জয়ন্ত সাহা
দিন গোনা শুরু হয়ে গিয়েছে। একমাসও বাকি নেই উৎসবের। তবুও বোনাস নিয়ে মালিক ও বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়নের বৈঠকেও বোনাস নিয়ে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হল না! ফের বোনাস বৈঠক হবে আগামী ১৮, ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর।
মঙ্গলবারেও চা বাগান শ্রমিক ও মালিকদের সাড়ে ৬ ঘন্টা দ্বিপাক্ষিক বৈঠক নিষ্ফলা হল। চা বাগান মালিকরা কিছুতেই ১০ শতাংশ হারের বেশি বোনাস দিতে রাজি হয় নি।
উল্লেখ্য আদিবাসী চা শ্রমিকদের করম পুজোর আগে চা বাগানের বোনাস চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে আগষ্ট মাসের শেষ সপ্তাহে অনলাইনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হলেও বোনাসের বিষয় নিয়ে মালিকদের অনড় মনোভাবের কারণে বৈঠক ভেস্তে যায়। ওই বৈঠকেই ঠিক হয়েছিল ৯ - ১০ তারিখ বেঙ্গল চেম্বার্সে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে। সেই মত সোমাবার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হলেও সেই বৈঠক নিস্ফলা থেকে যায়। মালিক পক্ষ ও বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা সোমবার আশা প্রকাশ করেছিলেন বোনাস মিমাংসা তৃতীয় বৈঠকেই হয়ে যাবে।
মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শুরু হয়। বিকেল সাড়ে ৫ টায় বৈঠক থেকে বেরিয়ে সিআইটিইউ নিয়ন্ত্রিত শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা বিকাশ মোহালি সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের ইউনিয়ন সহ বিভিন্নি ইউনিয়ন প্রথম বৈঠক থেকেই মালিক পক্ষের কাছে দাবি রেখেছিল গত বছর বাগানের শ্রমিকেরা সাড়ে ১৯ শতাংশ বোনাস পেয়েছিল। এবারে ২০ শতাংশ বোনাস দিতে হবে। কিন্তু মালিক পক্ষ তৃতীয় দিনের বৈঠকে ১০ শতাংশেরর বেশি বোনাস দিতে রাজি হয় নি। ডুয়ার্স ও তরাইয়ের ১৭৫ টি বাগানের স্থায়ী শ্রমিকদের বোনাস নিয়ে আলোচনা চলছিল।
বিকাশ মোহালি বলেন, সাড়ে ১৯ শতাংশ বোনাস কি করে মালিকরা ১০ শতাংশে নামিয়ে নিতে চাইছে সেটাই বোধগম্য হচ্ছে না। মঙ্গলবারের বৈঠক শেষে ফের ১৮, ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের দিন ধার্য হয়েছে। এদিন বোনাস মীমাংসা হয়ে গেলে আদিবাসীরা তাদের করম উৎসবের আগে খুশিতে উৎসবে অংশ গ্রহণ করতে পারতো। আজকের বোনাস বৈঠক নিষ্ফলা হবার ফলে আদিবাসী শ্রমিকদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হল।
সিআইটিইউ নিয়ন্ত্রিত শ্রমিক ইউনিয়নের আরেক নেতা বিদ্যুৎ গুন বলেন, মালিকরা তাদের আয় কমেছে দাবি করে সাড়ে ১৯ শতাংশ বোনাস কে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে চাইছে। এটা একেবারেই অবাস্তব। বোনাস নির্দ্ধারিত হয় বিগত আর্থিক বছরের নিরিখে। গত আর্থিক বছরে চা বাগান গুলিতে মালিকেরা যথেষ্ট মুনাফা পেয়েছে। তবে কেন শ্রমিকেরা গতবারের তুলনায় কম বোনাস পাবে। চা শিল্পকে বাঁচাতে শ্রমিকদের স্বার্থ মালিকদের দেখতেই হবে। আমরা সহ বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়ন আন্তরিক ভাবেই চা শিল্পে মালিক ও শ্রমিকের সম্পর্ক আন্তরিক থাকুক। আমরা আগামী বোনাস বৈঠকে চাইবো মালিক পক্ষ শ্রমিক ইউনিয়ন গুলির দাবি মেনে নেবে।
Comments :0