FUKUSHIMA RADIOACTIVE WATER

তেজস্ক্রিয় জল মহাসাগরে ছাড়া শুরু ফুকুশিমায়, জাপানের সামুদ্রিক খাদ্যে নিষেধাজ্ঞা চীনের

আন্তর্জাতিক

বহু বিতর্কিত ফুকুশিমা দাইচি পরমাণু প্রকল্পের তেজস্ক্রিয় জল সমুদ্রে ছাড়তে শুরু করল জাপান। দেশে এবং বাইরে বহু বিরোধিতার মধ্যেও বৃহস্পতিবার জল ছাড়তে শুরু করেছে টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি। 

ফুকুশিমার জল ছাড়া শুরু হতেই জাপানের সব সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করল চীন। দক্ষিণ কোরিয়ারও প্রবল আপত্তি রয়েছে এই সিদ্ধান্তে। 

২০১১’র ভূমিকম্পের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিল ফুকুশিমা দাইচির পরমাণু কেন্দ্র। কিন্তু ভেতরে জলাধারে জমে ছিল জমা জল। কয়েক বছর ধরে এই তেজস্ক্রিয় জল প্রশান্ত মহাসাগরে ছাড়ার জন্য তদ্বির চালাচ্ছে জাপান। সরকারি বিদ্যুৎ সংস্থা টোকিয়ো ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানির দাবি, জল ছাড়ার আগে প্রক্রিয়ারকরণ হবে। তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা কমানো হবে। লঘু করা হবে ঘনত্ব।  প্রক্রিয়াজাত জল ছাড়া হবে সমুদ্রে।

কিন্তু প্রশান্ত মহাসাগরে মারাত্মক প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় দেশে এবং আন্তর্জাতিক স্তরে তীব্র আপত্তি রয়েছে। জাপানের যুক্তি, জল ধরে রাখার সামর্থ্য আর থাকছে না প্রকল্পটিতে। এরপর কোনও বিপর্যয় হলে প্রক্রিয়াজাত নয় এমন তেজস্ক্রিয় জল হু-হু করে মিশবে সমুদ্রে। পরমাণু কেন্দ্রগুলির আন্তর্জাতিক নিয়ামক আইএইএ শেষ পর্যন্ত জাপানকে অনুমতি দেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের মতো দেশে স্বাভাবিক পরমাণু গবেষণাতে নাক গলালেও ঘনিষ্ঠ সহযোগী জাপানের ফুকুশিমা প্রশ্নে নীরব সম্মতি দিয়েছে। সম্প্রতি দু’পক্ষে একাধিক বৈঠকও হয়েছে। আমেরিকার ভেতরেও বিভিন্ন অংশ যদিও এই সিদ্ধান্তের বিরোধী। 

বৃহস্পতিবার সরকারি বিদ্যুৎ সংস্থাটি বলেছে, ‘‘প্রথম দিন ২০০ থেকে ২১০ কিউবিক মিটার জল ছাড়া হবে প্রশান্ত মহাসাগরে। মোট ১৭ দিনে ছাড়া হবে ৭ হাজার ৮০০ কিউবিক মিটার জল। নিষ্কাশন সরঞ্জামে সমস্যা দেখা দিলে বা জলের লঘুত্বের মাত্রা বিপদসীমার নিচে না থাকলে সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করা হবে জল ছাড়ার প্রক্রিয়া।’’ 

এমন অভয়বাণীতে বহু দেশই ভুলতে নারাজ, বিশেষ করে চীন। এদিনই চীনের বিদেশমন্ত্রক এই সিদ্ধান্তকে ‘স্বার্থপর ও দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ’ আখ্যা দিয়েছে। চীন বলেছে, দেশের নাগরিকদের তেজস্ক্রিয়তার শিকার না হওয়ার জন্য বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। জাপানের থেকে কোনও সামুদ্রিক খাদ্য পৌঁছাবে না চীনের বন্দরে।’’ 

এই আশঙ্কাতেই বিরোধে শামিল জাপানের মৎস্যজীবীরা। তাঁরা বলছেন, চীনের মূল ভূখণ্ড এবং হঙকঙ তাঁদের রপডতানি বাণিজ্যের অন্যতম বড় ঠিকানা। এরপর অন্য দেশও নিষেধাজ্ঞা জারি করবে। এর আগে ফুকুশিমা প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আতঙ্ক ছড়ায়। যার জেরে তাঁদের জীবিকা সঙ্কটে রয়েছে। এবার তা আরও বাড়বে। 

Comments :0

Login to leave a comment