সুশান্ত ঘোষ

রবিবার পুরুলিয়ার শাঁখায় খেতমজুর সমাবেশে এই আহ্বান রেখেছেন নেতৃবৃন্দ। সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের পুরুলিয়া জেলা সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশে বক্তব্য রেখেছেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক অমিয় পাত্র, গণআন্দোলনের নেতা এবং প্রাক্তন সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া, গণআন্দোলনের নেতা সুশান্ত ঘোষ এবং জেলা নেতৃবৃন্দ। 

জনসভায় বক্তব্য রাখছেন অমিয় পাত্র

অমিয় পাত্র বলেছেন, ২০১৮’র মতো হবে না এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচন। শাসকের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে কথা হবে। বাসুদেব আচারিয়া বলেছেন, রাজ্য এবং দেশ, দুই সরকারই জনজীবনকে ভেঙে তছনছ করে দিচ্ছে। মানুষের অর্থে গড়ে তোলা সম্পদ সমানে বেসরকারিকরণ করছে। তুলে দিচ্ছে ব্যবসায়ীদের হাতে। 

জনসভায় জনসমাগম

সুশান্ত ঘোষ বলেছেন, ‘‘গ্রামে শ্রমজীবী মানুষের সবচেয়ে বড় সংগঠন কেতমজুর ইউনিয়ন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে খেতমজুরদের বড় ভূমিকা নিতে হবে। গ্রামের মানুষকে শাসকের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে এককাট্টা হয়ে লড়তে হবে। একশো দিনের কাজে মজুরি নেই মাসের পর মাস। কেন্দ্রের সরকারের হিসাব এ রাজ্যে ন হাজার কোটি টাকা চুরি হয়েছে একশো দিনের কাজে। এই টাকা কে চুরি করেছে? গরিব মানুষ তো করেননি। করেছে পঞ্চায়েত তৃণমূলের লোকেরা আর তাদের নেতারা।’’ 

মঞ্চে বাসুদেব আচারিয়া সহ নেতৃবৃন্দ

 

ঘোষ একশো দিন কাজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন জমায়েতে শামিল জনতার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘গরিবের যে টাকা পাওয়ার কথা তা তৃণমূলের পকেটে চলে গিয়েছে। মানুষকে টাকা দেয়নি। মুখরক্ষার জন্য কখনও অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হলে তা পেতে ভাগ দিতে হয়েছে তৃণমূল নেতাদের। না দিলে বাতিল করছে জবকার্ড। গরিব মানুষ জবকার্ড পান না আর তৃণমূল নেতাদের ঘরে পড়ে থাকে জবকার্ড।’’ 

কিন্তু চোরদের কেন্দ্রের সরকার ধরছে না কেন? ঘোষ বলেন, ‘‘কারণ চোরে চোরে মাসতুতো ভাই। দুই সরকারই চরম মিথ্যা বলে। নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সময় সর্ষের তেলের দাম ছিল ৫২ টাকা, এখন ২০০ টাকা। কেরোসিনের লিটার ছিল ৯ টাকা, এখন হয়েছে ১০০ টাকা, পেট্রোল-ডিজেল লিটারে ১০০ টাকা উঠে গিয়েছে। মহিলাদের কান্না ঘোচাতে উজালা প্রকল্পে গ্যাস সিলিন্ডারের ঘোষণা হলো। যা দাম করেছে তাতে সেই কাঠের চুলাতেই করতে হচ্ছে রান্না।’’  

 

বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে পঞ্চায়েত গড়ে ওঠার ইতিহাস বলেছেন বক্তারা। বলেছেন, গ্রামে ভারসাম্য বদলে গিয়েছিল, ক্ষমতা পেয়েছিলেন গরিব শ্রমজীবী মানুষ। যে খেতমজুরকে বাবুর বাড়ির সামনে কাজের জন্য হাতজোড় করে দাঁড়িয়ে থাকত হতো তাঁরই পরিবারের সদস্য হয়েছেন পঞ্চায়েতের প্রধান। কমরেড জ্যোতি বসু ঘোষণা করেছিলেন রাইটার্স থেকে চলবে না সরকার, ১৯৭৭ সালে। আর পরের বছর থেকে চালু হলো পঞ্চায়েতের নির্বাচন। নজির হলো সারা দেশে। পঞ্চাশ ভাগ মহিলা পঞ্চায়েতে সদস্য হলেন। বামপন্থীরা এ রাজ্যের সরকারে থেকে সে কাজ করেছিল ফলে গরিব খেতমজুরকে কাজের জন্য জমি হারাবার ভয়ে ঘুরতে হয়নি। সেই কাঠামো ভেঙে দিয়েছে তৃণমূল সরকার। যোগ্য সঙ্গত করছে বিজেপি। লড়তে হবে দুই শক্তির সঙ্গেই।  

Comments :0

Login to leave a comment