Kota Student Death

ওটিটির ‘কোটা ফ্যাক্টরি’, এক বাস্তবিক বিষণ্ণ নগরী

জাতীয়

রাজস্থানের কোটায় ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট (NEET) এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া ১৬ বছর বয়সী এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। রাজস্থানের প্রতিযোগিতামূলক কোচিং হাব কোটায় এই বছর মাত্র আট মাসে এই নিয়ে ২৫ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে মারা গেছে। রাঁচির বাসিন্দা, ছাত্রীটি বর্তমানে কোটা শহরের ব্লেজ হোস্টেলে থাকত। মেয়েটি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। জয়েন্ট এন্ট্রান্স এক্সাম (JEE) এবং ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি-কাম-এন্ট্রান্স টেস্ট (NEET) এর মতো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় পাশ করার  আশায় বছরে প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী কোটায় ভিড় করে। এই বছর, কর্তৃপক্ষ জেলায় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার চাপের কারণে ২৫ জন শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার খবর দিয়েছে, যা এখনও পর্যন্ত কোটার ইতিহাসে এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যা।

সম্প্রতি কোটার এই কোচিং ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম এবং ভয়ংকর প্রতিযোগিতা এবং মানসিক বিপর্যয় ইত্যাদি বিষয়ের আধারে তৈরি হয়েছে একটি জনপ্রিয় ওয়েবসিরিজ ‘কোটা ফ্যাক্টরি’। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্সে সিরিজটি দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে। সিরিজের নির্মাতারাও কোটার বাস্তব পরিস্থিতি ফুটিয়ে তুলেছেন কি ভয়াবহ প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে অভিভাবকরা লক্ষ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে হলেও তাদের সন্তানদের পাঠিয়ে দেন এই ‘নাৎসি কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প’এ, ইঞ্জিনিয়ার বা ডাক্তার হবার আকাঙ্খায়। অন্যদিকে অভিভাবকদের বাসনা চরিতার্থ করতে সন্তানকে মুখোমুখি হতে হয় প্রবল মানসিক চাপের। চাপ না নিতে পেরে অনেক কুঁড়িই আকালে ঝড়ে পরার পথ বেছে নেয়। কোচিং ইনস্টিটিউট থেকে সন্তানের মানসিক অবস্থা সম্পর্কে ‘ফিডব্যাক’ দিলেও এমনকি, অভিভাবকদের সরাসরি নস্যাৎ করে দেন- ‘‘পিছু হটা যাবে না... যেভাবেই হোক ইঞ্জিনিয়ার বা ডাক্তার হতে হবে’’।  

রাজস্থান পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ১৫, ২০১৯ সালে ১৮, ২০১৮ সালে ২০, ২০১৭ সালে ৭, ২০১৬ সালে ১৭ এবং ২০১৫ সালে ১৮ জন। কোটাতে ২০২০ এবং ২০২১ সালে কোচিং ইনস্টিটিউটের কোনও ছাত্রের আত্মহত্যার খবর পাওয়া যায়নি কারণ কোভিডের কারণে পঠানপাঠন বন্ধ ছিল। কোটায় আত্মহত্যার ঘটনার প্রতিক্রিয়ায়, জেলা প্রশাসন আগে একটি আদেশ জারি করেছিল যে সমস্ত হোস্টেলে স্প্রিং-লোডেড ফ্যান লাগানো এবং অতিথিদের থাকার ব্যবস্থা করা বাধ্যতামূলক। কোটা জেলা কালেক্টর ওম প্রকাশ বুঙ্কার দ্বারা জারি করা এই আদেশের উদ্দেশ্য ছিল "এই বাসস্থানগুলিতে পাঠরত এবং বসবাসরত শিক্ষার্থীদের মানসিক সাহায্য এবং নিরাপত্তা প্রদান করা এবং কোচিং শিক্ষার্থীদের ক্রমবর্ধমান আত্মহত্যার প্রবণতা প্রতিরোধ করা।"

ইতিমধ্যে, রাজস্থান হাইকোর্ট রাজ্যের কোচিং ইনস্টিটিউটে বিশেষ করে কোটায় ছাত্রদের আত্মহত্যা রোধে সুপারিশ চেয়েছে। আদালত শিশুদের মনস্তাত্ত্বিক কাউন্সেলিংয়ে ফোকাস করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে এবং রাজস্থান কোচিং ইনস্টিটিউট (নিয়ন্ত্রণ) বিল ২০২৩ প্রবর্তনের কথা বিবেচনা করছে যা বিশেষভাবে কোচিং ইনস্টিটিউটগুলির জন্য তৈরি করা হয়েছে।

Comments :0

Login to leave a comment