Monsoon Session

জুলাইয়ে হতে পারে সংসদের বাদল অধিবেশন

জাতীয়

Monsoon Session ছবি টুইটার থেকে।

সংসদের বাদল অধিবেশন ১৭ জুলাই শুরু হতে পারে। ১০ আগস্ট পর্যন্ত চলতে পারে এই অধিবেশন।  এই অধিবেশন হওয়ার কথা নতুন সংসদভবনে।

অধিবেশন কবে হবে তা যদিও সরকারি স্তরে ঠিক হয়নি। তা ঠিক করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার সংসদ বিষয়ক কমিটি। কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের নেতৃত্বাধীন এই কমিটির বৈঠক কয়েকদিনের মধ্যে হওয়ার কথা। বৈঠকে সূচি নির্দিষ্ট করার পর মন্ত্রীসভায় তা অনুমোদন করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে। বিজ্ঞপ্তি জারি করে অধিবেশন আহ্বান করবেন রাষ্ট্রপতি।

সংসদের বাদল অধিবেশনে একাধিক বিষয়ে বিরোধীরা সরব হবেন। তার অন্যতম দিল্লিতে ‘আপ’ সরকারের ক্ষমতা খর্ব করার জন্য কেন্দ্রের জারি করা অর্ডিন্যান্স। দিল্লি রাজ্য সরকারের প্রশাসনিক স্তরে আধিকারিকদের দায়িত্ব এবং রদবদলের অধিকার এই অর্ডিন্যান্স জারি করে হাতে তুলে নিয়েছে কেন্দ্র। তার আগে কেন্দ্র নিযুক্ত উপরাজ্যপালের একই নির্দেশিকা খারিজ হয়ে গিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেই রায়কে বাতিল করতেই অর্ডিন্যান্স জারি করেছে কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার। সংবিধানের নির্দেশ অনুযায়ী অর্ডিন্যান্সের বদলে একই বয়ানে আইনের জন্য বিল পেশ করতে হবে সংসদে। লোকসভায় গরিষ্ঠতা থাকলেও রাজ্যসভায় বিজেপি জোটের গরিষ্ঠতা নেই। 

মণিপুর নিয়েও সরব হবেন বিরোধীরা। রাজ্যের বিজেপি সরকারের মু্খ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের অপসারণের দাবি উঠেছে বিজেপি’র মধ্যে থেকেও। এর মধ্যে সেনার তরফে বিভিন্ন গোষ্ঠীর সক্রিয় মহিলাদের আচরণে ক্ষোভ জানিয়ে বার্তা দেওয়া হয়েছে। সেনার অভিযোগ, সেনাহত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে বা তল্লাশিতে বাধা দিচ্ছেন মহিলাদের। মণিপুরে হিংসা ছড়িয়ে পড়ার ষাট দিন পরও প্রধানমন্ত্রী চুপ কেন, সে প্রশ্ন রয়েছে সব স্তরে। 

বামপন্থীরা সরব হয়েছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের জারি করা নতুন নির্দেশিকায়। ব্যাঙ্ক জালিয়াতিতে অভিযুক্তদের বকেয়া জমা নিয়ে মামলা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে নির্দেশিকায়। এই মর্মে ব্যাঙ্কের বহু বকেয়া বাকি রেখেই নিষ্পত্তির ব্যবস্থা আগেই করেছিল কেন্দ্র, বিরোধ নিষ্পত্তি বিধি জারি করে। সংসদে এমন বিপুল অঙ্কের জালিয়াতি নিয়েও সরব হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিরোধীদের। ফের উঠতে পারে আদানি প্রসঙ্গও। সরকারের লিখিত জবাবদিহি চাওয়া হতে পারে সংসদে। 

বিরোধীদের বাইরেও বিভিন্ন অংশ মনে করাচ্ছেন যে সংবিধানের অন্যতম মৌলিক বৈশিষ্ট্য হলো সরকারকে সংসদে, জনগণের প্রতিনিধিদের সামনে জবাবদিহি করতে হবে। নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার বারবার জবাবদিহির রাস্তাই বন্ধ করেছে। হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের পর রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থার লোকসান হয়ে চললেও সংসদে কোনও জবাবদিহি করতে রাজি হয়নি কেন্দ্র। সংসদীয় একাধিক বিধিতে বিশদ আলোচনার সংস্থান আছে। সেই অনুযায়ী বিরোধী সাংসদরা নোটিশ পাঠালেও গৃহীত হয়নি। বরং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী গৌতম আদানির সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলায় তাঁর সেই ভাষণ কারণ বিবরণী থেকে বাদ দেওয়া হয়। 

বামপন্থীরা বলছেন, অতীতেও দুর্নীতি হয়েছে। সংসদের দুই কক্ষে তা নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। সরকারকে জবাব দিতে হয়েছে সংসদে। তদন্তের নির্দেশও দিতে হয়েছে। সংসদে সেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিবৃতি দিতে হয়েছে। এমনকি সিবিআই বা ইডি’র মতো কেন্দ্রীয় সংস্থায় সরকারি হস্তক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন বা তার জবাব চলেছে। নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিশেষত্ব হলো সংসদীয় গণতন্ত্রের এই সাংবিধানিক ভিত ভেঙে দেওয়া। যৌথ সংসদীয় কমিটি গড়ে তদন্তের দাবিও উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে নরেন্দ্র মোদীর মেয়াদে অনেক বড় অঙ্কের দুর্নীতি চলছে সরকারি জবাবদিহি ব্যবস্থা ভেঙে ফেলে। 

বাদল অধিবেশনে তা নিয়েও হতে পারে বিতর্ক। 

 

Comments :0

Login to leave a comment