PROBANDHA — SAMRAT MONDAL | WORLD ENVIRONMENT DAY | MUKTADHARA — 5 JUNE 2024

প্রবন্ধ — সম্রাট মন্ডল | পরিবেশ দূষণ ও আবহাওয়া পরিবর্তনে বিপন্ন পৃথিবীর জীববৈচিত্র্য | বিশ্ব পরিবেশ দিবস — মুক্তধারা | ৫ জুন ২০২৪

সাহিত্যের পাতা

PROBANDHA  SAMRAT MONDAL  WORLD ENVIRONMENT DAY  MUKTADHARA  5 JUNE 2024

প্রবন্ধ

পরিবেশ দূষণ ও আবহাওয়া পরিবর্তনে বিপন্ন পৃথিবীর জীববৈচিত্র্য

সম্রাট মন্ডল

বিশ্ব পরিবেশ দিবস  

মুক্তধারা

জাতি সংঘের পরিবেশ বিভাগের কনফারেন্স অফ পার্টিজ (COP) হল জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন (UNFCCC) এর সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থা। গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন স্থিতিশীল করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করার জন্য 1994 সালে UNFCCC গঠিত হয়েছিল।পার্টির তৃতীয় সম্মেলন (COP3) কিয়োটোতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অগ্রগতি মূল্যায়ন করার জন্য , এবং 1990 এর দশকের মাঝামাঝি থেকে, উন্নত দেশগুলির জন্য আইনত বাধ্যতামূলক বাধ্যবাধকতা স্থাপনের জন্য ৩ য় সম্মেলনে কিয়োটো প্রোটোকলের মাধ্যমে  গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল।২০১৫ সালে প্যারিসে আবহাওয়া পরিবর্তনের (COP21) সভায় পৃথিবী সমস্ত দেশ গুলি মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শিল্প বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে ২১০০ সালের মধ্যে পৃথিবীর
গড় তাপমাত্রা ১.৫° সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।কিন্তু ওয়ার্ল্ড মেটিরিওলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের বিজ্ঞানীরা ভবিষ্যৎবাণী করেছেন ২০২৪ সালেই এই গড় তাপমাত্রা ১.৫° সেলসিয়াস কে ছাড়িয়ে যাবে।মানবসভ্যতা যত উন্নতির পথে এগিয়েছে, ততই বিপদের মুখে পড়েছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য।সাম্প্রতিক সংযোজন বিশ্ব উষ্ণায়ন।আর যে কারণে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে অবলুপ্ত হয়ে চলেছে উভচর,স্তন্যপায়ী ও অন্যান্য সকল প্রাণীরা এবং স্থানীয় জীব বৈচিত্র্য।‘ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর দ্য কনজারভেশন অফ ন্যাচার স্পিসিস’-এর (IUCN) রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে এই বিপদের আশঙ্কা। ২০০৪ সাল থেকে যারা ধারাবাহিকভাবে নজর রেখে এসেছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বিলুপ্তপ্রায় পশু-পাখিদের উপরে।বাসস্থানের অভাব ও নিত্যনতুন রোগের কারণে গত কুড়ি বছরে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে উভচর প্রাণীকূল। কিন্তু বর্তমান উষ্ণায়নের জেরে তাঁদের অস্তিত্ব দ্রুত লোপ পেতে শুরু করেছে। বিজ্ঞানীদের অনুমান, উষ্ণায়নের কারণে বিরল প্রজাতির উভচর প্রাণীদের মধ্যে ৩৯ শতাংশ হারিয়ে যেতে বসেছে। অন্যদিকে খাদ্য-বাসস্থানের অভাবে ৩৯ শতাংশ উভচর বিপদের মুখে। ৮০১১টি প্রজাতির প্রাণীর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে ২৮৭৩টি প্রজাতি একেবারে অবলুপ্তির শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে।গবেষণা অনুযায়ী, ২০০৪ থেকে ২০২২-এর মধ্যে ৩০০ প্রজাতির উভচর প্রাণী সম্পূর্ণরূপে অবলুপ্ত হয়ে গেছে। যেখানে গত শতকের শেষ দশকে বিলুপ্ত প্রাণীর সংখ্যা ছিল ২৬। অর্থাৎ অতি দ্রুত গতিতে বেড়ে চলেছে অবলুপ্তির হার। এর সঙ্গে কীভাবে যুক্ত বিশ্ব উষ্ণায়ন? গবেষকরা জানাচ্ছেন, উভচরদের প্রজননের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হল জল। সেখানেই বড়ো হয়ে ওঠে নতুন প্রজন্ম। আর্দ্র ত্বককে তারা ব্যবহার করে শ্বাস-প্রশ্বাসের সহায়ক অঙ্গ হিসেবে। এসব ক্ষেত্রে অত্যন্ত সংবেদনশীল তাদের চরিত্র। কিন্তু উষ্ণায়নের কারণে অনেক স্থানেই ঘাটতি দেখা দিচ্ছে জলের। কোথাও বা তপ্ত আবহাওয়া বাদ সাধছে স্বাভাবিক জননপ্রক্রিয়া। এর সঙ্গে বাতাসে দূষিত পদার্থের বাড়বাড়ন্ত মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে তাদের।১২০০ প্রজাতির উভচর প্রাণীর বৈচিত্র্য সারা বিশ্বে আর কোথাও দেখা যাবে না। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজ্ঞানীরা ১৮৯টি প্রজাতির অবস্থাকে অত্যন্ত আশঙ্কাজনক অবস্থা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
গবেষকরা তাদের গবেষণার মাধ্যমে জানিয়েছেন এই বিশ্ব উষ্ণায়ন ষষ্ঠ গণবিলুপ্তির প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে।
[ তথ্য -নেচার জিও পত্রিকা ]

Comments :0

Login to leave a comment