YECHURY EXTENDED MEET

লড়াই দেশকে রক্ষার, বাংলাকে রক্ষারও: ইয়েচুরি

রাজ্য

ছবি সংগ্রহ থেকে।

দেশের বিপ্লবী আন্দোলনের অগ্রবর্তী ঘাঁটি বাংলা। কমিউনিস্ট আন্দোলনের মেরুদণ্ড। দেশরক্ষার লড়াইয়ে বাংলাকে সোজা দাঁড়িয়ে লড়াই করতে হবে। এই মর্মে আহ্বান জানিয়ে সিপিআই(এম) রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশনের উদ্বোধন করলেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। 

শুক্রবার হাওড়ার সিপিআই(এম) জেলা দপ্তর অনিল বিশ্বাস ভবনে শুরু হয়েছে তিনদিনের এই অধিবেশন। গোড়াতে রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম জানিয়ে দেন দেশকে রক্ষা করা এবং বাংলাকে রক্ষা করার লক্ষ্যেই লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করবে সিপিআই(এম)। তার মতো করে সংগঠনকে সাজিয়ে নেওয়ার জন্য বর্ধিত অধিবেশন।

ইয়েচুরি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে বামপন্থীদের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা দেখা গিয়েছে। মানুষের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে পার্টির। জনতাকে আরও বেশি মাত্রায় লড়াইয়ের ময়দানে শামিল করা এখন আমাদের দায়িত্ব।’’  

ইয়েচুরি দুই শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, ‘‘বাংলায় গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ হচ্ছে। একের পর এক দুর্নীতি ফাঁস হচ্ছে। মানুষের ক্ষোভ তীব্র। সেই ক্ষোভকে সংগ্রামের ময়দানে সংহত করতে হবে। আরেকদিকে দেশের ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক এবং গণরাজের চরিত্রকে খতম করতে নেমেছে বিজেপি-আরএসএস। দেশকে ফ্যাসিবাদী ধাঁচের হিন্দুরাষ্ট্রে পরিণত করার দিকে নিয়ে যাচ্ছে মোদী সরকার। দেশকে বাঁচাতে হলে বিজেপি’কে সরকার থেকে দূরে রাখতে হবে। সেই লড়াইও চালাতে হবে বাংলায়।’’

বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’ গড়ার প্রশ্নে সিপিআই(এম) দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা করেন ইয়েচুরি। তিনি বলেন, ‘‘এই প্রশ্ন উঠেছে যে তৃণমূল যেখানে রয়েছে আমরা সেখানে কেন। আমরা জানি তৃণমূল অতীতে কেবল বিজেপি’র সঙ্গী ছিল তা নয়, ভবিষ্যতেও হতে পারে। সংসদে বারবার দেখা গিয়েছে তৃণমূলের সাংসদরা মুখে বিজেপি বিরোধী বক্তৃতা করলেও ভোটাভুটির সময় গরহাজির থাকেন।’’

ইয়েচুরি স্পষ্ট বলেন, ‘‘তৃণমূল কোনওভাবেই বিজেপি’র বিকল্প নয়, হতেও পারবে না। জনতাকে সে কথাও আমাদেরই বলতে হবে। আমরা জানি এ লড়াইয়ে সকলে পুরো রাস্তা যাবে না, এমনকি মাঝপথে বিশ্বাসঘাতকতাও করতে পারে। তবু বিজেপি’কে রাষ্ট্র এবং সরকার থেকে দূরে রাখতে সামান্য সহায়তার সম্ভাবনা থাকলেও তাকে অগ্রাহ্য করাও যাবে না।’’ 

ইয়েচুরি জীবনমানে গুরুতর অবনমনের উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘‘কর্পোরেট-হিন্দুত্ব শাসনে গড়ে প্রতিটি জিনিসের দাম দশ বছরে অন্তত ৩০ শতাংশ বেড়েছে। কোনও কোনও জিনিসের দাম ১০০ শতাংশ বা তার বেশি বেড়েছে। যুব অংশে বেকারির হার বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ভারতে। ৪০ শতাংশ স্নাতক কর্মহীন। বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ১২৫ দেশের ১১১-তে। সব সমীক্ষা অস্বীকার করছে মোদী সরকার। 

সেলিম বলেন, ‘‘পার্টি রাজ্য সম্মেলনের পর দেড় বছরে কাজের পর্যালোচনা হবে। লক্ষ্য হবে নতুন মানুষকে বামপন্থী আন্দোলনে শামিল করা। নতুন বিষয়কে আত্মস্থ করা। নতুন উপাদান সন্নিবিষ্ট করার চেষ্টা জারি রয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে সব শক্তিকে নিয়ে লড়াইয়ে শামিল করার চেষ্টা জারি রাখবে সিপিআই(এম)।’’    

Comments :0

Login to leave a comment