Maldah TMC scam

সার্টিফিকেট খুইয়েও পঞ্চায়েতের পদ না ছাড়ার অভিযোগ লাভলির বিরুদ্ধে

জেলা

ছবি সংগৃহীত

মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের রসিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের দখলে থাকা পঞ্চায়েত প্রধান লাভলি খাতুন বাংলাদেশি নাগরিক বলে আগেই অভিযোগ উঠেছিল। ওই আসনটি ছিল ওবিসি সংরক্ষিত। সম্প্রতি তার জাল ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করেছে জেলা প্রশাসন। এর পরই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের দাবি উঠেছে। সঙ্গে তাকে জাল নথি বানাতে যারা সাহায্য করেছিলেন তাঁদেরও গ্রেপ্তারির দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা। 
২০১৫ সাল নগাদ লাভলি খাতুন বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসে। সেখানকার একজনকে বিয়ে করে। ছেলেটি সেখানকার প্রভবাশালী তৃণমূল যুব নেতা। লাভলির বিরুদ্ধে স্তানীয়দের অভিযোগ বর্ডার টপকে অবৈধভাবে এসছে। লাভলির আসল নাম নাসিয়া শেখ। অভিযোগ, পাসপোর্ট ছাড়াই অবৈধভাবে তিনি ভারতে ঢোকেন। তারপর নিজের নতুন পরিচয় তৈরি করেন। বাবার নামও পালটায়। ২০১৫ সালে ভারতে তার ভোটার কার্ডও ইস্যু হয়। ২০১৮ সালে ইস্যু হয় বার্থ সার্টিফিকেট। জানা গিয়েছে, নথিতে নাসিয়ার বাবার নাম ছিল শেখ মুস্তাফা। কিন্তু অভিযোগ, লাভলির বাবার নাম শেখ মুস্তাফা নয়। আসল নাম জামিল বিশ্বাস। 
২০২৩ সালে সে তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে পঞ্চায়েতে দাঁড়ায় এবং জিতেও যায় এবং প্রধান হয়। ওই জিপি ছিল ওবিসি সংরক্ষতি আসন। স্বামী ওবিসি হওয়া সত্বেও নিজে অভ্যন্তরীন কোন্দলে না দাঁড়িয়ে লাভলিকে দাঁড় করায়। এরপরে লাভলির কাছে যিনি পরাজিত হন, কংগ্রেস প্রার্থী রেহানা সুলতানা, হাইকোর্টে মামলা করেন এই বিষয়ে। তার কৌশুলি হন একদা তৃণমূলের উঁচু পদে থাকা এবং বর্তমানে বিজেপিতে যোগ দেওয়া অম্লান ভাদুরি। তিনি মামলাটি হস্তান্তর করেন আইনজীবী ইমতিয়াজ আখতারকে। এরপরে আদালতের নির্দেশ বাতিল হয় লাভলির শংসাপত্র।

রেহানার আইনজীবী ইমতিয়াজ জানাচ্ছেন যে,‘‘ বাংলাদেশ থেকে কেউ বৈধভাবে এসে বিবাহ সম্পন্ন করে ভারতের নাগরিক হতেই পারেন। এভাবে জাতি পরিবর্তন করা যায় না। উনি জাতি জাল সার্টিফিকেট দিয়ে বদল করে ভারতের সাংবিধানিক পদ আঁকড়ে বসে আছেন। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ’’। অন্যদিকে লাভলির আইনজীবীর বক্তব্য লাভলির পিতৃ পরিচয়ে গন্ডগোল আসলে তার দুটো বাবা।  একজন জৈবিক, একজন তাকে দত্তক নেন। কিন্তু ইমতিয়াজ আখতার সেই দাবী খারিজ করে বলেছেন, ‘‘নির্বাচনী হলফনামায় তার ধর্ম তিনি মুসলিম ঘোষণা করেন।মুসলিম ধর্মে দত্তক নেওয়া বা কারো দত্তক হওয়া যায় না’’।
জানা যাচ্ছে, প্রথম মামলা যখন হয় তখন জাস্টিস অমৃত সিনহার এজলাস দু’পক্ষের কথা শুনতে চায়। অভিযোগ, সেই সময় বিডিওকে জানানো সত্বেও তিনি কিছু করেননি প্রথমে। তারপরে রিট পিটিশন ফাইল করার পরে তিনি অ্যাকশন নেন। কারণ তাকে, এসডিওকে এবং ডিএমকে একটা পক্ষ করা হয় মামলায়।  তারপরে শম্পা সরকারে এজলাসে গড়ায় মমলা। তিনি এসডিওকে তদন্তের নির্দেশ দেন ৬ মাসের মধ্যে। কয়েকদিন আগে এসডিও একটি অর্ডার পাশ করে বলেন যে লাভলির ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করা হচ্ছে। 
রেহানার আইনজীবী ইমতিয়াজ আখতার জানিয়েছেন যে এর পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে তারা আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় আইনের নানা ধারায় লাভলির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবেন পুলিশের কাছে কারণ এত কিছু সত্বেও তিনি পঞ্চায়েতের পদ ছাড়ছেন না।

Comments :0

Login to leave a comment