বেঙ্গালুরুর রামেশ্বরম ক্যাফেতে বিস্ফোরণের পিছনে দুই অভিযুক্তকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে গ্রেপ্তার করেছে জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)। এর মধ্যে ষড়যন্ত্রের পাণ্ডা রয়েছে বলেও জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এই অভিযুক্তেরা ফেরার ছিল। দীঘার কাছে একটি হোটেল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এই দুই অভিযুক্তকে।
জাতীয় তদন্ত সংস্থা বা এনআইএ জানিয়েছে যে একাধিক রাজ্যের পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে ধরা হয়েছে এই দুই অভিযুক্তকে। পশ্চিমবঙ্গ, তেলেঙ্গানা, কর্নাটক এবং কেরালা- এই চার রাজ্যের পুলিশের সমন্বয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থা ধরেছে এই দুই অভিযুক্তকে। শুক্রবার নিউ দিঘার আয়ূষ ইন্টারন্যাশনাল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এই দুই অভিযুক্ত মুসাফির হোসেন শাজিব এবং আবদুল মতিন আহমেদ ত্বহাকে।
এনআইএ বলেছে যে মুসাভির হুসেন শাজিব ক্যাফেতে আইইডি বিস্ফোরক রেখে আসে। আব্দুল মতিন ত্বহা বিস্ফোরণের পরিকল্পনা ও সম্পাদনের পিছনে মূল পরিকল্পনাকারী ছিল।
তারা দুজনই ইতিমধ্যেই ২০২০ সালের সন্ত্রাসবাদের মামলায় ওয়ান্টেড। এনআইএ জানিয়েছে যে আব্দুল মতিন ত্বহা ষড়যন্ত্রের মূল পাণ্ডা। আইএসআইএস-আল হিন্দের বেঙ্গালুরু মডিউলের সঙ্গে জড়িত ছিল এরা।
এনআইএ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা মিথ্যা পরিচয়ে লুকিয়ে ছিল।
১ মার্চ কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে জনপ্রিয় রামেশ্বরম কাফেতে এই বিস্ফোরণ হয়। ৩ মার্চ তদন্তে নামে এনআইএ।
শুক্রবার এই গ্রেপ্তারিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক আক্রমণ প্রতিআক্রমণে নেমে পড়েছে বিজেপি এবং তৃণমূল। বিজেপি’র আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গ সন্ত্রাসবাদীবাদী নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্র হয়ে পড়েছে। আরেকদিকে তৃণমূল নেতা কুনাল ঘোষ আবার বলেছেন যে গ্রেপ্তারিতে রাজ্য পুলিশেরও ভূমিকা রয়েছে। তৃণমূল নেত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আবার কোচবিহারে জনসভা থেকে বিজেপি-কে বলেছেন, আপনারা যে যে রাজ্যে সরকার চালান সেগুলি কি নিরাপদ?
পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে দুষ্কৃতীদের তৎপরতা সমানে বাড়ছে এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। রাজ্যকে দুষ্কৃতীমূলক কাজের আখড়া বানানো হয়েছে। তার জন্য রাজ্যের প্রশ্রয় রয়েছে তেমনই কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির নিষ্ক্রিয়তা দায়ী। যেমন বগটুই গণহত্যায় তদন্তে সিবিআই নামলেও অগ্রগতি হয়নি।
ধৃত দুজনের নামেই ১০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করেছিল এনআইএ। বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।
দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তারের পর বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে একটি তথ্য আসে। তার ভিত্তিতেই পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ও এনআইএ'র যৌথ অভিযানে দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। এটি একটি যৌথ অভিযান ছিল। গোপন সূত্রে খবর মেলার দু’ঘন্টার মধ্যেই যৌথ অভিযানে সাফল্য আসে।”
Comments :0