CHANDRAYAN 3

বিস্ময়ের গান গাইবে ‘প্রজ্ঞান’, চন্দ্রাভিযানে তৈরি ‘ইসরো’

জাতীয়

ইসরো’র ছবি।

চাঁদের মাটিতে ঘুরে ফিরে বেড়াবে ছোট্ট ‘প্রজ্ঞান’।  অজানা তথ্যের খোঁজ দেবে। শেষ পর্বের সেই লক্ষ্য পৌঁছাতে প্রস্তুতি চূড়ান্ত সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারে। 

ঘড়ির কাঁটা মিলিয়ে শুক্রবার বেলা আড়াইটের কিছু পরেই পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণকে হারিয়ে রওনা দেবে রকেট ‘ফ্যাট বয়’। পরিভাষায় এলভিএম-৩ এম-৪ এই রকেট ভারি সরঞ্জাম নিয়ে মহাকাশে পৌঁছাতে তৈরি। তাকে তৈরি করেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ইসরো’-র বিজ্ঞানীরা। 

‘ইসরো’ জানিয়েছে আগস্টের শেষ দিকে, ২৩ বা ২৪ তারিখ চাঁদের মাটিতে ‘প্রজ্ঞান’-কে নামানোর লক্ষ্য নিয়ে এগনো হচ্ছে। তার জন্য দরকার ‘সফট ল্যান্ডিং, বলা যায় ধীরে অবতরণ। চাঁদের মাটিতে নামার জন্য তৈরি হয়েছে বিশেষ অবতরণ ব্যবস্থা ‘ল্যান্ডিং মডিউল’। গতি নিয়ন্ত্রণে না থাকলে চাঁদের মাটিতে নামার সময় বা আগে চুরমার হবে মহাকাশযান।

চন্দ্রযান-৩ দেখবেন দেশের মানুষ। ফ্রান্স থেকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। ভারতের মহাকাশ অভিযানের নতুন নতুন বিস্ময়কর পর্ব যদিও মোদীর মেয়াদে দেওয়া উপহার নয়। ‘ইসরো’-র দীর্ঘ ইতিহাসই তার সাক্ষী। 

ইসরো’র বিজ্ঞানীদের হিসেব, উৎক্ষেপণের ১৬ মিনিট পর মূল যান থেকে বিচ্ছিন্ন হবে তাকে মহাকাশে তোলার ‘প্রোপালশন মডিউল’। পৃথিবীর উপবৃত্তাকার কক্ষপথে পাক খেতে শুরু করবে চন্দ্রযান। পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে ১৭০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে আসবে মহাকাশে, দূরে ৩৬ হাজার ৫০০ কিলোমিটারে সরেও যাবে। 

পরের পর্বে চাঁদের দিকে শুরু হবে যাত্রা। চলবে প্রায় এক মাস। চাঁদের মাটি থেকে একশো কিলোমিটার ওপরে পৌঁছালে শুরু হবে ধীরে নামার পর্ব। চাঁদের দক্ষিণ মেরুকেই নামার জন্য বেছে নিয়েছেন ইসরো’র বিজ্ঞানীরা। মহাকাশযান চাঁদের মাটিতে নামলে বিশ্বে চতুর্থ দেশ হবে ভারত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়ন ছাড়া কেবল চীন বিজ্ঞানের এই মাত্রায় পৌঁছাতে পেরেছে। উপগ্রহ চাঁদের মাটিতে নামাতে পেরেছে পৃথিবীর থেকে পাঠানো যান। 

ইসরো’র কিছু বিজ্ঞানী নাকি গিয়েছিলেন মন্দিরে পুজো দিতে। ব্যক্তিগত ধর্মবিশ্বাস, ধর্মাচরণের সেই খবর ফলাও করে প্রচার করেছে মোদী অনুগত বলে পরিচিত সংবাদমাধ্যম। ইসরো’কে যদিও প্রতিটি ছোট ধাপ, বরাবরের মতোই পার হতে হচ্ছে বিজ্ঞানের হাত ধরে। পর্যবেক্ষণ-অনুসন্ধান-ব্যাখ্যা-পরীক্ষার সিঁড়ি টপকাতে টপকাতে। 

গ্যালিলিও বলেছিলেন, আসলে পৃথিবীই ঘোরে সূর্যের চারপাশে। ব্রুনো তার কিছু আগে বলেছিলেন, মহাবিশ্ব পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরছে না। বাইবেলের অনুশাসন চাপিয়ে দেওয়া হলেও না। হত্যা করা হয়েছিল গ্যালিলিও, ব্রুনোকে। বিজ্ঞানের অনুসন্ধান হাতে কলমে প্রমাণ করে চলেছে তাঁরা ঠিক। মানবিক অনুসন্ধানের সেই বৈজ্ঞানিক পথ ধরেই প্রস্তুতির শেষ ভাগে ‘ইসরো’।    

Comments :0

Login to leave a comment