Migrant Workers Death

দিল্লি ও বেঙ্গালুররতে কাজে গিয়ে রাজ্যের দুই শ্রমিকের মৃত্যু

রাজ্য

Migrant Workers Death

[ad}

জয়ন্ত সাহা-মেখলিগঞ্জ ও অনির্বাণ দে-মুর্শিদাবাদ

মৃত্যু মিছিল ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে রাজ্যের প্রতিটি জেলায়। প্রতিটি মৃত্যুর পরেই প্রশ্ন উঠছে ভিন রাজ্যে গিয়ে কাজ মিলছে, মজুরিও মিলছে কিন্তু মিলছে না শ্রমিকের সামাজিক নিরাপত্তা। এবারেও উছলপুকুরির মালিরবাড়ি এলাকার রঞ্জিত বর্মন(৩৫) এবং মুর্শিদাবাদের ধূলিয়ান পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের নতুন কৃষ্ণপুরের বাসিন্দা মোকলেসুর রহমান (৩৩)’র মৃত্যু সেই নিরাপত্তার প্রশ্নটাই আরো একবার সামনে নিয়ে এলো।
গ্রামে কাজ নেই। পেশায় রাজমিস্ত্রী ৪ বছর আগে প্রথম বন্ধুর সাথে কাজের সন্ধানে বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন। প্রতিবার বাড়ি এসেই বাবা নলিনী বর্মনকে বলতো "আর যাবো না, এবার গ্রামেই থাকবো। "তারপর হন্যে হয়ে এদিক ওদিক কাজ খুঁজে না পেয়ে ফের বাধ্য হয়ে ট্রেনে চেপে চলে যেত সেই বেঙ্গালুরুতে। শেষবার গিয়েছিল প্রায় এক বছর আগে। পুজোর আগেই বাড়ি ফেরার কথা ছিল রঞ্জিতের। একমাস আগে টাইফ্যেডে আক্রান্ত হয় রঞ্জিত। হাসপাতালে চিকিৎসাও চলে। ওঁর সঙ্গীদের বক্তব্য, পুরোপুরি সুস্থ হবার আগেই ফের কাজে যোগ দেয় রঞ্জিত। দিন পনের আগে কাজে গিয়ে অসুস্থ বোধ করে রঞ্জিত। সেদিন রাতেই খাওয়া দাওয়ার পর অসুস্থ বোধ করায় ঘরের বাইরে গিয়ে বসে। সেখানেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয় রঞ্জিৎ। প্রায় ঘন্টা চারেক পর বন্ধুরা খেয়াল করেন রঞ্জিৎ ঘরে আসে নি। এরপর বাইরে গিয়ে দেখে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আছেন। দ্রুত তাকে কাছাকাছি নার্সিং হোমে ভর্তি করা হয়। অপারেশনও হয়। খবর আসে বাড়িতে। অনেক টাকার প্রয়োজন। ঠিকাদার সংস্থা হাত গুটিয়ে নেয়। বাড়ির লোকেরা এম্বুলেন্সে করে রঞ্জিৎকে নিয়ে ফিরছিল। ফেরার পথেই নবদ্বীপের কাছে রঞ্জিতের মৃত্যু হয়। সোমবার রঞ্জিতের মৃতদেহ তার মালিরবাড়ির গ্রামে ফিরে আসে।
মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের বাবা নলিনী বর্মন বলেন, ওর জবকার্ড ছিল। কিন্তু কোনদিন কাজ পায় নি। গ্রামেও রাজমিস্ত্রীর কাজ মেলে না। গ্রামে কাজ মিললে ছেলেটা এভাবে মারা যেত না।

[ad}


অন্যদিকে দিল্লিতে রাজমিস্ত্রির কাজে গিয়ে পানীয় জল তোলার সময় শর্ট সার্কিটে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হলো মুর্শিদাবাদের পরিযায়ী শ্রমিক মোখলেসুর রহমানের। মৃত্যুর খবর আসতেই ধুলিয়ান ১ নম্বর ওয়ার্ড কিষ্টপুর এলাকায় শোকের আবহ তৈরি হয়। পরিবার সূত্রে জানা গেছে মাস কয়েক আগে দিল্লির শাহরোজ নগরে রাজমিস্ত্রির কাজে গিয়েছিল মুর্শিদাবাদ জেলার ধুলিয়ান পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোখলেসুর রহমান(৩০)। কয়েকদিনের মধ্যেই ছুটিতে বাড়ি আসার কথা পরিবারকে জানিয়েছিলেন। বাড়ি আসার প্রাক্কালে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকেন পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার। তার দেহ বাড়ি নিয়ে আসার জন্য বেজায় সমস্যায় পরিবার। মৃত পরিযায়ী শ্রমিক মুকলেসুর রহমানের কোনরকম পরিচয় পত্র না থাকায় দেহ বাড়ি নিয়ে আসতে সমস্যায় পড়েছে পরিবার। 
মৃত পরিযায়ী শ্রমিক মোখলেসুর রহমানের এক মেয়ে দুই ছেলে ও তার স্ত্রী রয়েছে। একমাত্র উপার্জনকারী মোখলেসুর রহমানকে হারিয়ে বেজায় চিন্তায় তার স্ত্রী। মোখলেছুর রহমানের স্ত্রী বলেন এক মেয়ে দশম ক্লাসে এবং এক ছেলে নবম ক্লাসে ও আর এক ছেলে পঞ্চম ক্লাসে পড়াশোনা করে কিভাবে পড়াশোনা খরচ চালাবেন কিভাবেই বা সংসার চালাবেন বেজায় চিন্তিত তিনি। সরকারের কাছে কাতর আর্জি জানিয়েছেন পড়াশোনার জন্য সাহায্যের জন্য। 
[ad}

Comments :0

Login to leave a comment