মুক্তধারা : বই
প্রয়াত ব্যক্তিদের জীবন নিয়ে বস্তুনিষ্ঠ চর্চা
প্রদোষকুমার বাগচী
মৃত্যুর পর ব্যক্তির জীবন নিয়ে চর্চার রেওয়াজ আছে। রাজ-রাজড়াদের কথা থাক, খ্যাতকীর্তি মানুষের মৃত্যুর পর সৎকার
বা শ্রাদ্ধবাসরে তাঁদের জীবনকীর্তি নিয়ে আলোচনা চলত। এখন অনেক ক্ষেত্রে স্মরণসভা করা হয়। সেগুলি আসলে অতীত
ঐতিহ্যেরই রেওয়াজি আয়োজন। তবে যশোগাথা আর অতিকথনে অনেক সময় সত্য ঢাকা পড়ে যায়। সেই অভিজ্ঞতাই
মানুষকে নিয়ে এসেছে বস্তুনিষ্ঠ চর্চার দিকে। ধারাটি নবীন। সেই ধারায় ‘‘মৃত্যুকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে’ গ্রন্থটি একটি অভিনব
সংযোজন।
বইটির একটি বিশেষ দিক হলো এখানে যে ব্যক্তিদের স্থান হয়েছে তাদের সকলেই সমাজের বিশিষ্ট মানুষ। তাঁদের মৃত্যুর
পর মানুষ পুনরায় তাঁদের কথা একবার শুনতে চায়। তাই বিভিন্ন সংবাদপত্র ও সাময়িকীগুলিই কেমন ছিলেন সেই
মানুষগুলি তার একটা পূর্ণাঙ্গ চেহারা তুলে ধরার চেষ্টা করে।
বইটির লেখক পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা ও পত্র-পত্রিকা সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত থাকার ফলে তাঁকে নানা
সময়ে বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতা, লেখক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, কবি, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব প্রসঙ্গে তাঁদের জীবনাবসানের পর
লিখতে হয়েছে। এর মধ্যে তৈরি হয়েছে এক চমৎকার স্মৃতি গদ্য। জ্যোতি বসু, প্রমোদ দাশগুপ্ত, শঙ্খ ঘোষ, অশোক মিত্র,
সোমনাথ লাহিড়ী, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সফদার হাসমি, গজেন্দ্রকুমার মিত্র, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, গোলাম কুদ্দুস, বিপ্লব
দাশগুপ্ত, বরুণ সেনগুপ্তরা যেমন আছেন তেমনি আছেন সুভাষ চক্রবর্তী, অজিত পাণ্ডে, সেরিনা জাহান, কৃষ্ণ ধর, সুদীপ্ত
গুপ্ত, অমিতাভ দাশগুপ্ত প্রমুখ পঞ্চাশ জনের স্মৃতিরেখা। সমকালীন প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখে ব্যক্তিগুলিকে দেখার পুনরায়
সুযোগ করে দেওয়ার জন্য লেখককে ধন্যবাদ।
মৃত্যু ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখা জীবন
সৌমিত্র লাহিড়ী। একুশ শতক, ১৫ শ্যামাচরণ দে স্ট্রিট। কলকাতা—৭০০ ০৭৩। ৬০০ টাকা।
Comments :0