Karnataka Accident

কর্ণাটকে দুর্ঘটনা, হাসপাতালে রাজ্যের ২৯ , গুরুতর ৪

জাতীয় রাজ্য

বাস দুর্ঘটনায় জখম যাত্রীদের চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে

অনিল কুন্ডু 

কর্নাটকে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের ২৯ জন পর্যটক জখম হয়েছেন। এদের মধ্যে বাসের চালকসহ ৪ জন পর্যটকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মঙ্গলবার রাতে ভয়াবহ এই পথ দুর্ঘটনাটি ঘটে কর্নাটকের বান্দিপুর এলাকায়। জখম বাস যাত্রীদের উদ্ধার করে স্থানীয় গুন্ডলুপেতে চামা রাজনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 
জানা গেছে, বাসটি উটি থেকে মহীশূরের দিকে যাচ্ছিল। বান্দিপুর ফরেস্ট রোডের কাছে চামারাজনগর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি উল্টে যায়। গত ১১ অক্টোবর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার রায়দিঘি থানার কোম্পানীর ঠেক এলাকা থেকে ৭২ জন যাত্রী নিয়ে ওই বাসটি ভ্রমণের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বাস নম্বর ডব্লু বি ৩৭ডি ৫৭১২। বাকি পর্যটকদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে। তাঁদেরকে গুন্ডলুপেতে আম্বেদকর ভবনেরাখার ব্যবস্থা করেছে কর্নাটক প্রশাসন। ওই পর্যটকদের খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এদিকে কর্নাটকে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনার খবরে আশঙ্কা ও উদ্বিগ্নের মধ্যে রয়েছেন রায়দিঘিসহ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন এলাকার পর্যটকদের পরিবার পরিজনেরা।  
পশ্চিমবঙ্গ রেডিও ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগবিশ্বাস বুধবার জানান, কর্নাটকে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কর্নাটক হ্যাম রেডিও’র প্রতিনিধি মঞ্জুনাথসহ অন্যান্য প্রতিনিধিরা। ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ হ্যামের প্রতিনিধিরাও ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পর্যটকরা পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হওয়ায় তাঁরা আমাদেরকে সঙ্গে সঙ্গে খবর দেয়। আমাদের তরফে দুর্ঘটনার বিষয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা শাসককে অবহিত করা হয়। তিনি জানান, চালকসহ ৭২জন পর্যটকের মধ্যে ২৯ জন পর্যটক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁদের কারো কোমর, হাত, পা, স্পাইনালকর্ড ভেঙেছে। জখমদের মধ্যে ৪ জনের আঘাত গুরুতর। দুর্ঘটনায় জখম পর্যটকদের দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেছে কর্নাটক সরকারের পুলিশ প্রশাসন। বাকি পর্যটকদের উদ্ধার করে স্থানীয় আম্বেদকর ভবনে রাখা হয়েছে। তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁর কথায়, সুস্থ পর্যটকদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করছে কর্নাটক সরকার। বুধবার ওই পর্যটকরা বাসে রওনা দিয়েছেন।
এদিকে রায়দিঘির কুমড়োপাড়া অঞ্চলের সিংয়ের ঘেরীর বাসিন্দা পর্যটক মহাদেব হালদারের পুত্র স্বপন হালদার বুধবার দুপুরে জানান, মঙ্গলবার রাতে বাবা বাড়িতে ফোন করে বাস দুর্ঘটনার খবর জানায়। তাঁর কথায়, গত ১১ অক্টোবর রায়দিঘি পেট্রোল পাম্প থেকে দক্ষিণ ভারত ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বাসটি রওনা দেয়। রায়দিঘির বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা ছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা ও কলকাতার বাসিন্দারা এই ভ্রমণে ওই বাসে রওনা দেয়। রায়দিঘির খাঁরাপাড়া ক্ষিরীশতলা এলাকার বাসিন্দা সনৎ ভান্ডারী এই ট্যুর করে। মাথা পিছু  ১৬ হাজার টাকা করে পর্যটকদের কাছ থেকে বাসে দক্ষিণ ভারত ভ্রমণের জন্য নেওয়া হয় বলে শুনেছি। তবে বাবা মহাদেব হালদার ১৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। 
দুর্ঘটনার পর ট্যুর ম্যানেজারদের কর্নাটক প্রশাসন সুস্থ পর্যটকদের ফেরানোর ব্যবস্থা করার কথা বললেও তাঁরা কোন উদ্যোগ নেয়নি। বাধ্য হয়ে কর্নাটক প্রশাসন তাঁদেরকে ফেরানোর ব্যবস্থা করে। পশ্চিমবঙ্গ রেডিও ক্লাবের সম্পাদক অভিযোগ করে বলেন, ট্যুর ম্যানেজাররা তাঁরা নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে গেছেন। আমাদের অনুরোধে কর্নাটক প্রশাসন সুস্থ ৪৩ জন পর্যটককে ফেরানোর ব্যবস্থা করেছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৯ জন পর্যটক। তাঁরা কবে বাড়ি ফিরতে পারবেন সেবিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। কারণ তাঁদের প্রত্যেকেরই আঘাত গুরুতর। আমরা ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ হ্যামের প্রতিনিধি মঞ্জুনাথের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছি এবং কর্নাটক প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছি। জখমদের মধ্যে বেশিরভাগ প্রবীণ পুরুষ ও মহিলারা রয়েছেন।
 

Comments :0

Login to leave a comment