TET scam

গৌতম পালের রক্ষাকবচের আবেদন খারিজ সুপ্রিম কোর্টে

রাজ্য

প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পালকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে সিবিআই। প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গেপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন বর্তমান পর্ষদ সভাপতিকে প্রয়োজনে হেপাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার। সিবিআই তলবও করেছিল তাকে। হাজিরাও দিয়েছিলেন। কিন্তু বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকে চ্যালেজ্ঞ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন প্রাথমিকের সভাপতি।
আদালতের কাছে রক্ষা কবচের আবেদন করেছিলেন তিনি। সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার শীর্ষ আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, সিবিআই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে।

 
গত ১৮ অক্টোবর গৌতম পাল এবং পর্ষদের ডেপুটি সেক্রেটারি পার্থ কর্মকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারি সংস্থা। 
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতিতে ওএমআর শিট বিকৃত করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। র্ষদের কাছ থেকে ওএমআর শিটের যে ডিজিটাইজড কপি চাওয়া হয়েছিল তা পর্ষদ দেয়নি। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ টাইপ করা প্রিন্ট কপি তদন্তকারী সংস্থার হাতে তুলে দিয়েছে। দুর্নীতির তদন্তকে বিভ্রান্ত করতে পর্ষদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন রকমের চতুরতার আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য করেন যে রিপোর্ট দিয়েছে সিবিআই তা গুরুতর। পর্ষদের বর্তমান সভাপতি সহ অন্য আধিকারিকরা নতুন প্রিন্ট করা কপিকে ‘ডিজিটাইজড কপি’ বলে দাবি করেছেন। ফলে তাঁদের জেরা জরুরি। 
প্রসঙ্গত, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তৃণমূলের বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য এখন জেলে রয়েছেন। তিনি যে সংস্থাকে ওএমআর শিট তৈরি বরাত দিতেন সেই সংস্থাই এখনও ওএমআর শিট তৈরির বরাত পাচ্ছে। মানিক ভট্টাচার্যের সময় এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি ওএমআর শিট তৈরির বরাত পেত। তদন্তে উঠে এসেছে এই কোম্পানি এমনভাবে ওএমআর শিট তৈরি করতো, যেখানে প্রার্থীর নাম এবং রোল নম্বর স্পষ্ট করে বোঝা যেত না। অভিযোগ উঠেছে, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ক্ষেত্রে এই কোম্পানিই ফের ওএমআর শিট তৈরির বরাত পেয়েছে।


২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট পরীক্ষার মূল্যায়নের বরাত পেয়েছিল এস বসু রায় কোম্পানি। ওই সংস্থার কয়েকজন অধিকারিককে গ্রপ্তারও করা হয়েছএ। ওএমআর শিট মূল্যায়ন করেছিল এই সংস্থা। মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল এই সংস্থার আধিকারিকদের। সেই সূত্রেই এর বরাত মেলে। টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের নাম সুপারিশ হিসাবে পাঠানোর পরে তার ভিত্তিতেই ‘প্রভাবশালী’ মহলের নির্দেশে বিকৃত করা হত ওএমআর শিট। এস বসু রায় কোম্পানি এই কাজ করতো। একাধিক ওএমআর শিট পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছিল। ঐ সংস্থার ধৃত দুই আধিকারিককে গ্রেপ্তারির পরেই পর্ষদের সচিবকে জেরা রীতিমত তাৎপর্যপূর্ণ।  
রাজ্য শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্তের কাজে যুক্ত করার জন্য আর একজন নতুন অফিসারকে দিল্লি থেকে নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। জানা গেছে, স্নেহাংশু বিশ্বাস নামে এই অফিসার অ্যান্টি-করাপশন সেলে কাজ করছেন। আদালত নির্দেশ দিয়েছে, ওই অফিসার কলকাতায় এসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার সঙ্গে যুক্ত হবেন। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আগেই কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই’র সিট গঠন করেছে। সিটের প্রধান হিসাবে রয়েছেন অশ্বিনী সেনভি। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি বেশ কয়েকটি মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। তদন্তের গতি নিয়ে বহুবার আদালতে প্রশ্ন উঠেছে। এমনকি সিটের প্রধানকে সরিয়ে অন্য কোন অফিসারকে নিয়োগের কথাও বলেছে আদালত।

Comments :0

Login to leave a comment