Salim Slams TMC

শাহের ফর্দ মেনে রাজ্যে এনপিআর করা হয়েছে

রাজ্য

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নির্ধারিত ক্রম অনুসরণ করে পশ্চিমবঙ্গে ইতিমধ্যেই চুপচাপ এনপিআর সম্পন্ন করেছে মমতা ব্যানার্জির সরকার। সোমবার সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সাংবাদিক বৈঠকে এই অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রকাশ্যে ‘‘ক্যা-ক্যা-ছিঃ-ছিঃ’’ করলেই হবে! গোপনে সিএএ-এনআরসি নিয়ে অমিত শাহের তৈরি করা ক্রনোলজি অনুসরণ করে পথ হাঁটছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
  এদিন সেলিম বলেছেন, আমাদের কাছে নির্দিষ্ট খবর আছে যে দেশের মধ্যে প্রথম এনপিআর সম্পন্ন করেছে পশ্চিমবঙ্গ। এর জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্ত্রক থেকে নবান্নে রাজ্য সরকারের কাছে ধন্যবাদজ্ঞাপক চিঠি এসেছে, এনআরসি করতেও বলা হয়েছে। 


  ২০১৯ সালে লোকসভায় অমিত শাহ বলেছিলেন, ক্রনোলজি বুঝুন। প্রথমে এনপিআর হবে, তারপরে সিএএ এবং তারপরে এনআরসি। মমতা ব্যানার্জি তখন থেকেই রাজ্যবাসীকে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে পশ্চিমবঙ্গে এগুলি করতে দেওয়া হবে না। কিন্তু সেলিমের অভিযোগ, ইতিমধ্যেই চুপচাপ এনপিআর করা হয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া চিঠির কথা রাজ্য সরকার গোপন করে রেখেছে। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে এনআরসি-সিএএ বিরোধিতায় গোটা রাজ্য যখন রাস্তায় নেমেছিল, তখন মোদী হেলিকপ্টারে করে রাজভবনে এসেছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে চুপচাপ সাক্ষাৎ করে সব ব্যবস্থায় রাজি হয়ে গিয়েছিলেন মমতা ব্যানার্জি। এখন উনি এনআরসি-সিএএ’র ভয় দেখিয়ে কাদের বাঁচানোর আশ্বাস দিচ্ছেন? কেবল নিজেকে এবং ভাইপোকে বাঁচাতেই উনি ব্যস্ত। সিএএ-এনআরসি রুখতে মানুষকেই একজোট হতে হবে। 
   সেলিমের আরও অভিযোগ, নাগরিকত্বের যে আইন নিয়ে এত হইচই, সেটা বাজপেয়ী আমলের এবং সেই সময়ে এনডিএ’তে মমতা ব্যানার্জি বিজেপি’র জোটসঙ্গী হয়েই ছিলেন। উনিই আরএসএস-বিজেপি’র হয়ে বামপন্থীদের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশ ঘটানোর অভিযোগ তুলে লোকসভায় উপাধ্যক্ষকে ফাইল ছুঁড়েছিলেন। মোদী যখন এই আইনে সংশোধনী আনেন, তখনও সংসদে তৃণমূলের সাংসদদের সক্রিয় বিরোধিতা ছিল না, কেন তাঁদের বেশিরভাগই অনুপস্থিত ছিলেন? পাছে এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে হয় তাই জন্য মুখ্যমন্ত্রী জনসভায় আর এসব কথা বলছেন না, ঈদের নামাজের জমায়েতে গিয়ে বলছেন। কারণ ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তো আর কেউ এসব রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করবে না। 


   আগে শহীদ মিনার ময়দানে ঈদের নামাজ পড়া হতো। ১৯৭৮ সালে বন্যার সময় মাঠ জলে ডুবে থাকায় মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু সেনাবাহিনীর সঙ্গে কথা বলে রেড রোডে ঈদের নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করে দেন। সেলিম সেই ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, জ্যোতি বসু কোনোদিন ঈদের নামাজকে রাজনীতির কাজে ব্যবহার করেননি। কিন্তু মমতা ব্যানার্জি এখন ইতিহাস ভুলিয়ে দিয়ে, ঈদের নামাজের আয়োজক যে খিলাফৎ কমিটি তাতেও দখলদারি চাপিয়ে রাজনীতি করছেন। তিনি বিজেপি’র সঙ্গে হাত মিলিয়ে মানুষের রুটিরুজির সমস্যাকে আড়াল করতে বিভাজনের রাজনীতির জন্য মানুষের নিরাপত্তার অভাব, হিংসা-অবিশ্বাস-ভয়ের আবেগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য ভাষণ দিয়েছেন। নইলে অমিত শাহ এবং মমতা ব্যানার্জির কণ্ঠে একই সঙ্গে এনআরসি-সিএএ’র কথা কেন? নাগপুরের তৈরি করা একই স্ক্রিপ্টের সংলাপ বলছে বিজেপি এবং তৃণমূল।
 

Comments :0

Login to leave a comment